নওগাঁর আত্রাই উপজেলার বান্দাইখাড়া গ্রামে কালীপূজা উপলক্ষে চারদিন ব্যাপী শুরু হয়েছে গ্রামীণ মেলা। বংশ পরমপরায় প্রায় ২০০ বছর থেকে এ গ্রামে সনাতন ধর্মাম্বলীদের আয়োজনে মেলাটি হয়ে আসছে। মেলায় শতাধিক দোকানে বিভিন্ন পণ্যের পসরা দিয়ে সাজানো হয়েছে।
জানা গেছে, আত্রাই উপজেলার হাটকালুপাড়া ইউনিয়ন। আত্রাই দক্ষিণ তীরে এ ইউনিয়নটি অবস্থিত। এ ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রাম বান্দাইখাড়া। এক সময় প্রশাসনিক ভবন ছিল বান্দাইখাড়া গ্রামে। ১৮৭৫ সালে নওগাঁ জেলা ছিল বান্দাইখাড়া থানাধীন একটি নদী বন্দর। বান্দাইখাড়া থানা এবং মান্দা থানা তখন রাজশাহী মহকুমার অন্তর্গত ছিল। এরপর ১৮৭৬ সালে বান্দাইখাড়া থেকে নওগাঁয় স্থানান্তরিত হয়। এখানে কালের সাক্ষী হয়ে আজও দাঁড়িয়ে আছে বল্লাল সেনের শাসন আমলে নির্মিত সিদ্ধেশ্বরী মন্দির।
বংশ পরমপরায় সনাতন ধর্মাম্বলীরা প্রায় ২০০ বছর থেকে কালীপূজা করে আসছে। গ্রামের এ মন্দিরে ১৪ হাত উচ্চতার কালী প্রতিমা তৈরি করা হয়েছে। রোববার রাতে পূজা শুরু হয়। পরদিন সকাল থেকে সনাতন ধর্মের অনুসারীর বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ, বৃদ্ধ ও শিশু কালী মন্দিরে তাদের মনোবাসনা পূরণ করতে মানত করেন। রোগ-বালাই থেকে মুক্তি, সংসারে শান্তি ও স্বচ্ছলতা এবং দেশের মঙ্গল কামনায় তারা আরাধনা করছেন। পূজা অর্চনা শেষে মঙ্গলবার বিকেলে আত্রাই নদীতে কালী প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হবে।
কালী পূজাকে কেন্দ্র করে এখানে বসে এক গ্রামীণ মেলা। মেলায় জিলাপি ও বিভিন্ন মিষ্টান্ন, কসমেটিকস, খাবারে দোকান ও কাঠের আসবাবপত্রের দোকান বসেছে। প্রায় শতাধিক দোকানে বিভিন্ন পণ্যের পসরা দিয়ে সাজানো হয়েছে। বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের আগমনে মেলা প্রাঙ্গন এক মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। চারদিন ব্যাপী মেলা হলেও চলবে আগামী আরো কয়েকদিন। বিশেষ করে কাঠের আসবাবপত্রের দোকানগুলো প্রায় সপ্তাহজুড়ে থাকবে।
উপজেলার জামগ্রাম থেকে আসা কাগজের ফুলের ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন বলেন, পূজা শুরুর আগের দিন থেকে মেলা শুরু হয়েছে। বাহারি রঙের কাগজ দিয়ে ফুল তৈরি করা হয়েছে। প্রতিদিন ভালো বেচাকেনা হচ্ছে। মেলা থেকে প্রায় ৮-১০ হাজার টাকা আয় হবে।
বান্দাইখাড়া কালী মন্দির পূজা কমিটির সভাপতি অরুন কুমার বলেন, প্রায় ২০০ বছরের ঐতিহ্য বহন করছে এ কালীপূজা। আমরা বংশ পরমপরায় এ পূজা করে আসছি। মেলায় শুধু সনাতন ধর্মের মানুষই না বিভিন্ন ধর্মের মানুষ আসছেন। মেলার শতাধিক দোকানে প্রায় ১৫ লাখ টাকার বেচাকেনা হবে।