নাজুক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি উপেক্ষা করেই একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে উত্তর কোরিয়া। সম্প্রতি একসঙ্গে ২৬টি ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়ে আবারও আলোচনায় এসেছে প্রতিরক্ষা খাতে কিম জং উনের খরচের বিষয়টি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাম্প্রতিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষায় প্রায় সাড়ে ৭ কোটি মার্কিন ডলার ব্যয় হয়েছে দেশটির, যা ২০১৯ সালে উত্তর কোরিয়ার খাদ্য ঘাটতি মেটাতে চীন থেকে শস্য আমদানি ব্যয়ের সমান। দক্ষিণ কোরিয়ার দাবি, স্বল্প খরচে অস্ত্র তৈরিতে পিয়ংইয়ংকে সহায়তা করছে চীন ও রাশিয়া।
উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ আর এর জবাবে প্রতিবেশী দেশ দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ মহড়ায় উত্তেজনা বেড়েছে অঞ্চলটিতে। গেল বুধবার (২ নভেম্বর) ও বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) একযোগে ২৬টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালায় পিয়ংইয়ং। যেগুলোর অধিকাংশই দক্ষিণ কোরিয়া এমনকি যুক্তরাষ্ট্রে আঘাত হানতে সক্ষম বলে দাবি করেছে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম।
একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার মাধ্যমে পশ্চিমা বিশ্ব কিংবা কোরীয় উপদ্বীপের অন্য দেশের প্রতি কিম জং উন কী বার্তা দিচ্ছেন, তা নিয়েও দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক নিরাপত্তা বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান র্যান্ড করপোরেশন বলছে, প্রতিটি ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণে উত্তর কোরিয়ার ব্যয় হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ লাখ মার্কিন ডলার। সেই হিসাবে সম্প্রতি পরীক্ষা চালানো ২৬টি ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণে দেশটির ব্যয় হয়েছে প্রায় সাড়ে ৭ কোটি মার্কিন ডলার। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, ২০১৯ সালে খাদ্য ঘাটতি মেটাতে চীন থেকে শস্য আমদানি করতেও প্রায় সমপরিমাণ অর্থ ব্যয় করেছিল উত্তর কোরিয়া।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ও করোনা মহামারির পর অর্থনৈতিক সংকটে পড়ে উত্তর কোরিয়া। তবে সবকিছু উপেক্ষা করে প্রতিরক্ষা খাতে বাজেটে বরাদ্দ বাড়ায় কিম জং উন প্রশাসন। তবে কীভাবে দেশটি ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি ও পরীক্ষার ব্যয়ভার বহন করছে, তা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা বিভাগের দাবি, চীন ও রাশিয়ার মদদে বিশ্বের অন্য দেশের চেয়ে অনেক কম খরচে ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করছে উত্তর কোরিয়া। এমনকি প্রতিরক্ষা খাতে পিয়ংইয়ং মস্কোর বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করছে বলেও দাবি সিউলের।
নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালানো হচ্ছে বলে শুরু থেকেই দাবি উত্তর কোরিয়ার। আর সম্প্রতি ওয়াশিংটন-সিউল যৌথ মহড়া চালানোয় ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা আরও বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পিয়ংইয়ং। যদিও বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০২৪ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সামনে রেখে যুক্তরাষ্ট্রকে ফেলতেই এমন কৌশল নিয়েছেন কিম জং উন।