সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ৮ নম্বর কাওয়াকোলা ইউপিকে রক্ষা ও জিয়ারপাড়া বালু মহলের বাইরে অবৈধ বালু তোলা বন্ধে গণস্বাক্ষর করে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন কাওয়াকোলাবাসী। লিখিত অভিযোগটি প্রধানমন্ত্রী, ভূমিমন্ত্রীসহ পানি সম্পদ সচিব বরাবর অনুলিপিও প্রেরণ করা হয়েছে।
১৫০ জনের গণস্বাক্ষরকৃত আবেদনটি সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কাছে কাওয়াকোলা ইউনিয়নবাসীর পক্ষ থেকে ছরোয়ার হোসেন, রফিকুল ইসলাম, ফারুক ভূঁইয়া, শাহাদত হোসেন, ইসমাইল হোসেন আবেদনপত্রটি জমা দেন।
অজানা যায়, সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক কর্তৃক আবেদনকৃত দরপত্রের মাধ্যমে জিয়ারপাড়া বালুমহল ইজারা প্রদান করেন, যা যমুনা নদীর পশ্চিম তীরবর্তী সিরাজগঞ্জ পৌরসভা সীমানায় অবস্থিত। অথচ কিছু চিহ্নিত অসাধু বালু ব্যবসায়ী বদরুল আলম, গোলাম মোস্তফা সোহাগ, তৌহিদুল ইসলাম তাপস, তোফাজ্জল হোসেন, শফিকুল ইসলাম বাবু জিয়াপাড়া বালু মহলের বাইরে যমুনাবনদীর পূর্বপাড়ে কাওয়াকোলা ইউনিয়নের কাওয়াকোলা গ্রামের পূর্ব সীমানা ও দোগাছি গ্রামের পশ্চিম সীমানায় বালু উত্তোলন করে আসছে। যাহা নিয়ম বর্হিভূত ও আইন পরিপন্থি।
জানা যায়, অবহেলিত ৮ নম্বর কাওয়াকোলা ইউপির সাধারণ মানুষের জন্য ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন যার জন্য কাওয়াকোলাবাসী প্রধানমন্ত্রীর কাছে আজীবন কৃতজ্ঞ থাকবে এবং প্রধানমন্ত্রী স্বকণ্ঠে ঘোষণা দিয়েছেন. এক ইঞ্চি জমি যেন অনাবাদী না থাকে অথচ এই অবৈধভাবে বালু তোলার ফলে কাওয়াকোলা ইউনিয়নের ফসলি জমি, বসত বাড়িঘর, সামাজিক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেমন, স্কুল, মাদরাসা, মসজিদ, কমিউনিটি ক্লিনিক, মুজিবকেল্লা ভূমিহীনদের আবাসন ও পাকা রাস্তা নদীগর্ভে বিলীন হতে চলেছে।
এভাবে বালু তোলা চলমান থাকলে সিরাজগঞ্জের সদর উপজেলার মানচিত্র থেকে ৮ নম্বর কাওয়াকোলা ইউনিয়ন বিলিন হয়ে যাবে। জিয়ারপাড়া বালু মহলের বাইরে বালু তুলতে আমরা ইউনিয়নবাসী বালু খেকোদের বারবার নিষেধ করা সত্ত্বেও বালু খেকোরা কর্ণপাত না করে আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে বালু তোলা অব্যাহত রেখেছে। এভাবে চলমান থাকলে আমরা কাওয়াকোলাবাসী সর্বশান্ত হয়ে পথে বসবো।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কাওয়াকোলার ইউনিয়নে ৩ টি-কৈগাড়ী দোরতা, চান্ডাল বয়ড়া ও জিয়ারপাড়া বালু মহল রয়েছে। সরকার ইজারা দেওয়ার জন্য টেন্ডার আহবান করেছে। টেন্ডার অনুযায়ী ইজারার মূল্য সরকারের রাজস্ব খাতে জমা দিয়ে বালু মহল থেকে বালু তুলছে। কিন্তু জিয়ারপাড়া বালু মহলের ইজারাদার মৃত ফয়সাল ওয়াহিদ বাবু এর উত্তরসূরী বদরুল আলম দুলাল গং বাইরে থেকে কাওয়াকোলা ও দোগাছী মৌজা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে।
জিয়ারপাড়া মৌজার আয়তন ১১ দশমিক ৪৪ একর (৩৫ বিঘা)। জিয়ারপাড়া বালুমহলের পশ্চিমে কুড়িপাড়া-চিথুলিয়া গ্রাম-সিরাজগঞ্জ পৌরসভা, উত্তরে হাটবয়ড়া, পুর্বে কাওয়াকোলা ও দোগাছি মৌজা, দক্ষিণ বাঙ্গালপাড়া ও চান্ডালপাড়া গ্রাম রয়েছে।
বর্তমানে জিয়ারপাড়া বালু মহলের পশ্চিমে কুড়িপাড়া-চিথুলিয়া সম্পুর্ন যমুনা নদীতে। উত্তরে হাটবয়ড়া সম্পূর্ন যমুনা নদীতে, পুর্বে কাওয়াকোলার অর্ধেক যমুনা নদীতে, বাকী অর্ধেক বাড়িঘর ও ফসলি জমি রয়েছে এবং দোগাছিতে বাড়িঘর ও ফসলি জমি রয়েছে। দক্ষিনে বাঙ্গালপাড়া ও চান্ডাল বয়ড়া সম্পূর্ন যমুনা নদীতে।
জিয়ারপাড়া বালুমহলের ইজারাদার জিয়ারপাড়া মৌজার ১১ দশমিক ৪৪ একর জায়গায় ড্রেজার না লাগিয়ে কাওয়াকোলা ও দোগাছী গ্রামে বাড়িঘর, ফসলি জমির নদী তীরবর্তী স্থানে ২০ টি ড্রেজার বালু উত্তোলন করে প্রতি বলগেটের মুল্য ১৫ হাজার টাকা নিয়ে ভূয়াপুরের গোবিন্দদাসী হাট থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানের বালু ব্যবসায়ীদের নিকট বিক্রি করে আসছে।
জিয়ারপাড়া বালু মহলে বাইরে থেকে অবৈধভাবে বালু তোলা বন্ধে ৭ মে সিরাজগঞ্জ হার্ডপয়েন্ট পুরাতন জেলখানা ঘাটে ও ১০ মে বালু তোলার স্থানে নদী তীরবর্তী কাওয়াকোলা ইউপির নারী-পুরুষেরা মানববন্ধন করেন।