নওগাঁ সদর উপজেলার হাঁপানিয়া ইউনিয়নের লখাইজানি, তারতা ও উল্লাসপুর গ্রামটি এখন নার্সারি গ্রাম নামে পরিচিত পেয়েছে। যেখানে প্রায় ৪০ বিঘা জমিতে গোলাপ ও গাঁদা ফুলের চাষ করা হয়েছে। সারাবছর এসব ফুল কমবেশি চাহিদা থাকলেও ফেব্রুয়ারি মাসের চাহিদা ব্যাপক বেড়ে যায়। এসব এলাকায় মেরিন্ডা, লিংকন, টাটা, ডিলাইট, তাজমহল, ইরানি ও থাই জাতের গোলাপ ও গাঁদা ফুলের চাষ করা হয়েছে। এতে লাভবান হচ্ছেন চাষিরা।
সবধরণের গোলাপ ফুল পাইকারিতে ৫ টাকা পিস হিসেবে বিক্রি হচ্ছে। আর গাঁদা বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস ৫০ পয়সা। তবে কয়েকদিনের মধ্যে গোলাপ ফুল প্রকারভেদে ১০-২০ টাকা পিস এবং গাঁদা দেড় টাকা থেকে ২ টাকা পিস হিসেবে বিক্রি হবে। ফুল বাগানে ও নার্সারিতে প্রায় ২০০ জন শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়েছে। এরমধ্যে অধিকাংশ নারী। সারাবছরই কাজ করে বাড়তি আয় করছেন তারা।
লখাইজানি গ্রামের ফুল চাষি স্বাধীন জানান, দেড় বিঘা জমিতে গোলাপ গাছ রয়েছে। সারাবছরই ফুল বিক্রি হয়ে থাকে। তবে ফেব্রুয়ারি মাসে চাহিদা বেশি থাকে এবং বিক্রিও ভালো হয়। সবধরণের গোলাপ ফুল পাইকারিতে ৫ টাকা পিস হিসেবে করা হচ্ছে। কয়েকদিন পর গোলাপ ফুল ১০-২০ টাকা পিস হিসেবে বিক্রি হবে। ফেব্রুয়ারিতে প্রায় দেড় লাখ টাকার ফুল বিক্রি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে পাশ্ববর্তী জয়পুরহাট, বগুড়া ও রাজশাহী জেলায় সরবরাহ করা হয়।
একই গ্রামের ফুল চাষি নাজিম উদ্দিন জানান, ১২ বিঘা জমিতে গাঁদা ও গোপাল ফুল চাষ করা হয়েছে। এ মাসে প্রায় ২ লাখ টাকার ফুল বিক্রির সম্ভবনা রয়েছে। বাগানে প্রায় শতাধিক শ্রমিক কাজ করছেন। যাদের অধিকাংশ নারী শ্রমিক। বাগানে কাজ করে বাড়তি আয় করছেন তারা। উপজেলায় প্রায় ৪০ বিঘা জমিতে ফুলের বাগান রয়েছে। যে কজন চাষি রয়েছেন সবাই মিলে এ মাসে প্রায় ৫০ লাখ টাকার ফুল বিক্রি করতে পারবেন। এছাড়া আরো দুইটি বাগানে প্রায় ১০ লাখ টাকার গোলাপ ফুলের কাটিং কলম বিক্রি হবে। সবমিলিয়ে প্রায় ৬০ লাখ টাকার ফুল বিক্রি হবে।
বগুড়া জেলার মহাস্থানগড় থেকে লখাইজানি গ্রামে গোলাপ ফুলের কাটিং কলম কিনতে আসছিলেন রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, গোপল ফুলের ডাল কিনতে আসছিলাম। প্রতিটি গোলাপের ডাল (কাটিং কলম) ৫ টাকা হিসেবে কিনেছি এক হাজার পিস।
ফুল বাগানের শ্রমিক আব্দুস সালাম জানান, প্রায় ৫ বছর থেকে নার্সারিতে বিভিন্ন কাজ করেন তিনি। শুরুতে মজুরি কম ছিল। বর্তমানে ৪০০ টাকা দিন মজুরি পান তিনি।
নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মো. আবু হোসেন বলেন, জেলায় প্রায় ৫ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন সময় মৌসুমি ফুলের চাষ হয়ে থাকে। জেলায় প্রতি বছরই ফুল চাষ বাড়ছে। বাড়ছে ফুলের চাহিদাও। লাভবানও হচ্ছেন চাষিরা।