মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে জাতিগত নিধন থেকে বাঁচতে সীমান্ত অতিক্রম করে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় প্রায় ৮ লাখ রোহিঙ্গা। এর আগেও কয়েক দফায় আসা রোহিঙ্গা মিলে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে এখন সাড়ে ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীর বাস।
রোহিঙ্গা ঢলের ছয় বছরে তাদের প্রত্যাবাসনের কয়েক দফা উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ। কিন্তু মিয়ানমারের টালবাহানা ও রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন শর্ত-অজুহাতে বারবার আটকে যায় প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া। ২০১৮ সালে প্রত্যাবাসনের নির্ধারিত দিনে সব ধরনের প্রস্তুতির পরও তালিকায় নাম থাকা রোহিঙ্গারা হঠাৎ মত পাল্টালে উদ্যোগ ব্যর্থ হয়। ২০১৯ সালে প্রত্যাবাসনের দ্বিতীয় উদ্যোগও বিভিন্ন অজুহাতে ভেস্তে গেছে। তখন রোহিঙ্গারা দেশে ফিরতে পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছিল।
সবশেষ চলতি বছরের শুরুর দিকেও বাংলাদেশ-মিয়ানমার প্রত্যাবাসনের জন্য একটি পাইলট প্রকল্প গ্রহণ করে। এর আওতায় ১১৪০ জন রোহিঙ্গাকে প্রথম পর্যায়ে প্রত্যাবাসনে সব কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়। এতে রোহিঙ্গা প্রতিনিধিসহ ২০ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল মিয়ানমারের রাখাইনে প্রস্তুত করা গ্রামগুলো পরিদর্শনেও যায়। তবে শেষ মুহূর্তে ঐ প্রক্রিয়াও ভণ্ডুল হয়।
উখিয়ার কুতুপালং মধুরছরা ক্যাম্পের এক রোহিঙ্গা নেতা বলেন, ক্যাম্পে হত্যাকাণ্ড ও বিশৃঙ্খলায় মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হাত রয়েছে। ইয়াবা ব্যবসায় যুক্ত রোহিঙ্গারা মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সোর্স হিসেবে কাজ করছে। আমাদের দ্রুত মিয়ানমারে টেকসই প্রত্যাবাসন, সেখানকার বৈষম্যমূলক নাগরিকত্ব আইন বাতিল, রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক। এছাড়া প্রত্যাবাসনের পর আইডিপি ক্যাম্পের পরিবর্তে নিজ গ্রামে ফিরে যাওয়ার সুযোগ ও বসবাসের পরিবেশ হলে আমরা ফিরে যেতে প্রস্তুত।
বৃহস্পতিবার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের দাবিতে সমাবেশ করেছে কক্সবাজারবাসী। কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনই আমাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য। তবে এখন পর্যন্ত প্রত্যাবাসন নিয়ে ইতিবাচক কিছু হয়নি। আশা করি, শিগগিরই একটা ব্যবস্থা হবে।