প্রতি বছর প্রতি মাসের নির্দিষ্ট কিছু দিনে বিভিন্ন দেশে কিছু দিবস পালিত হয়। ঐ নির্দিষ্ট দিনে অতীতের কোনো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাকে স্মরণ করা বা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জনসচেতনতা তৈরি করতেই এই সব দিবস পালিত হয়। পালনীয় সেই সব দিবসগুলোর মধ্যে একটি হলো আজ আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল দিবস।
৭ ডিসেম্বর, আজ আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল দিবস। ১৯৯৬ সালের ৬ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে গৃহীত এক সিদ্ধান্তে প্রতি বছর ৭ ডিসেম্বরকে আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল দিবস পালনের জন্য সরকারসমূহ, জাতীয় আঞ্চলিক, আন্তর্জাতিক ও আন্তঃসরকারি সংস্থাসমূহকে আহ্বান জানানো হয়। জাতিসংঘ কর্তৃক গৃহীত হওয়ার পূর্বেই আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থা (আইকাও) বিশ্ববাসীর কাছে তাদের কার্যক্রম তুলে ধরা ও এর সুফল সবার কাছে পৌছে দেয়ার জন্য ৭ ডিসেম্বরকে আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল দিবস হিসেবে ঘোষণা দেয়। ১৯৯৪ সালে তারা প্রথম এ দিবসটি পালন করে।
১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দে শিকাগোয় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সম্মেলনে প্রণীত ‘আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল’ সংক্রান্ত দলিলে ২৬টি দেশ কর্তৃক অনুমোদনের মধ্য দিয়ে ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ৪ এপ্রিল ‘আইকাও’প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ১৯৯৪ সালে ছিল তাদের ৫০ বছর পূর্তি। বিশ্বব্যাপী বেসামরিক বিমান চলাচলকে সুবিন্যস্ত, সম্প্রসারণ ও নিরাপদ করাই হচ্ছে আইকাও এর মূল কাজ। এছাড়াও বেসামরিক বিমান চলাচলের জন্য সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি, বিমানের নক্সা অনুমোদন, বিমানবন্দর ও বিমান চলাচলের বিকাশ ঘটাতে উৎসাহ প্রদান, নিরাপদ, নিয়মিত, দক্ষ এবং স্বল্প ব্যয়সম্পন্ন করার মধ্য দিয়ে বিশ্বের মানুষের প্রয়োজনীয়তা মেটানো এইসব নিয়ে কাজ করে আইকাও।
বিমান পরিবহন সুবিধাদি, নিরাপত্তা, নিয়মিতকরণ ও দক্ষতার জন্য আন্তর্জাতিক মান ও অনুমোদিত নীতিমালার বিষয়টি শিকাগো কনভেনশনের সঙ্গে পরে একীভূত হয়। এই নিয়ে অন্তর্ভুক্ত আছে বেসামরিক বিমানের চালক, ক্রু, ট্রাফিক কন্ট্রোলারস, গ্রাউন্ড ম্যানেজমেন্ট, বিমানের যন্ত্রপাতি ও নক্সা। শিকাগো কনভেনশনের লক্ষ্য অর্জনই আইকাও এর প্রতিশ্রুতি। আর দেশে দেশে বেসামরিক বিমান চলাচলের মাধ্যমে বন্ধুত্ব ও সমঝোতা সৃষ্টিই আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল দিবসের উপলব্ধি।
বিশ্ববাসী আগের তুলনায় পরস্পরকে আরো বেশি চিনতে পারছে, বুঝতে পারছে এবং হচ্ছে ভাবের আদান প্রদান- এমনটিই আইকাও এর পর্যবেক্ষণ। আন্তর্জাতিক বিধি বিধান ও চুক্তির মাধ্যমে, নিরাপদ ও দক্ষ বিমান চলাচলের ভিত্তিতে নীরবে সহযোগিতা করে যাচ্ছে আইকাও। দেশে দেশে তৈরি হচ্ছে মৈত্রী আর বন্ধুত্ব। ১৮৫টি সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার মধ্য দিয়ে ‘আইকাও’ সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে সুরক্ষা ও নিরাপত্তাকে। নতুন বিশ্বায়নে মর্যাদাপূর্ণ বেসামরিক বিমান চলাচল অব্যাহত রাখার জন্য প্রধান দাবি মূলত এটিই।