এক সঙ্গে থাকার স্বপ্ন দেখেছিলেন যুগল। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ায় পরিবার। প্রেমিকার বিয়ে হয়ে যায় অন্যত্র। তার বিয়ের দিনই আত্মহত্যা করেন প্রেমিক। সেই খবর পেয়ে বিয়ের দু’দিন পর বাপের বাড়িতে এসে চরম সিদ্ধান্ত নিলেন প্রেমিকাও। জলে ঝাঁপ দিয়ে প্রাণ দিলেন তিনি।
ভারতের রাজস্থানের বাড়মের ঘটনা এটি।
বিয়ের পর বন্ধুদের মারফত প্রেমিকের মৃত্যুর খবর পেয়েছিলেন ২২ বছরের তরুণী। রাতে সেই কথা হোয়াটসঅ্যাপে স্টেটাসে লিখেছিলেন তিনি।
কীভাবে তারা এক ছাদের নীচে থাকার স্বপ্ন দেখেছেন, প্রেমিক কী কী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন— সে সব কথা লিখেছিলেন নববধূ। তার প্রেমিকের দেহ উদ্ধার হয় একটি জলের ট্যাঙ্ক থেকে। তারপর দু’দিন পর বাপের বাড়ি এসে আত্মহত্যা করলেন প্রেমিকাও। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, বিচ্ছেদের যন্ত্রণা থেকে মৃত্যুর পথ বেছে নিয়েছেন যুগল।
পুলিশ সূত্রে খবর, গত ৪ জুলাই বিয়ে হয় ঐ তরুণীর। সেদিন রাতেই তিনি খবর পান যে, প্রাক্তন প্রেমিক আত্মহত্যা করেছেন। এর পর হোয়াটসঅ্যাপে দীর্ঘ স্টেটাস দেন তরুণী। প্রেমিকের কথা লিখেছিলেন তিনি। লেখেন, কী ভাবে দু’জনে এক সঙ্গে জীবন কাটানোর অঙ্গীকার করেছিলেন। কিন্তু একজন একা চলে গেল! এরপর বাপের বাড়ি যান তিনি। শুক্রবার বাড়িতে বলেছিলেন, ‘একটু ঘুরে আসছি।’
কিন্তু আর বাড়ি ফেরেননি তরুণী। শুরু হয় খোঁজ। খবর দেওয়া হয় পুলিশে। অবশেষে তরুণীকে পাওয়া যায়। তবে মৃত অবস্থায়। জলে ডুবে মৃত্যু হয় তার। পরিবারেরও দাবি, আত্মহত্যা করেছেন তাদের মেয়ে।
পুলিশের অনুমান, প্রেমিকের সঙ্গে ঐ তরুণীর বিয়ে দিতে আপত্তি জানিয়েছিল পরিবার। ইচ্ছের বিরুদ্ধে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয় তাকে। এরপর প্রেমিকের মৃত্যুর খবর পেয়ে আর নিজেকে সামলাতে পারেননি তরুণী। তার হোয়াটসঅ্যাপ স্টেটাসও তেমন ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে জানান তদন্তকারীরা।
সেখানে তরুণী জানান, এক জনের সঙ্গে সম্পর্কে ছিলেন তিনি। কিন্তু এক সঙ্গে আর থাকা হল না তাঁদের। তিনি লেখেন, ‘আমরা এক সঙ্গে বাঁচার এবং মরার শপথ নিয়েছিলাম। কেন তুমি আমাকে একা রেখে এই পৃথিবীতে? আমি তোমার কাছে আসছি। দু’দিন দেরি হওয়ার জন্য দুঃখিত।’’
শুধু তাই নয়, মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা আগে প্রেমিকের সঙ্গে নিজের ছবি সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেন তরুণী। ক্যাপশনে লেখেন, ‘কেন আমার সঙ্গে এটা করলে তুমি? এত প্রতিশ্রুতি কেন দিয়েছিলে? এই নিষ্ঠুর পৃথিবীতে কেন মাঝপথে আমায় ফেলে একলা চলে গেলে? কেন আমায় একা ফেলে নিজে মৃত্যুর পথ বেছে নিলে?’