নতুন একটি ফসলের জাত উদ্ভাবন করেছে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) গবেষকদল। নতুন উদ্ভাবিত সুপারফুড কিনোয়া-১ সম্ভাবনাময় অর্থকরী ফসল হবে বলে আশাবাদী এই গবেষকদল।
জানা যায়, যেসব খাবারগুলোতে স্বাস্থ্যকর এবং অতিমাত্রায় পুষ্টিকর উপাদান থাকে কিন্তু কেলরির মাত্রা অপেক্ষাকৃতভাবে কম হয় তাদের সুপারফুড বলে। শর্করা, প্রোটিন, ভিটামিন ও খনিজে ভরপুর সুপারফুড ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই উপকারী। কিনোয়া দানা পুষ্টি সমৃদ্ধতার কারণে ইতোমধ্যে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা স্বীকৃতি দিয়েছে।
কিনোয়া বৈজ্ঞানিক নাম Chenopodium quinoa ফসলটি Amaranthaceae পরিবারভুক্ত একটি দানাশস্য। এতে রয়েছে ১৪ থেকে ১৮ শতাংশ প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, আয়রন, জিংক, কপার, ফসফরাস, পটাশিয়াম এবং ম্যাভঙ্গানিজ। রয়েছে সব প্রকার প্রয়োজনীয় এমাইনো এসিড।
জাতীয় বীজ বোর্ড (এনএসবি) অনিয়ন্ত্রিত ফসলের জাত নিবন্ধনের আওতায় উদ্ভাবিত এ জাতটি নিবন্ধন দিয়েছে। সাউ কিনোয়া-১ নামে জাতটি নিবন্ধিত হয়।
সাউ কিনোয়া-১ ও ড. পরিমল কান্তি বিশ্বাস। ছবি: ডেইলি বাংলাদেশ
এ বিষয়ে ড. পরিমল কান্তি বিশ্বাস ডেইলি বাংলাদেশকে বলেন, বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদের দ্বারপ্রান্তে আমরা। রাজশাহী, মেহেরপুর, খুলনা, নীলফামারীসহ দেশের বেশকিছু জেলায় ফসলটি চাষ হচ্ছে এবং ভালো তথ্য পাচ্ছি। কিনোয়া প্রোসেসিং ও মার্কেটিং চ্যানেলটা গড়ে উঠলে আমরা আমাদের দেশের চাহিদা দেশের উৎপাদন এই পূর্ণ করতে পারব।
তিনি আরো জানান, সাউ কিনোয়া-১ খরা সহিষ্ণু এবং যেকোনো ফসল অপেক্ষা অধিকতর লবণাক্ত সহিষ্ণু। ধানসহ অন্যান্য ফসল যেখান ১০-১২ ডিএস/মি লবণাক্ত সহিষ্ণু হয়ে থাকে সেখানে ‘সাউ কিনোয়া-১’ ৪০ডিএস/মি এও আশানুরূপ ফলন দিয়েছে।
ফসলটির পুষ্টি সমৃদ্ধতার কারণে খ্রিষ্টপূর্ব ৫০০০ বছর আগ থেকেই ল্যাটিন আমেরিকাভুক্ত দেশে দানা, ফ্লেক্স, পাস্তা, রুটি, বিস্কুট, বেভারেজ হিসেবে কিনোয়া ব্যবহার করে আসছে। বর্তমানে উত্তর আমেরিকা, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ইতালি, সুইডেন, ডেনমার্ক, নেদারল্যান্ডস, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, চীন, থাইল্যান্ড, ভারতসহ ৯৫ টিরও অধিক দেশে কিনোয়া চাষাবাদ হচ্ছে।
উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ ও অস্ট্রেলিয়া অঞ্চলে কিনোয়ার ক্রমবর্ধমান ব্যবহার ও জপ্রিয়তার কারণে ২০০৬ সাল থেকে ২০১৩ সালের মধ্যবর্তী সময়ে এর দাম বেড়ে তিন গুণ হয়েছে।