শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ০৩:২০ পূর্বাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান
সংবাদ শিরোনাম ::
বিমান কখনোই সেফটি ও সিকিউরিটির সঙ্গে আপস করে না তুরাগে এসএম জাহাঙ্গীরের লিফলেট বিতরণ বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য সম্পর্কের সব গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়ে আলোচনা নির্বাচনে বিএনপির জয় নিশ্চিত জেনে কিছু দল পিআর পদ্ধতি চাইছে: আমিনুল হক ডিএনসিসির আইনবহির্ভূত হোল্ডিং ট্যাক্সের বিরুদ্ধে  সেক্টর বাসিরা  বিএনপির নির্যাতিত কর্মী  সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রোপাগান্ডার অভিযোগ  নির্বাচন পিছিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্রকারীদের বিচার হবে – আমিনুল হক প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ভুটানের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ ২ দিনের সফরে মালয়েশিয়া গেলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জাতিসংঘে বাংলাদেশের নেতৃত্বে জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত রেজ্যুলেশন গৃহীত

আন্তর্জাতিক বন দিবস আজ

  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ২১ মার্চ, ২০২৩
  • ১৪২ বার পঠিত

বন ও বনভূমির নিরাপত্তা রক্ষার্থে ২০১২ সালে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সভায় ২১ মার্চকে আন্তর্জাতিক বন দিবস ঘোষণা করা হয়। সেই থেকে সারা বিশ্বে ২১ মার্চ পালন করা হয় আন্তর্জাতিক বন দিবস।

জলবায়ু পরিবর্তনের অশনি বিপদ থেকে রক্ষা করতে বনের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। গাছ থাকলে নিরাপদ থাকবে পরিবেশ। অক্সিজেন বৃদ্ধির পাশাপাশি সবুজ বন পরিবেশের ভারসাম্যও বজায় রাখে। পৃথিবীতে প্রাণীর অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে তাই সব ধরনের বনের গুরুত্ব ও তা টিকিয়ে রাখতে সচেতনতা বৃদ্ধি করাই দিবসটির মূল লক্ষ্য।

দিবসটিতে সবাইকে বন এবং বৃক্ষ সম্পর্কিত কার্যক্রম সংগঠিত করার জন্য স্থানীয়, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কাজ করতে উৎসাহিত করা হয়। এই কর্মকাণ্ডের মধ্যে বৃক্ষরোপন অভিযানও অন্তর্ভুক্ত।

১৯৭১ সালে ইউরোপীয় কনফেডারেশন অব এগ্রিকালচারের ২৩তম সাধারণ পরিষদে বিশ্ব বনায়ন দিবস প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সেই চিন্তাধারাকে সামনে রেখে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা গাছের গুরুত্ব সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ২০১২ সালের ২৮ নভেম্বর আন্তর্জাতিক বন দিবস প্রথম পালিত হয়।

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ দুটি আন্তর্জাতিক স্মারক যেমন বিশ্ব বন দিবস এবং আন্তর্জাতিক বন দিবসকে একত্রিত করে প্রতি বছর ২১ মার্চ উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেয়। বিশ্বের প্রতিটি দেশে বন রক্ষায় সচেতনতা সৃষ্টির আহ্বান জানিয়ে আজ দিবসটি পালিত হচ্ছে। বাংলাদেশে দিবসটির বিভিন্ন কার্যক্রমের দায়িত্বে রয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়।

বাংলাদেশের বন বিভাগের ২০১৯ সালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বন আচ্ছাদিত এলাকার পরিমাণ মোট ভূমির ১২ দশমিক ৮ শতাংশ। এর আগে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) তথ্য অনুযায়ী যা ছিল ১০ দশমিক ৯ শতাংশ।

এই হিসাবে বনের বাইরের গাছ আমলে নেয়া হয়নি। কিন্তু বন বিভাগের নতুন সমীক্ষায় বলা হয়েছে, বনের বাইরে গাছের পরিমাণ মোট ভূমির ৯ দশমিক ৭ শতাংশ। এসব গাছের বেশির ভাগই বেড়ে উঠেছে মূলত সামাজিক বনায়নের মাধ্যমে। সেই হিসাবে বনের ভেতর ও বাইরে বৃক্ষ আচ্ছাদিত এলাকার পরিমাণ মোট ভূমির সাড়ে ২২ শতাংশ।

গ্লোবাল ফরেস্ট ওয়াচের মতে, পৃথিবীর প্রায় এক-তৃতীয়াংশ বনভূমি। একটি বনে প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ গাছ থাকে। একজন মানুষের শ্বাস নিতে বছরে ৭৪০ কেজি অক্সিজেন প্রয়োজন। আর গড়ে, একটি গাছ বছরে ১০০ কেজি পর্যন্ত অক্সিজেন দেয়। এ হিসেবে একজন মানুষের জন্য প্রয়োজন পড়ছে ৮টি গাছ।

২০১৫ সালে নেচার জার্নালের একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, মানুষের গাছ নিধনের কার্যক্রমে এখন পর্যন্ত ৪৬ শতাংশ গাছ কাটা হয়েছে। আর তাই গাছের পরিমাণ কমে বিশ্বে বর্তমানে গাছ রয়েছে ৩.০৪ লাখ কোটি।

ট্রপিক্যাল ফরেস্ট অ্যালায়েন্স ২০২০ অনুসারে, আমরা যদি কোনো পরিবর্তন না করি, তাহলে ২০৩০ সালের মধ্যে ১৭ লাখ বর্গ কিলোমিটারের মধ্যে বিস্তৃত গ্রীষ্মমন্ডলীয় বন শেষ হয়ে যাবে।

সেন্টার ফর গ্লোবাল ডেভেলপমেন্টের এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, যদি এই হারে গাছ-গাছালি মারা যেতে থাকে, তাহলে ২০৫০ সালের মধ্যে ভারতের আয়তনের সমান বনভূমি ধ্বংস হয়ে যাবে। অথচ ২০০০ এরও বেশি আদিবাসী সংস্কৃতিসহ প্রায় ১.৬ বিলিয়ন মানুষ তাদের জীবিকা, ওষুধ, জ্বালানী, খাদ্য এবং আশ্রয়ের জন্য বনের ওপর নির্ভর করে।

দক্ষিণ আমেরিকার আমাজন জঙ্গল পৃথিবীর বৃহত্তম বন। বিশ্বের ২০ শতাংশ অক্সিজেন উৎপন্ন হয় এ বন থেকে। তাই এ বনটিকে বলা হয় পৃথিবীর ফুসফুস। এ বনটির সাথে সীমানা জুরে আছে নয়টি দেশের। দেশগুলো হলো ব্রাজিল, বলিভিয়া, পেরু, ইকুয়েডর, কলম্বিয়া, ভেনিজুয়েলা, গায়ানা, সুরিনাম এবং ফ্রেঞ্চ গুয়ানা।

এই বনের ৬০ শতাংশই ব্রাজিলে অবস্থিত। বিশ্বের পরিবেশ গবেষকরা এ বনটি নিয়েও দুশচিন্তায় পড়েছেন। কারণ বিশ্বের জন্য আশীর্বাদ এই আমাজন বন প্রতি বছর আগুনের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে, কিছু দাবানল এতটাই মারাত্মক ছিল যে যা সবাইকে পরিবেশ নিয়ে ভাবিয়ে তুলেছে।

মানুষ এবং বিভিন্ন আদিবাসী সংস্কৃতি তাদের জীবিকা নির্বাহের জন্য বনের উপর নির্ভরশীল। শুধু মানুষের অস্ত্বিই নয়, প্রাণী এবং পোকামাকড়কে আশ্রয়স্থল , বাতাসে অক্সিজেন, কার্বন ডাই অক্সাইড এবং আর্দ্রতার ভারসাম্য বজায় রাখা, নদীতে মিষ্টি পানি সরবরাহকারী জলাশয়গুলো রক্ষাসহ পরিবেশের ভারসাম্য ঠিক রাখতে পৃথিবীতে বনের বিকল্প অসম্ভব। তাই প্রত্যেকেরই উচিত নিজ ও ভবিষ্যত প্রজন্মের স্বার্থে বেশি বেশি গাছ লাগানো।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com