নিজস্ব প্রতিবেদক,সিটিজেন নিউজ: নাগরিকদের ছোটবড় নানা সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে নতুন উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন(ডিএসসিসি)। এ উদ্দেশে ‘কমিউনিটি অ্যাম্বাসাডর’ নামে একটি সেবার আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে সংস্থাটি।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন এই কার্যক্রম সফল করতে প্রতিটি ওয়ার্ডকে চারটি ইউনিটে ভাগ করা হয়েছে। প্রতি ইউনিটে ৭ জন স্বেচ্ছাসেবী কাজ করবেন। রোস্টার অনুযায়ী স্বেচ্ছাসেবীরা তাদের আওতাধীন এলাকার রাস্তা, ড্রেন, সড়ক বাতিসহ অন্যান্য সেবা কার্যক্রম ঘুরে দেখবেন। আর সে অনুযায়ী একটা রিপোর্ট, পরামর্শ ও অভিযোগ তুলে ধরবেন গ্রুপে। এই গ্রুপ পরিচালনা করার জন্য সংস্থাটির ৫টি অঞ্চলের প্রধানরা সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করবেন। যে বিষয়ে অভিযোগ আসবে সেগুলো সেই অঞ্চলের সংশ্লিষ্ট প্রত্যেক বিভাগে চলে যাবে। আর স্বেচ্ছাসেবীদের অভিযোগ, পরামর্শ ও রিপোর্ট পাওয়ার পর সমস্যাগুলোর দ্রুত সমাধান দেয়া হবে সংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে। যদি সমাধান দিতে দেরি হয়, তাহলে সিটি কর্পোরেশনের নির্দিষ্ট বিভাগকে শাস্তির আওতায় আনা হবে।
ঘুরে ঘুরে এসব সমস্যার কথা তুলে ধরতে কাজ করবেন সংস্থাটির আওতাধীন এলাকার ১ হাজার ৫৯৬ জন স্বেচ্ছাসেবী। এ কাজটি ডিএসসিসির ৫৭টি ওয়ার্ডে এক যোগে শুরু হবে। নগরবাসী সমস্যা সমাধানে অভিযোগ ও পরামর্শ যেন দিতে পারে সে জন্য একটি ক্লোজ গ্রুপ খোলা হচ্ছে। গ্রুপটির নাম দেয়া হচ্ছে কমিউনিটি অ্যাম্বাসাডর।
জানা গেছে, সম্প্রতি স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে মেয়রসহ সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তারা বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করেছেন। ওই বৈঠকে এ উদ্যোগে স্বেচ্ছাসেবীরা ব্যাপক আগ্রহ দেখিয়েছেন এবং প্রশংসা করেছেন।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে এসব টিমে থাকবে ওয়ার্ডের দায়িত্বশীল নেতাকর্মী, অবসরপ্রাপ্ত চাকরিজীবি, মসজিদের ইমাম, মন্দিরের পুরোহিত ছাড়াও সরকারি বেসরকারি-চাকরিজীবীরা।
অভিযোগ, পরামর্শ ও রিপোর্ট পাঠানোর জন্য স্বেচ্ছাসেবীদের পরিচয়পত্র এবং লক বুক দেয়া হবে, পাশাপাশি যোগাযোগের স্বার্থে তাদের সবাইকে ক্লোজ গ্রুপে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশ ও সভার নোটিশে বলা হয়, এ বিষয়ে একটি জরুরি সভা রোববার (১৬ জুন) বিকেলে অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, এলাকার পরিচ্ছন্নতা, মশক নিধন, সড়ক বাতি, রাস্তা, ড্রেন নির্মাণ-মেরামত, জলাবদ্ধতা দূর করাসহ বিভিন্ন সেবা প্রদানে সহযোগিতার লক্ষ্যে ওয়ার্ডভিত্তিক কমিউনিটি অ্যাম্বাসাডর প্লেনারি সেশন অনুষ্ঠিত হবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জাপান, ভারতসহ অনেক উন্নত বা উন্নয়নশীল রাষ্ট্রেও এভাবে এলাকাবাসী বা নাগরিকদের সেবা দেয়া হয়। প্রতিটি এলাকায় যেসব সমস্যা আছে তা স্বেচ্ছাসেবীদের তথ্যানুযায়ী সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্ট শাখায় চলে আসবে। অভিযোগ অনুযায়ী সিটি কর্পোরেশন যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। যদি কোনো কারণে সমস্যার সমাধান না হয়, তাহলেও সেটা নোটিফিকেশন অনুয়াযী গ্রুপে দেখা যাবে। পৌর কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে যেসব নাগরিক সেবা দেয়া হয়, সেগুলো কতটা মানসম্মত, তা এতদিন জানার কোনো ব্যবস্থা ছিল না। নতুন এই পদক্ষেপের মাধ্যমে নগরবাসীকে ডিএসিসির কার্যক্রমে যুক্ত করে তাদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সমস্যা বা অভিযোগ জানা যাবে। এতে সেবার মান আরও উন্নত করা সম্ভব হবে। নাগরিকরা আরও সচেতন হবেন। পাশাপাশি সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জবাবদিহিতার আওতায় আসবেন।