একদিন আগেও ছিল কঠিন সব সমীকরণ। তবে দিনের শুরুতে দক্ষিণ আফ্রিকা হারায় সেমিফাইনালে যাওয়ার সুবর্ণ এক সুযোগ এসেছিল বাংলাদেশের সামনে। জিতলেই সেমি, এ অবস্থায় আশা দেখেছিলেন টাইগার ভক্তরা। তবে শেষ পর্যন্ত হার নিয়ে মাঠ ছেড়েছে বাংলাদেশ। তীরে এসে তরী ডোবায় একই সঙ্গে সাকিব-লিটনরা বিদায় নিয়েছেন বিশ্বকাপ থেকেও।
অ্যাডিলেড ওভালে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১২৭ রান সংগ্রহ করেছিল বাংলাদেশ। জবাবে মাত্র ৫ উইকেট হারিয়েই লক্ষ্যে পৌঁছায় পাকিস্তান। বাকি ছিল আরো ১১ বল।
পাকিস্তানের হয়ে রান তাড়া করতে নামেন বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ান। ইনিংসের তৃতীয় বলেই আনন্দে ভাসতে পারতো বাংলাদেশ। কিন্তু রিজওয়ানের দেওয়া সহজতম সুযোগটি তালুবন্দী করতে পারেননি উইকেটকিপার নুরুল হাসান সোহান।
এরপর পাওয়ার প্লে-র বাকি সময় দেখেশুনেই কাটিয়ে দেন বাবর ও রিজওয়ান। দশ ওভার শেষে পাকিস্তানের সংগ্রহ ছিল বিনা উইকেটে ৫৬ রান। একাদশতম ওভারে আক্রমণে এসে আঘাত হানেন নাসুম আহমেদ। তাকে সুইপ করতে গিয়ে মুস্তাফিজুর রহমানের তালুবন্দী হন ২৫ রান করা বাবর।
পরের ওভারেই ফেরেন বিপদজনক রিজওয়ান। এবাদত হোসেনের বলে নাজমুল হোসেন শান্তর তালুবন্দী হওয়ার আগে তিনি করেন ৩২ রান। ৪ রান করে মোহাম্মদ নাওয়াজ ফিরলে ম্যাচে ফেরার সুযোগ সৃষ্টি করে বাংলাদেশ।
তবে এরপর মোহাম্মদ হারিস ও শান মাসুদ মিলে দলকে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে যান। ১৮ বলে ৩১ রানের ক্যামিও খেলে হারসি যখন সাজঘরে ফেরেন, জয় থেকে মাত্র ৭ রান দূরে ছিল পাকিস্তান। ইফতিখার আহমেদ ফেরেন ১ রানে।
অন্যরা আসা যাওয়ার মাঝে থাকলেও দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন শান মাসুদ। তিনি অপরাজিত থাকেন ২৪ রানে। বাংলাদেশের হয়ে সাকিব, নাসুম, মুস্তাফিজ ও এবাদত প্রত্যেকেই একটি করে উইকেট শিকার করেন।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। একাদশে তিন পরিবর্তন নিয়ে নামে টাইগাররা। বাংলাদেশের হয়ে ইনিংস উদ্বোধনে নামেন লিটন দাস ও নাজমুল হোসেন শান্ত। প্রথম দুই ওভার দেখেশুনে কাটিয়ে দেন তারা।
তৃতীয় ওভারে শাহিন আফ্রিদিকে পুল করে ছক্কা হাঁকিয়ে ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন লিটন। তবে একই ওভারে আউট হন তিনি। আফ্রিদিকে পয়েন্ট অঞ্চল দিয়ে মারতে গিয়ে শান মাসুদের তালুবন্দী হন লিটন। এর আগে করেন ১০ রান।
এরপর ধীরেসুস্থে ইনিংস এগিয়ে নিতে থাকেন শান্ত ও সৌম্য সরকার। দুজনে মিলে গড়েন ৫২ রানের জুটি। একাদশতম ওভারে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে আউট হন ২০ রান করা সৌম্য। শাদাব খানের করা পরের বলেই লেগ বিফোরের শিকার হন সাকিব।
ইনিংসের সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা ঘটে এ সময়। সাকিব রিভিউ নিলে দেখা যায় বল তার ব্যাটে লেগেছিল। তবুও আম্পায়ার আউট দিলে হতবাক হয়ে যায় সবাই। দিনশেষে আম্পায়ারের এমন বাজে সিদ্ধান্ত মেনে নেয়া ছাড়া উপায় ছিল না।
এর কিছু পরই ফিফটির দেখা পেয়েছেন শান্ত। তবে অর্ধশতকের পরই আউট হয়ে যান তিনি। এর আগে খেলেন ৪৮ বলে ৫৪ রানের ইনিংস। এরপর আফিফ হোসেন ছাড়া আর কেউই দুই অংকের ঘরে পৌঁছাতে পারেননি।
শেষ পর্যন্ত ২০ বলে ২৪ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন আফিফ। পাকিস্তানের হয়ে শাহিন আফ্রিদি চারটি, শাদাব খান দুটি এবং হারিস রউফ ও ইফতিখার একটি করে উইকেট শিকার করেন।