হিমাচলে নেই হিম বাতাস। উষ্ণ প্রকৃতিতে উত্তাপ ছড়াচ্ছে বিশ্বকাপ আবহ। প্রস্তুত ধর্মশালা! মুখিয়ে আছেন বাংলার নবার সাকিব আল হাসানও। সঙ্গে তার সহযোগী যোদ্ধারা।
শনিবার হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় সকাল ১১টা। আর খেলাটি দেখা যাবে টি-স্পোর্টস, গাজী টিভি ও স্টার স্পোর্টসে।
আজকের ম্যাচ দিয়ে দু’দলই বিশ্বকাপ মিশন শুরু করবে। স্বাভাবিকভাবেই কেউ কাউকে যে ছেড়ে কথা বলবে না, তা অনুমেয়ই। এদিকে ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হয়ে আসেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে।
তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই বিশ্বকাপ জিততে চাই। আপনি আমাকে যখন সঠিকভাবে জিজ্ঞেস করেছেন সত্যিকারার্থেই কেমন সুযোগ আছে? তাহলে বলবো–যদি আমরা চার-পাঁচটা ম্যাচ জিততে পারি, তাহলে সেমিফাইনাল বা নক-আউট স্টেজে খেলতে পারবো। এটি আমাদের প্রথম লক্ষ্য। এই জিনিসটা করার জন্য আমাদের যথেষ্ট ভালো দল আছে। প্রথমে আমাদের সেমিফাইনালে যেতে হবে।’
টাইগার কোচের বড় স্বপ্নই বলে দিচ্ছে আজকের ম্যাচ নিয়ে তাদের পরিকল্পনা কি? এমনকি পুরো টুর্নামেন্টেই দলকে নিয়ে তার পরিকল্পনাই বা কি? যাহোক সেমিফাইনালের লড়াইয়ে পৌঁছাতে অনেক হিসাব নিকাশ এখনো বাকি।
এদিকে আজ বাংলাদেশকে মোকাবিলায় ভিন্ন কৌশলের কথা বলেছেন আফগান অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহিদী। তার কথায়, ‘আমাদের নজর দিতে হবে নিজেদের শক্তি ও তাদের (বাংলাদেশের) দুর্বলতায়। গত ম্যাচে যা হয়েছে, আমাদের সেটা থেকে শিখতে হবে। তারা আমাদের চেয়ে ভালো ছিল। আমরা সেটি থেকে শিখবো ও আগামীকাল ওই অনুযায়ী প্রয়োগের চেষ্টা করবো। আমরা ইতিবাচক থাকার চেষ্টা করবো।’
ধর্মশালায় কখনো ওয়ানডে খেলেনি বাংলাদেশ। ২০১৬ টি-২০ বিশ্বকাপে এ মাঠে খেলার অভিজ্ঞতা সতীর্থদের সঙ্গে হয়তো শেয়ার করেছেন সাকিব, মুশফিক, মাহমুদউল্লাহরা। দলে প্রথম বিশ্বকাপ খেলা ক্রিকেটারের সংখ্যাও যে কম নয়।
হিমালচলের উইকেট হতে পারে ভাবনার কারণ। এখন পর্যন্ত দু’শোর নিচে অলআউট হওয়ার ঘটনা ঘটেছে চারবার। ২০১৭ সালের পর এ ভেন্যুতে গড়ায়নি কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ। তারপরও কালো চশমা পড়া হাথুরুর বিশ্বাস উইকেট হবে স্পোটিং।
বাংলাদেশের হেড কোচ চান্ডিকা হাথুরুসিংহে বলেন, ‘আশা করি হাই স্কোরিং ম্যাচ হবে। প্রথমত সবাই বিশ্বকাপ জিততে চায়। তবে বাস্তবতার বিচারে আমাদের লক্ষ্য চার-পাঁচটা ম্যাচ জেতা। তাহলে সেমির সম্ভাবনা তৈরি হবে।’
ওয়ানডেতে পরিসংখ্যানে এগিয়ে থাকলেও পচা শামুকেই পা কাটে বাংলাদেশের। তাই খুব একটা স্বস্তি পাচ্ছে না সাকিব আল হাসানের দল। অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের ইনজুরি আর মাঠের বাইরে নানান আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে চাপে থেকেই ম্যাচটি খেলতে নামবে বাংলাদেশ।
তবে পরিসংখ্যান বিবেচনায় কিছুটা স্বস্তি মিলতে পারে টাইগারদের। কেননা, কাগজ-কলমে সবদিক দিয়েই আফগানদের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ।
এখন পর্যন্ত আফগানদের বিপক্ষে ১৫টি ওয়ানডে খেলেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে টাইগারদের ৯ জয়ের বিপরীতে আফগানদের জয় ৬ ম্যাচে।
বাংলাদেশ আফগানদের বিপক্ষে দ্বৈরথে বিশ্বকাপেও এগিয়ে সাকিব আল হাসানের দল। ওয়ানডে ফরম্যাটে বিশ্বমঞ্চে এখন পর্যন্ত আফগানদের সঙ্গে দু’বার দেখা হয়েছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের। এই দুই দেখায় দুবারই শেষ হাসি হেসেছে টাইগাররা।
তবে দুই দলের হেড টু হেড লড়াইয়ে এগিয়ে আফগানরা। দুই দলের সবশেষ পাঁচ দেখায় তিন জয় রশিদ-নবিদের। বিপরীতে বাংলাদেশের অর্জন দুটি জয়।
বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশ: মেহেদী হাসান মিরাজ, লিটন দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত, সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), তাওহীদ হৃদয়, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, শেখ মেহেদী, তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, শরীফুল ইসলাম।
আফগানিস্তানের সম্ভাব্য একাদশ: হাশমতউল্লাহ শাহিদী (অধিনায়ক), রহমানউল্লাহ গুরবাজ, ইব্রাহিম জাদরান, রহমত শাহ, নাজিবউল্লাহ জাদরান, মোহাম্মদ নবি, আজমতউল্লাজ ওমরজাই, রশিদ খান, ফজল হক ফারুকী, মুজিব উর রহমান ও নাভিন উল হক/নূর আহমেদ।