সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠা শরীরর জন্য খুবই ভালে। ঘুম থেকে কাজে বেরনোর আগে নিজের জন্য মাত্র ৩০ মিনিট বের করুন। দ্রুত ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে পড়তে হবে সামনের খোলা মাঠের উদ্দেশে। সেখানে গিয়ে জুতা খুলে সবুজ ঘাসের ওপর খালি পায়ে মাত্র কয়েক মিনিট হাঁটুন। আর এতেই হবে ম্যাজিক। বহু শারীরিক জটিলতা দূরে পালাবে।
খালি পায়ে হাঁটা সবার জন্যই মঙ্গলজনক। বিশেষত সকালের দিকে খালি পায়ে হাঁটতে পারেন। এই সময়ে মাটি ঠান্ডা থাকে। ফলে পায়ে গরম লাগে না। এখন প্রশ্ন হলো, খালি পায়ে হাঁটলে কোন কোন উপকার মেলে?
বিজ্ঞানীরা বলছেন, হাঁটার মতো সহজ ব্যায়াম আর একটাও পাবেন না। তাই নিয়মিত হাঁটতেই হবে। যখনই সময় পাবেন হাঁটুন। ধীরে ধীরে কদম ফেলে এগিয়ে গেলেও উপকার পাবেন। কমবে সুগার, প্রেশার, কোলেস্টেরলসহ বহু ঘাতক অসুখের ঝুঁকি।
খালি পায়ে হাঁটার চেষ্টা করুন। খালি পায়ে হাঁটলে অনেক উপকার মিলতে পারে। ঘাসের সবুজ বাগিচার ওপর খালি পায়ে হাঁটলে শরীর ও মন দুইই ভালো থাকে। এ ছাড়া খালি পায়ে হাঁটলে আরও যেসব উপকার পাবেন:
ফুট পজিশনিং ঠিকঠাক থাকে
সেই ছোটবেলায় আমরা হাঁটতে শিখেছি। তবে হাঁটা শেখা হয়ে গেছে মানেই যে একদম সঠিক ভঙ্গিতে পা মাটিতে পড়ছে, এমন নয়। দেখা গেছে, বড় বয়সেও অনেকের হাঁটার সময় ফুট পজিশন ঠিক থাকে না। তবে নো চিন্তা, এই সমস্যার মুশকিল আসান করতে পারে বেয়ার ফুট ওয়াকিং। আপনি যদি সকাল বেলা খালি পায়ে হাঁটতে পারেন, তাহলেই দেখবেন ফুট পজিশন ঠিকঠাক হয়েছে। এতে পায়ের পেশি ও জয়েন্টের নমনীয়তা বাড়ে। ফলে পায়ে ব্যথা হওয়ার আশঙ্কাও কমে যায়।
ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেহের ভারসাম্য বজায় রাখাটা খুব চাপের হয়ে দাঁড়ায়। এমনকী অনেকের ক্ষেত্রেই দেহের ভারসাম্য বিগড়ে যেতে পারে। তবে ঘাবড়ে গিয়ে লাভ নেই। বরং এই সমস্যার সহজ সমাধান হলো খালি পায়ে হাঁটা। আপনি খালি পায়ে হাঁটতে পারলেই অনায়াসে ভারসাম্য ঠিক রাখতে পারবেন। এরপর থেকে আর কোনও সমস্যা হবে না। হোঁচট খাওয়া, পড়ে যাওয়ার মতো দুর্ঘটনার আশঙ্কাও কমবে। তাই এখন থেকেই জুতো খুলে মাঠে হাঁটা চালু করে দিন।
হাঁটু, কোমরের জয়েন্ট ঠিকমতো কাজ করে
হাঁটু ও কোমরের ব্যথায় আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। অনেকেই এই রোগে ভুগে থাকেন। দেখা গেছে, বেশিরভাগ সময়ই এই দুই জয়েন্টের কাজকর্মের ব্যাঘাত হওয়ায় বাতের ব্যথা হয়। তবে সমস্যা এই স্তরে পৌঁছানোর আগেই আপনি খালি পায়ে হাঁটা শুরু করে দিন। এতে এই দুই জয়েন্ট ঠিকমতো কাজ করতে পারে। ফলে বাতের ব্যথায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমে।
পায়ের পেশি শক্ত হয়
জুতা পরে হাঁটলে পায়ের পেশির ওপর তেমন একটা চাপ পড়ে না। তবে আপনি খালি পায়ে হাঁটলে পা ও কোমরের পেশির ওপর চাপ বাড়ে। ফলে এই অংশের পেশির জোর বাড়ে বলে জানাচ্ছে হেলথলাইন। তাই পায়ের ও কোমরের পেশি শক্ত করতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই দিনে অন্তত কিছুটা সময় খালি পায়ে হাঁটতে হবে। বিশেষত, বয়সকালে খালি পায়ে হাঁটলে লাভ মেলে।
যে বিষয়গুলো অবশ্যই মনে রাখবেন
খালি পায়ে হাঁটার আগে এই কয়েকটি বিষয় নিশ্চিত করুন-
১. কোনও এবড়ো-খেবড়ো রাস্তায় বা মাঠে খালি পায়ে হাঁটবেন না।
২. কংক্রিট বা পিচের রাস্তাতেও খালি পায়ে হাঁটা থেকে বিরত থাকুন।
৩. পায়ে কোনও ইনফেকশন থাকলেও খালি পায়ে হাঁটা যাবে না।
৪. ডায়াবেটিক ফুট থাকলে অবশ্যই সবদিক বিবেচনা করে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো খালি পায়ে হাঁটুন।
৫. ভোরের দিকে খালি পায়ে হাঁটা উপকারী।