দুদকের কর্মকর্তা পরিচয়ে থামছেই না প্রতারণা। সরকারি কর্মকর্তাদের টার্গেট করে একটি চক্র অভিনব কায়দায় হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এরই মধ্যে আলাদা অভিযানে ডিবির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন দুই ভুয়া দুদক কর্মকর্তা।
এদের একজন রেজওয়ান, আরেক জন নাইম আহমেদ। এবার জানা যাক তাদের কাহিনি।
পড়ালেখা একদম নেই বললেই চলে রেজওয়ানের। তবে দুষ্টুবুদ্ধিতে ছাড়িয়ে গেছেন সবাইকে। দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকের এক উপ-পরিচালকের নাম, পদবি ও ছবি ব্যবহার করে তিনি হোয়াটসঅ্যাপে খুলেছেন অ্যাকাউন্ট। সেই নম্বর ব্যবহার করে তিনি ফোন করেন জেলার একাধিক সরকারি কর্মকর্তাকে।
ফোনে জানান, অবৈধ সম্পত্তি অর্জনসহ নানা অনিয়মের কারণে তাদের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ জমা পড়েছে। অভিযোগ নিষ্পত্তির প্রস্তাব দেন টাকার বিনিময়ে। এভাবেই অনেক সরকারি কর্মকর্তার কাছ থেকে তিনি হাতিয়ে নিয়েছেন মোটা অংকের টাকা।
এতো গেলো রেজওয়ানের গল্প। নাইম আহমেদ আরও একধাপ এগিয়ে। দুদকের নামে একটি ই-মেইল আইডি খুলেছেন। সেই ই-মেইল থেকে তিনি সরকারি কর্মকর্তাদের বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে চিঠি ইস্যু করেছেন। মোবাইল অ্যাপস ব্যবহার করে দুদক কর্মকর্তা পরিচয়ে ফোনও দেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের। দুর্নীতির মামলার ভয় দেখিয়ে দাবি করেন মোটা অংকের টাকা।
এক সরকারি কর্মকর্তা বিষয়টি যাচাই করতে দুর্নীতি দমন কমিশনে যোগাযোগ করে জানতে পারেন তার বিরুদ্ধে এ ধরনের কোনো অভিযোগ নেই।
সার্বিক এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান হারুন অর রশীদ জানান, ‘তারা বলে বেড়ান যে, আপনার নামে দুর্নীতির চিঠি ইস্যু হয়েছে। আর এ চিঠির কপিও প্রতারকরা তাদের কাছে রাখেন। এরপর টার্গেট করা ব্যক্তির বাড়িঘর ও আত্মীয়-স্বজনদের ছবি তোলে বলেন, আপনার নামে এসব আছে, দুদকে অভিযোগ জমা পড়েছে। এখন চুপচাপ শেষ করতে চাইলে এতো টাকা দিতে হবে। তখন যারা আসলেই দুর্নীতিবাজ, তারা ভয় পেয়ে তাদের চাহিদামতো টাকা দিয়ে দেয়। এভাবে তারা বহু টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।’
তাই সরকারি কর্মকর্তা পরিচয়ে ফোন করে কেউ ভয়ভীতি দেখালে, তা যাচাই করার পরামর্শ দিলেন পুলিশের এঊর্ধ্বতন এ কর্মকর্তা।