থাইল্যান্ডে ভয়াবহ বন্দুক ও ছুরি হামলায় শিশুসহ হতাহতের ঘটনায় হামলাকারীর বিষয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন ডে কেয়ার সেন্টারের প্রধান শিক্ষক। হামলাকারী সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা তার ছেলেকে ওই ডে কেয়ার সেন্টারে ভর্তি করেছিলেন। ৯০ জনের বেশি শিশু প্রতিদিন উপস্থিত থাকলেও ওই দিন খারাপ আবহাওয়ায় অধিকাংশই অনুপস্থিত ছিল। হামলাকারীকে সম্প্রতি পুলিশের চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হলেও হামলার উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে কিছু জানা যায়নি। খবর বিবিসির।
থাইল্যান্ডের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় নং বুয়া লামফু প্রদেশের উত্থাই সাওয়ান শহরের ডে কেয়ার সেন্টারটিতে বৃহস্পতিবারের (৬ অক্টোবর) ভয়াবহ ওই হামলার টার্গেট ছিল মূলত শিশুরাই। প্রত্যক্ষদর্শী এক শিক্ষক জানান, কাছে পিস্তল ও বন্দুক থাকলেও ছুরি দিয়েই শিশুদের ওপর নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালান হামলাকারী।
তিনি জানান, ‘আমরা তিন শিক্ষক একটি কক্ষে আশ্রয় নিয়েছিলাম। আমি পালাতে সক্ষম হলেও বাকি দুজনকে হত্যা করা হয়। একপর্যায়ে হামলাকারী ভেতরে প্রবেশ করে একের পর এক শিশুকে ছুরি দিয়ে জখম করতে থাকেন। তার কাছে বন্দুক থাকলেও মূলত ছুরি দিয়েই তিনি এই হত্যাযজ্ঞ চালান।’
তবে শিশুদের ওপর কেন এমন নৃশংস ও অমানবিক হত্যাকাণ্ড চালানো হলো, সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত হয়ে কিছু জানা যায়নি। ঘটনার পরপর ঘাতককে ধরতে বিশেষ অভিযান শুরু হলেও পুলিশ জানায়, ডে কেয়ার সেন্টারে হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে বাসায় ফিরে নিজের স্ত্রী ও সন্তানকে হত্যা করে পরে আত্মহত্যা করেন হামলাকারী ৩৪ বছর বয়সী সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা পান্য কামরাব। গেল জানুয়ারিতে ড্রাগ নেয়ার অপরাধে চাকরিচ্যুত হন তিনি।
ডে কেয়ার সেন্টারে নারকীয় এ হত্যাকাণ্ডকে দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা হিসেবে অভিহিত করেছেন থাইল্যান্ডের পুলিশ। একই সঙ্গে এ ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে এর পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার অঙ্গীকারও করেন তিনি।
চাইল্ড কেয়ার সেন্টারটির প্রধান শিক্ষক জানান, হামলাকারীর ছেলেও এখানে পড়ত, তবে সে বেশ কিছুদিন ধরেই অনুপস্থিত ছিল। খারাপ আবহাওয়ার কারণে এদিনে অধিকাংশই অনুপস্থিত থাকায় বহু শিশু প্রাণে বেঁচে গেছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে ভয়াবহ এ হামলার ঘটনাকে জঘন্য অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করে গভীর শোক জানিয়েছেন থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ চান ওচা। একই সঙ্গে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে হামলার উদ্দেশ্য ও কারণ বের করার আশ্বাসও দেন তিনি।