অলিম্পিক লিঁওর বিপক্ষে লিওনেল মেসির একমাত্র গোলে জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে পিএসজি। আর্জেন্টাইন তারকার গোলে মার্শেইকে পেছনে ফেলে লিগ টেবিলে ফের শীর্ষে ফিরেছে প্যারিসিয়ানরা।
পার্ক অলিম্পিক লিঁওতে রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাতের ম্যাচে লিঁওকে ১-০ গোলের ব্যবধানে হারিয়েছে পিএসজি। এ নিয়ে লিগে টানা পাঁচ ম্যাচে জয় পেল ক্রিস্তোফ গালতিয়েরের শিষ্যরা। আর সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে তাদের জয় সাত ম্যাচে। অপরাজিত টানা ১৭ ম্যাচে।
লিঁওর মাঠে শুরু থেকেই আধিপত্য দেখায় মেসি-নেইমাররা। ম্যাচ শুরুর পঞ্চম মিনিটেই দলকে লিড এনে দেন মেসি। বল পায়ে লিঁওর ডিফেন্ডারদের পাশ কাটিয়ে নেইমারকে পাস দিয়ে ঢুকে পড়েন প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগে। নেইমারের ফিরতি পাস নিজের দখলে নিয়ে লিঁওর গোলরক্ষক লোপেসকে পরাস্ত করে বল জড়ান জালে। বাম দিকে ঝাঁপিয়ে পড়েও বল নাগালে পাননি লোপেস। এই একটা শট ঠেকাতে ব্যর্থ হলেও, পরবর্তীতে তিনি হয়ে ওঠেন চীনের মহাপ্রাচীর। পিএসজির গোল অভিমুখে থাকা ৮টি শট ফিরিয়ে দেন তিনি। অবশ্য ডিফেন্ডার থিয়াগো মেন্দেসও মেসিদের হতাশ করেছেন বেশ কয়েকবার।
১৪ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করতে পারতেন মেসি। কিন্তু লোপেস আর্জেন্টাইন তারকাকে হতাশ করে বল ফিরিয়ে দেন কর্নারের বিনিময়ে। ২১ মিনিটে সমতা ফেরানোর সুযোগ হাতছাড়া করেন আলেকসঁদ লাকাজেত। কোরোঁতাঁ তোলিসোর অসাধারণ ক্রস থেকে নেয়া তার হেড থাকেনি লক্ষ্যে। পরের মিনিটে কার্ল তোকো একাম্বির শট ঠেকিয়ে দেন পিএসজি গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি দোন্নারুম্মা।
৪০ মিনিটে প্রতি আক্রমণে নিজেদের অর্ধ থেকে এমবাপ্পেকে বল বাড়ান মেসি। সেখান থেকে ফরাসি ফরোয়ার্ড বল পাস দেন নুনো মেন্দেসকে। তিনি শট নিতে পারেননি, প্রতিপক্ষের বাধায় পেয়ে যান মেসি। কিন্তু তার শট ব্লক করে ব্যবধান বাড়তে দেননি লিওঁর রক্ষণভাগের ফুটবলাররা। তিন মিনিট পর ডি-বক্সের মাথা থেকে নেইমারের শট দারুণ দক্ষতায় ব্যর্থ করে দেন লোপেস।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই নিজের দ্বিতীয় গোলের দেখা পেতে পারতেন মেসি। গোললাইন ছেড়ে লোপেস বেরিয়ে আসলেও অরক্ষিত বারে রক্ষাকবচ হয়ে দাঁড়ান লুকেবা। মেন্দেসের ক্রসে নেয়া মেসির শট হেডের সাহায্যে ফিরিয়ে দেন তিনি। ৭২ মিনিটে দারুণ এক সুযোগ হাতছাড়া করেন নেইমার। ডি বক্সের ভিতরে নুনো মেন্দেসের পাস তিনি পেয়ে যান ঠিক গোলবারের সামনেই। কিন্তু তার দুর্বল শট পরাস্ত করতে পারেনি লিঁওর গোলরক্ষক লোপেসকে।
৭৬ মিনিটে কিলিয়ান এমবাপ্পে একক নৈপুণ্যে ঢুকে পড়েন প্রতিপক্ষের ডি বক্সে। কিন্তু লিঁওর ডিফেন্ডার থিয়াগো মেন্দেসের বাধায় গোলের জন্য শট নিতে পারেননি তিনি। পরের মিনিটেই প্রায় গোল হজম করে বসেছিল পিএসজি। কিন্তু লিঁওর ফরোয়ার্ডদের নেয়া শট প্রথম প্রচেষ্টায় ফিরিয়ে দেন নুনো মেন্দেস। কিন্তু তিনি পুরোপুরি ক্লিয়ার করতে পারেননি, পরক্ষণে ফিরতি শট ক্লিয়ার করেন মারকুইনস।
৭৮ মিনিটে মেসির নেয়া শট কর্নারের বিনিময়ে ঠেকিয়ে দেন লোপেস। ৭৯ মিনিটে নেইমারের নেয়া শট গোলরক্ষকের কাছে পৌঁছানোর আগেই ক্লিয়ার করেন থিয়াগো মেন্দেস। অতিরিক্ত মিনিটে মেসির ফ্রি কিক ফিরিয়ে দেন লোপেস। গোল বারের কাছে দাঁড়িয়ে থাকা নুনো মেন্দেসের হেড অরক্ষিত থাকা জালে পাঠান রামোস। কিন্তু তিনি উদযাপনের মাতার আগেই রেফারি অফসাইডের বাঁশি বাজান। শেষ পর্যন্ত মেসির করা একমাত্র গোলেই জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে পিএসজিকে। আসরে ৮ ম্যাচে আর্জেন্টাইন তারকা করেছেন মোট ৪ গোল। মৌসুমে তার অ্যাসিস্টের সংখ্যা অবশ্য ৭টি।
৮ ম্যাচে সাত জয় ও এক ড্রয়ে ২২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে ফিরল পিএসজি। সমান ম্যাচে ২০ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে মার্শেই।