শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:০৫ অপরাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান

মৌমাছি সম্পর্কে কোরআন ও বিজ্ঞান

  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২০ মে, ২০২৩
  • ১০৮ বার পঠিত

এই মহাবিশ্ব যিনি সৃষ্টি করেছেন তার কাছেই রয়েছে সব কিছুর সঠিক সমাধান। আর তাই তো তিনি নাজিল করেছেন কোরআন। কোরআনে মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তাআলা মানব জীবনের সব সমস্যার সমাধান দিয়ে দিয়েছেন এবং এটি একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন।
পবিত্র কোরআনুল কারিম এমন একটা গ্রন্থ যার মধ্যে সংক্ষিপ্ত বাক্যে অনেক কিছু বলা হয়। আর এটা কোনো বিজ্ঞান গ্রন্থ নয়। এটা ধর্ম গ্রন্থ, কিন্তু পবিত্র কোরআনে বিজ্ঞানের অনেক কিছুর সমাধান পাওয়া যায়, যা বিজ্ঞান স্বীকার করে নিয়েছে এবং কোরআনের কোনো আয়াত আজও কেউ ভুল প্রমাণ করতে পারেনি।

দিনে দিনে বিজ্ঞানও কোরআনের বাণীকে মেনে নিচ্ছে। মৌমাছি মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তাআলার অপূর্ব সৃষ্টি। যাকে আরবিতে বলা হয় ‘নাহল’। পবিত্র কোরআনে ‘নাহল’ নামে একটি সূরা অবতীর্ণ হয়েছে। এই সূরাটি পবিত্র কোরআনের ১৬তম সূরা। সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে এবং এর আয়াত সংখ্যা ১২৮টি। এই সূরার ৬৮ আয়াতের থেকে এর নামকরণ করা হয়েছে।

আমরা আগে জানতাম মৌমাছি মধু সংগ্রহ করে বিভিন্ন ফুল থেকে অতঃপর তা মৌচাকে মজুদ করে রাখে সরাসরি। আসলে তা নয়, বিজ্ঞান কিছুদিন আগে প্রমাণ করেছে মৌমাছির শরীর থেকে মধু বের হয়। অথচ পবিত্র কোরআন প্রায় সাড়ে ১৪ শ’ বছর আগেই বলে দিয়েছে মধু মৌমাছির শরীর থেকে বের হয়।

পবিত্র কোরআনুল কারিমে ইরশাদ হয়েছে-

وَأَوْحَى رَبُّكَ إِلَى النَّحْلِ أَنِ اتَّخِذِي مِنَ الْجِبَالِ بُيُوتًا وَمِنَ الشَّجَرِ وَمِمَّا يَعْرِشُونَ
অর্থ: ‘আপনার পালনকর্তা মধু মক্ষিকাকে আদেশ দিলেন: পর্বতগাহ্রে, বৃক্ষ এবং উঁচু চালে গৃহ তৈরি কর’। (সূরা: নাহল, আয়াত: ৬৮)

ثُمَّ كُلِي مِن كُلِّ الثَّمَرَاتِ فَاسْلُكِي سُبُلَ رَبِّكِ ذُلُلاً يَخْرُجُ مِن بُطُونِهَا شَرَابٌ مُّخْتَلِفٌ أَلْوَانُهُ فِيهِ شِفَاء لِلنَّاسِ إِنَّ فِي ذَلِكَ لآيَةً لِّقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ
অর্থ: ‘এরপর সব প্রকার ফল থেকে ভক্ষণ কর এবং আপন পালনকর্তার উম্মুক্ত পথ সমূহে চলমান হও। তার পেট থেকে বিভিন্ন রঙের পানীয় নির্গত হয়। তাতে মানুষের জন্য রয়েছে রোগের প্রতিকার। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্যে নিদর্শন রয়েছে’। (সূরা: নাহল, আয়াত: ৬৯)

১৯৭৩ সালে, ‘কার্ল ভন ফ্রিচ’(karl von frisch) মৌমাছির আচরণ ও যোগযোগের ওপর গবেষণার জন্য নোবেল পুরষ্কার পেয়েছেন।

‘মৌমাছি কোনো নতুন ফুলের বাগানের সন্ধান পেলে মৌচাকে ফিরে আসে এবং মৌমাছির নাচ’নামক আচরণ দ্বারা অন্যান্য সাথীদেরকে সে বাগানের হুবুহু দিক ও মানচিত্র বলে দেয়। অন্যান্য শ্রমিক মৌমাছিকে তথ্য দেওয়ার লক্ষ্যে এ আচরণের বিষয়টি ক্যামেরার সাহায্যে ছবি গ্রহণসহ অন্যান্য পদ্ধতির মাধ্যমে বৈজ্ঞানিকভাবে আবিষ্কৃত সত্য।

উপরোক্ত আয়াতে, পবিত্র কোরআনুল কারিমে মৌমাছি কীভাবে নিজ দক্ষতার মাধ্যমে নিজ প্রভূর প্রশস্ত পথের সন্ধান পায় তা তুলে ধরা হয়েছে।

অধিকন্তু, উপরোক্ত আয়াতে উল্লেখিত ক্রিয়াপদে স্ত্রীলিঙ্গ ব্যবহূত হয়েছে। (অর্থাৎ (আরবি) এবং (আরবি) চল ও খাও) এর দ্বারা ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, খাদ্যের অন্বেষণে বাসা ত্যাগকারী মৌমাছি হলো স্ত্রী মৌমাছি।

অন্যকথায়, সৈনিক বা কর্মী মৌমাছি হলো স্ত্রী জাতীয়। মূলতঃ শেক্সপিয়ারের ‘Henry the fourth’নাটকের কিছু চরিত্রে মৌমাছি সম্পর্কে আলোচনা এসেছে। সেখানে মৌমাছিকে সৈনিক উল্লেখ করা হয়েছে এবং বলা হয়েছে তাদের একজন রাজা আছে।

শেক্সপিয়ারের যুগে মানুষে এরকমই চিন্তা করত। তাদের ধারণা যে, শ্রমিক মৌমাছিরা পুরুষ। তারা ঘরে ফিরে রাজা মৌমাছির কাছে জবাবদীহি করে। যাই হোক এটা সত্য নয়। শ্রমিক মৌমাছিরা স্ত্রী জাতীয় এবং তারা রাজার কাছে নয়, বরং রানির কাছে জবাবদিহী করে।

আজ থেকে ৩শ বছর আগে আধুনিক বৈজ্ঞানিক গবেষণায় এই বিষয় নিয়ে আলোকপাত করেছে। যা ১৯৭৩ সালে, ‘কার্ল ভন ফ্রিচ’(karl von frisch) এর মাধ্যমে পুর্ণতা পেয়েছে। অথচ মহান আল্লাহর বাণী পবিত্র আলো কোরআনুল কারিমে তা সাড়ে ১৪শ বছর আগেই বলা হয়েছে।

মধু হচ্ছে ওষুধ এবং খাদ্য উভয়ই। মধুকে বলা হয়- বিররে এলাহি ও তিব্বে নব্বী। অর্থাৎ খোদায়ী চিকিৎসা ও নবী করিম (সা.) এর বিধানের অন্তর্ভুক্ত। সূরা মুহাম্মদ এর ১৫ আয়াতে আল্লাহ তাআলার ইরশাদ করেছেন, ‘জান্নাতে স্বচ্ছ মধুর নহর প্রবাহিত হবে’।

বিশ্ব নবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মধু খেতে খুব ভালোবাসতেন। (শামায়েলে তিরমিজি, হাদিস: ১২১)

হজরত ইবনে ওমর (রা.) সম্পর্কে বর্ণিত আছে যে, তার শরীরে ফোঁড়া বের হলেও তিনি তাতে মধুর প্রলেপ দিয়ে চিকিৎসা করতেন। এর কারণ জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, আল্লাহ তাযআলা কোরআনে কি বলেননি যে, তাতে মানুষের জন্য রয়েছে রোগের প্রতিকার। (কুরতুবী)

উল্লেখ্য, খাদ্য ও ঋতুর বিভিন্নতার কারণে মধুর রঙ বিভিন্ন হয়ে থাকে। এ কারণেই কোনো বিশেষ অঞ্চলে কোনো বিশেষ ফল-ফুলের প্রাচুর্য থাকলে সেই এলাকার মধুতে তার প্রভাব ও স্বাদ অবশ্যই পরিলক্ষিত হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com