ইনিংসের সপ্তম ওভারের শেষ বল, শেখ মেহেদি হাসানের বল বড় শট খেলতে গিয়ে ব্যর্থ কুশল মেন্ডিস। বল তার ব্যাটের কানায় লেগে জমা পড়ে উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসে। যখনই মেন্ডিসকে আউট করে উল্লাসে মাতে বাংলাদেশ, তখনই তাদের উল্লাস থামিয়ে দেন থার্ড আম্পায়ার। বলটি রিপ্লে দেখে জানা যায়, বলটি করার সময় পপিং ক্রিজের ভেতরে ছিল না মেহেদির পা। ফলে ‘নো বল’ সিগন্যাল দেন আম্পায়ার।
মাত্র ২৯ রানে জীবন পাওয়া মেন্ডিস পরে খেলেছেন ৬০ রানের ইনিংস। শুধু মেন্ডিসকে বাঁচিয়ে দেওয়াই নয়, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাঁচা-মরার লড়াইয়ে ওয়াইড ও নো বলের পসরা সাজিয়েই শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি হেরে গেছে বাংলাদেশ। পুরো ইনিংসে ১৯.২ ওভার বৈধ ডেলিভারির সঙ্গে ১০টি বোনাস ডেলিভারিও করেছে বাংলাদেশের বোলাররা, যা প্রায় দুই ওভারের সমান।
২০ ওভারের খেলায় ২২ ওভার করতে হয়েছে টাইগারদের। এর পেছনে পুরো দায় অভিষিক্ত পেসার এবাদত হোসেন চৌধুরী ও মেহেদি হাসানের। প্রথমে নো বল করে মেন্ডিসকে জীবন দিয়েছেন মেহেদি। পরে ইনিংসের শেষ ওভারের তৃতীয় বলটি আবারও নো করে ম্যাচই শেষ করে দেন এ ডানহাতি অফস্পিনার।
নিজের অভিষেক টি-টোয়েন্টি খেলতে নেমে প্রথম দুই ওভারে মাত্র ১৩ রান খরচায় তিন উইকেট নিয়ে নিজের অভিষেকটা স্মরণীয় করে রাখতে চেয়েছিলেন ডানহাতি এই পেসার। তবে শেষ পর্যন্ত আর হয়নি। প্রথম দুই ওভারে মাত্র ১৩ রান দিলেও শেষের দুই ওভারে এবাদত গুনেছেন ৩৮ রান, যা আরেকটি ম্যাচ হারের কারণ।
এদিকে নিজের চার ওভারে ৫১ রানের পাশাপাশি তার বল করতে হয়েছে ৩২টি। অর্থাৎ ওভারপ্রতি ছয় বলের বদলে করেছেন ৮টি করে বল। এবাদতের শেষ দুই ওভারেই মূলত ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় বাংলাদেশ।
এদিকে যেখানে বাংলাদেশ ২০ ওভারের ম্যাচে করেছে ২২ ওভার, সেখানে লঙ্কান বোলাররা একটিও অতিরিক্ত বল করেনি। শ্রীলঙ্কার বোলাররা অতিরিক্ত দিয়েছে ১০ রান, তবে তা নো অথবা ওয়াইড নয় তা এসেছে লেগ বাই ও বাই থেকে। তাই ১৮৩ রান করেও এমন হারের পর সমর্থকদের জন্য যে সাকিবের খারাপ লাগছে, তা লাগারই কথা। ম্যাচ শেষ সাকিব বলেছেন, ‘সবশেষ ৬ মাস ধরে আমরা ভালো ক্রিকেট খেলছি না। কিন্তু শেষ দুই ম্যাচে প্রতিযোগিতাটা করতে পেরেছি। এখন আমাদের জন্য বিশ্বকাপ অন্য রকম এক চ্যালেঞ্জ হবে। আমাদের উন্নতি করতে হবে। সমর্থকদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করছি। যেখানেই আমরা যাই, তাদের কাছ থেকে অকুণ্ঠ সমর্থন পেয়ে থাকি।’
এদিকে অনেকেই বলছে, শেষ ওভারে একজন পেসারকে দিলে হয়তো রেজাল্টটা ভিন্ন হতে পারত। তবে শেষ ওভারে মেহেদিকে বোলিং করানোর ব্যাখ্যাও দিয়েছেন তিনি। সাকিব বলেছেন, দ্রুত উইকেট নিতেই শেষ ওভারে মেহেদিকে বল করিয়েছিলেন সাকিব, আর যেহেতু মুস্তাফিজ গত কয়েক মাস ধরে ডেথ ওভারে ভালো করতে পারছেন না, তাই আগেই তার ৪ ওভারের কোটা পূরণ করিয়েছিলেন তিনি।