টানা বৃষ্টিতে সুনামগঞ্জের সবকটি নদনদীর পানি টইটুম্বুর অবস্থা। অতিবৃষ্টি ও গেল প্রায় পাঁচ দিনের পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জ সদর, ছাতক, দোয়ারাবাজার, বিশ্বম্ভরপুর , শান্তিগঞ্জ ও মধ্যনগরের কিছু এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলবার (৪ জুলাই) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সুনামগঞ্জে সুরমা, চলতি, বৌলাই যাদুকাটা, খাসিয়ামারা, চেলা ঝালোখালী নদীর পানি উপচে সদর বিশ্বম্ভরপুর, মধ্যনগর তাহিরপুর, দোয়ারাবাজার, শান্তিগঞ্জ ছাতকসহ ছয় উপজেলার নিম্নাঞ্চলে প্রবেশ করছে। সীমান্তের ওপারের মেঘালয় চেরাপুঞ্জিতে গেল ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত না হওয়ায় উদ্বেগজনকভাবে পানি বাড়েনি। তবে গত কয়েকদিনের লাগাতার বৃষ্টিতে জেলার দোয়ারাবাজার, ছাতক ও সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার নিম্নাঞ্চলে বাড়ির আঙিনায় ও কিছু ঘরবাড়িতে পানি উঠেছে।
এ ছাড়া ছাতক পৌর এলাকা, ইসলামপুর ও নোয়ারাই ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের চলাচল সড়ক, কিছু ঘরবাড়িতে পানি উঠেছে। সুনামগঞ্জ শহরের কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতা এবং শহরতলির কোরবাননগর ও মোল্লাপাড়া ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের প্লাবিত হয়েছে। যানবাহন চলাচল ব্যাহত হওয়ায় নৌকায় করেই গন্তব্যে যেতে হচ্ছে অনেককে। গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়াও।
স্থানীয়রা জানান, পানি যতটা না এসেছে, তার চেয়ে বেশি আতঙ্কে রয়েছেন মানুষ। সবার মাথায় কাজ করছে গেল বছরের বন্যার ভয়াবহতা।
সুনামগঞ্জ শহরের সরকারি কলেজের আশ্রয়কেন্দ্রে গৃহপালিত প্রাণিসহ ২৮ পরিবার এসে আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের মধ্যে কালাম, হারুল ও আমিনাসহ কয়েকজন জানান, পাহাড়ি ঢলে দোয়ারাবাজারের চিলাই নদীর রাবার ড্যামের উজানের বামতীরের বাঁধ ভেঙে ঢলের পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে। এই উপজেলার বড়বন্দ, মাইজখলা, শরীফপুর এলাকার ঘরবাড়িতে পানি উঠেছে। ওই এলাকার কিছু প্রাথমিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষেও পানি উঠেছে বলে জানিয়েছেন তারা।
জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী জানিয়েছেন, সুনামগঞ্জ শহরের সরকারি কলেজ এবং ছাতক ও বিশ্বম্ভরপুরের তিনটি আশ্রয়কেন্দ্রে ভয়ে ৩৭টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। তবে আজ থেকে নদীর পানি কমতে শুরু করেছে বলে জানান জেলা প্রশাসক।