বরিশালে ইলিশের দাম নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের নাগালের বাইরে চলে গেছে। সাগর থেকে কিছু ইলিশ আসলেও নদীতে জেলেদের জালে ইলিশের দেখা নেই। নদ-নদী থেকে যেন হারিয়ে যাচ্ছে মিঠা পানির রূপালি ইলিশ। ফলে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় বাজার চড়া বলে দাবি বিক্রেতাদের।
জানা গেছে, আগে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রগুলোতে প্রতিদিন তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার মণ ইলিশ আসলেও এখন মাত্র ১০০ থেকে দেড়শ মণ আসছে। আর সরবরাহ কমের অজুহাতে মাছের দাম বাড়ায় ক্ষুব্ধ ক্রেতারা।
ইলিশের দামে ক্ষুব্ধ বরিশাল সাব রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখক জয়ন্ত কুমার। তিনি জানান, সকালে বাজারে আসার সময় ছেলে মেয়ে বায়না ধরেছে ইলিশ মাছ নিয়ে আসার। বাজার ঘুরে সাধ্যের মধ্যে একটি ইলিশ মাছ কিনতে পারিনি।
জয়ন্ত কুমার বলেন, একটা ইলিশ মাছের যে দাম তা দিয়ে আমি দুইটা রুই মাছ কিনতে পারবো। এছাড়া খেতেও পারবো অনেকদিন। ইলিশ মাছ এখন আর আমার স্বার্থের মধ্যে নেই। ছেলেমেয়েরা কষ্ট পাবে জানি কিন্তু বাবা হিসেবে আমি অসহায়। শুধু জয়ন্ত কুমারই নন। এমন চিত্র এখন প্রতিটি নিম্ন ও মধ্যবিত্তের সংসারে। ইলিশের উচ্চ দামে হতাশ তারা।
সরেজমিনে বরিশালের সবচেয়ে বড় পাইকারি মোকাম পোর্টরোড মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ঘুরে জানা যায়, দেড় কেজি ওজনের ইলিশের মণ প্রতি বিক্রি হচ্ছে এক লাখ টাকা দরে। আর এক কেজি ওজনের ইলিশের মণ ৬৪ হাজার, ৯০০ থেকে ৭০০ গ্রাম ইলিশের মন ৫২ হাজার টাকা ছিল; যা খুচরা বাজারে আরও বেশি দরে বিক্রি হয়।
পোর্টরোড মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র আড়তদার সমিতির অর্থ সম্পাদক ইয়ার হোসেন শিকদার বলেন, নদীর মাছ যদি না পাই তাহলে সাগরের মাছ থেকে তো আর মোকামে ইলিশ মাছের দাম কমানো যাবে না। আশা করছি এক সপ্তাহের মধ্যে নদীতে মাছ পাওয়া যাবে তাহলেই ইলিশ মাছের দাম কমে আসবে।
এদিকে ইলিশের দাম নিয়ন্ত্রণে নজরদারির পাশাপাশি প্রশাসনকে নিয়ে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস বরিশাল বিভাগীয় মৎস্য অধিদফতরের পরিচালক নৃপেন্দ্র নাথ বিশ্বাসের।
বরিশালে আগে মাত্র ৬টি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র থাকলেও পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫ এর বেশি। এরমধ্যে শুধু পোর্টরোড মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ১৭০টি আড়তে প্রতিদিন এক কোটি টাকার মাছ বেচাকেনা হয়।