রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৩৬ পূর্বাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান

বিনামূল্যের পাঠ্যবই প্রস্তুতকারীদের হুঁশিয়ার করেছেন শিক্ষামন্ত্রী

  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ২ জুলাই, ২০১৯
  • ২৮৫ বার পঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক,সিটিজেন নিউজ:শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বিনামূল্যের পাঠ্যবই প্রস্তুতকারীদের হুঁশিয়ার করেছেন । নিজেদের স্বার্থকে সামনে রেখে যে সব মুদ্রণকারী নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও হুঁশিয়ার করেন তিনি।

সোমবার জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে (এনসিটিবি) আয়োজিত একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষের এনসিটিবি অনুমোদিত তিনটি বই বাজারজাতের জন্য উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এমন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন শিক্ষামন্ত্রী।
দীপু মনি বলেন, ‘কতিপয় অসাধু ব্যক্তি বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তক তৈরিতে নানা ধরনের অনিয়ম করে বাধা সৃষ্টি করছেন। তাদের কারণে নির্ধারিত সময়ে পাঠ্যপুস্তক পৌঁছানো নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়তে হয়। এসব বন্ধ করতে হবে, যদি এসব অনিয়ম বন্ধ না হয় তবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘যারা পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন এবং পাঠ্যক্রম নির্বাচন করেন তাদের মনে রাখতে হবে, আমাদের সন্তানদের ৪র্থ বিপ্লবের জন্য তৈরি করতে হবে। তাই পাঠ্যক্রম নির্বাচন করার আগে ক্রমাগত ভাবতে হবে। আনন্দ পাঠের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের জ্ঞান তৈরি করতে হবে। এ জন্য প্রয়োজনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে পাঠ্যক্রম নির্বাচন করা যেতে পারে। এনসিটিবি সরকারি অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতো নয়, এটি একটি জ্ঞান তৈরি করার কারখানা, তাই এ প্রতিষ্ঠানে কর্মকর্তাদের পদায়ন ও বদলির ক্ষেত্রে যোগ্য ব্যক্তিদের প্রাধান্য দিতে হবে। স্বজনপ্রীতি করে অযোগ্য ব্যক্তিদের দায়িত্ব দেয়া যাবে না।’

শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ‘যুবসমাজের মধ্যে মাদক একটি বড় থাবা হিসেবে কাজ করছে। যারা অন্যায় করছে তাদের অধিকাংশই মাদকাশক্ত বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ থেকে আমাদের শিক্ষার্থীদের সচেতন করতে তাদের পাঠ্যপুস্তকে এর ভয়াভহতা ও মাদকমুক্ত থাকার বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এসব বিষয়ে কী কী করণীয় সহশিক্ষায় সেসব বিষয় তুলে ধরতে হবে।’ এ ছাড়া মূল্যবোধ তৈরিতে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের বেশি গুরুত্ব দেয়ার আহ্বান জানান তিনি।

এ সময় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, ‘বর্তমানে বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তক তৈরির জন্য মুদ্রণ শিল্প সমিতি একটি বড় শিল্প হিসেবে গড়ে উঠেছে। কেউ কেউ সরকারের বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কার্যক্রম বিতর্কিত করতে নানা ধরনের সমস্যা তৈরি করছে। নিজেদের ক্ষুদ্র স্বার্থের জন্য নানা অনিয়ম করছে। জাতীয় স্বার্থের কথা চিন্তা করে এসব বন্ধ করতে হবে। শুধু নিজের ক্ষুদ্র স্বার্থের কারণে বাজারে নকল বই বিক্রি করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী এনসিটিবির অনুমোদিত ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সাহিত্যপাঠ, বাংলা সহপাঠ ও ইংলিশ ফর টুডে এ তিনটি বই উদ্বোধন করেন। এ সময় উপস্থিত বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মোট ছয়জন শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই তুলে দেন শিক্ষামন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. সোহরাব হোসেন, কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের সচিব মুনশী শাহাবুদ্দীন আহমেদ, এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ন চন্দ্র সাহা। এ ছাড়াও শিক্ষা মন্ত্রণালয়-মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরের কর্মকর্তা, বিভিন্ন বোর্ড চেয়ারম্যান, এনসিটিবি কর্মকর্তা, মুদ্রণকারী, প্রকাশক, শিক্ষার্থী-অভিভাবক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

আজ থেকে স্কুলে ভর্তি আবেদন শুরু, নেই মুক্তিযোদ্ধার নাতি কোটা সিটিজেন প্রতিবেদকঃ সরকারি-বেসরকারি স্কুলে প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত ভর্তির আবেদন শুরু হচ্ছে আজ মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) থেকে বেলা ১১টা থেকে অনলাইনে আবেদন করতে পারবে শিক্ষার্থীরা। এই প্রক্রিয়া চলবে ৩০ নভেম্বর বিকেল ৫টা পর্যন্ত। আবেদন শেষে ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী বাছাই ও ভর্তি করানো হবে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী—এবার ভর্তির আবেদন ফি ১১০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় মোবাইল সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান টেলিটকের মাধ্যমে এ ফি পরিশোধ করতে হবে। ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর বয়স জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ অনুযায়ী ৬ বছরের বেশি বয়সী শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিশ্চিত করতে হবে। কাঙ্ক্ষিত শিক্ষাবর্ষের ১ জানুয়ারি তারিখে শিক্ষার্থীর সর্বনিম্ন বয়স ৫ বছর এবং ৩১ ডিসেম্বর তারিখে সর্বোচ্চ ৭ বছর পর্যন্ত হবে। যেমন—২০২৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তিকালে কোনো শিক্ষার্থীর বয়সসীমা সর্বনিম্ন ৫ বছর হবে। অর্থাৎ সর্বনিম্ন জন্মতারিখ হবে ১ জানুয়ারি ২০২০ পর্যন্ত এবং সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৭ বছর পর্যন্ত অর্থাৎ, জন্মতারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭ পর্যন্ত। পরবর্তী শ্রেণিগুলোতে বয়স নির্ধারণের বিষয়টি প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে ধারবাহিকভাবে প্রযোজ্য হবে। শিক্ষার্থীর বয়স নির্ধারণের জন্য ভর্তির আবেদন ফরমের সঙ্গে অনলাইন জন্ম-নিবন্ধন সনদের সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের বয়স নির্ধারণে সর্বোচ্চ ৫ বছরের অতিরিক্ত সুবিধা দেওয়া যাবে। সর্বোচ্চ পাঁচটি স্কুল পছন্দক্রম দেওয়া যাবে অনলাইন আবেদনের ক্ষেত্রে একজন শিক্ষার্থী পছন্দের ক্রমানুসারে সর্বোচ্চ পাঁচটি বিদ্যালয়ের নাম দিতে পারবে। তবে ডাবল শিফট স্কুলে উভয় শিফট পছন্দ করলে দুটি পছন্দক্রম (দুটি বিদ্যালয় পছন্দক্রম) সম্পাদন হয়েছে বলে বিবেচিত হবে। অন্যদিকে সরকারি-বেসরকারি কোনো স্কুলেই একটি শ্রেণির কোনো শাখাতে ৫৫ জনের বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করা যাবে না। বিদ্যমান অনলাইন ভর্তি আবেদন প্রক্রিয়ায় আরও স্বচ্ছতা আনার লক্ষ্যে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীর পছন্দের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো থেকে যেকোনো একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চূড়ান্ত করে নিশ্চিত করতে হবে। বিষয়টি সফটওয়ারে অন্তর্ভুক্ত থাকবে। ক্যাচমেন্ট এরিয়া ঢাকা মহানগরীর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানরা প্রতিষ্ঠানসংলগ্ন সর্বোচ্চ তিনটি থানাকে ‘ক্যাচমেন্ট এরিয়া’ হিসেবে নির্ধারণ করতে পারবেন। ক্যাচমেন্ট এরিয়া থেকে শূন্য আসনের ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থী নেওয়া হবে। ক্যাচমেন্ট এরিয়ার এ কোটা সুবিধা পেতে অনলাইনে আবেদনের সময় শিক্ষার্থীদের অবশ্যই ক্যাচমেন্ট এরিয়া নির্বাচন করতে হবে। ডিজিটাল লটারি ও ফল প্রকাশ আবেদন প্রক্রিয়া শেষে ডিজিটাল লটারি অনুষ্ঠিত হবে। এরপর লটারির ফল প্রকাশ করা হবে। মাউশির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী—আনুষ্ঠানিকভাবে লটারির সম্ভাব্য দিন ঠিক করা হয়েছে ১০ ডিসেম্বর। এরপর ১২ ডিসেম্বর লটারির কার্যক্রম শেষে ফল প্রকাশ করা হতে পারে। তবে বিশেষ কারণে এ তারিখে পরিবর্তন আসতে পারে। মেধা-অপেক্ষমাণ তালিকা প্রকাশ ও চূড়ান্ত ভর্তি ডিজিটাল লটারির ফল প্রকাশের পর ১৭ ডিসেম্বর শুরু হবে চূড়ান্ত ভর্তি কার্যক্রম, যা চলবে ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। আর প্রথম অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে ভর্তি শুরু হবে ২২ ডিসেম্বর থেকে ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত। দ্বিতীয় অপেক্ষমাণ তালিকার ভর্তি চলবে ২৬ ডিসেম্বর থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। চূড়ান্ত ভর্তির ফি ও অন্যান্য খরচ দেশের মফস্বল এলাকার স্কুলে সেশন চার্জসহ ভর্তি ফি সর্বসাকুল্যে ৫০০ টাকার বেশি হবে না। উপজেলা ও পৌর এলাকায় ১ হাজার টাকা, মহানগর এলাকায় (ঢাকা বাদে) সর্বোচ্চ ৩ হাজার টাকা। অন্যদিকে রাজধানীর এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো সর্বোচ্চ ভর্তি ফি নিতে পারবে ৫ হাজার টাকা। আংশিক এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভর্তি ফি নিতে পারবে ৮ হাজার টাকা। তবে ইংরেজি ভার্সনে ভর্তি ফি ১০ হাজার টাকা। তাছাড়া রাজধানীর প্রতিষ্ঠানগুলো উন্নয়ন ফি ৩ হাজার টাকার বেশি আদায় করতে পারবে না। একই প্রতিষ্ঠানে বার্ষিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর প্রতি বছর সেশন চার্জ নেওয়া যাবে। তবে পুনর্ভর্তি ফি নেওয়া যাবে না। সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তির ক্ষেত্রে ৬৮ শতাংশই কোটা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৪০ শতাংশই ক্যাচমেন্ট এরিয়া কোটা। তাছাড়া বীর ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও অধীনস্ত দপ্তর-সংস্থাগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য ১ শতাংশ, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা ১০ শতাংশ, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীরা ২ শতাংশ, অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর যমজ ও সহোদর ভাই-বোনরা ৫ শতাংশ কোটায় সংরক্ষিত আসনে ভর্তির সুযোগ পাবেন। তবে এবার কোটা পদ্ধতিতে কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে। এতদিন মুক্তিযোদ্ধা বা শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পুত্র-কন্যা এবং পুত্র-কন্যা পাওয়া না গেলে নাতি-নাতনিদের ভর্তির জন্য ৫ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত রাখার নিয়ম ছিল। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী—বীর মুক্তিযোদ্ধা বা শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পুত্র-কন্যার জন্যই কেবল ৫ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত থাকবে। এ কোটায় শিক্ষার্থী না পাওয়া গেলে মেধাতালিকা থেকে এ আসনে ভর্তি করতে হবে। জানা যায়, প্রতি বছর কয়েক লাখ শিক্ষার্থী লটারিতে অংশ নিয়ে স্কুলে ভর্তি হয়ে থাকে। সন্তানকে ভালো স্কুলে ভর্তির জন্য চেষ্টা করেন সব অভিভাবক। এ নিয়ে রীতিমতো উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন তারা। এবার তারা লটারি পদ্ধতি বাদ দিয়ে পরীক্ষা নেওয়ার দাবি তুলেছিলেন। সময় স্বল্পতার কারণে অভিভাবকদের দাবি এবার বিবেচনায় নেওয়া সম্ভব না হলেও আগামীতে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com