চলমান মিরপুর টেস্টের প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটার হিসেবে ‘অবস্ট্রাক্টিং দ্য ফিল্ড’ আউট হয়েছেন মুশফিকুর রহিম। ১৪৬ বছরের টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে মাত্র দ্বিতীয়বার কোনো ব্যাটার এভাবে আউট হয়েছেন। ১৯৫১ সালে ওভাল টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথমবার এমন আউট হয়েছিলেন ইংলিশ ওপেনার লেন হাটন।
বাংলাদেশের ইনিংসের ৪১ তম ওভারে ঘটনাটি ঘটে। কাইল জেমিসনের করা ওভারের চতুর্থ বলটি রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলেন মুশফিক। বল তার ব্যাটে লাগার পর পপিং ক্রিজে ড্রপ করে আরও ডান দিকে সরে যাচ্ছিল। তখন ডান হাত দিয়ে বলটি আরও ঠেলে দেন মুশফিক।
তখন নিউজিল্যান্ডের খেলোয়াড়রা আউটের আবেদন করেন। ভিডিও রিপ্লে দেখে মুশফিককে আউট ঘোষণা করেন তৃতীয় আম্পায়ার। মুশফিকের এমন আউট আলোচনার জন্ম দিয়েছে ক্রিকেট বিশ্বে। অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।
এবার আউটটির ব্যাখ্যা দিয়েছে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা (আইসিসি)। তাদের ওয়েবসাইটে দেওয়া এক বিবৃতিতে মুশফিকের আউটের বিস্তারিত কারণ জানানো হয়েছে। ২০১৭ সাল থেকে ‘হ্যান্ডলড দ্য বল’ অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড আউটের ধারায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
আইসিসির ৩৭.১১ ধারা অনুযায়ী ব্যাটসম্যান যদি বল খেলার মধ্যে থাকাকালে ইচ্ছাকৃতভাবে কথা বা কাজের মাধ্যমে ফিল্ডিং দলকে বাধা দেন কিংবা মনোযোগ নষ্ট করেন, তবে আউট হবেন। তবে ৩৭.২ ধারা মতে, চোট থেকে বাঁচতে এমন কিছু করলে ব্যাটসম্যান আউট হবেন না।
এছাড়া ৩৭.১২ ধারায় বোলার বল করার পর ব্যাটসম্যান যদি যে হাতে ব্যাট ধরা নেই সেই হাত দিয়ে বলে আঘাত করেন বা ছুঁয়ে সরিয়ে দেন তবে আউট ঘোষিত হবেন (ব্যতিক্রম ৩৭.২ ধারা)। সেটি প্রথম, দ্বিতীয় কিংবা আরও পরে ছোঁয়ার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। বল খেলার সময় যেমন তেমনি এরপর ব্যাটসম্যান কিংবা নন স্ট্রাইকার ব্যাটসম্যান উইকেট বাঁচানোর চেষ্টা করার সময়েও এই আইন প্রযোজ্য।
পুরুষদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১২তম ব্যাটার হিসেবে ‘অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড’ আউট হন মুশফিক। ওয়ানডে ক্রিকেটে পাকিস্তানের চার ব্যাটার রমিজ রাজা, ইনজামাম-উল-হক, মোহাম্মদ হাফিজ এবং আনোয়ার আলি এমন বিরল আউট হয়েছিলেন। এছাড়া ভারতের অমরনাথ, ইংল্যান্ডের বেন স্টোকস, যুক্তরাষ্ট্রের মার্শাল এবং লঙ্কান ব্যাটার গুনাথিলাকাও একদিনের ক্রিকেটে এমন আউটের নজির গড়েছেন।
ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত সংস্করণ টি-২০তে এমন আউট হয়েছেন তিন জন। ইংল্যান্ডের জেসন রয়, মালদ্বীপের হাসান রাশিদ এবং অস্ট্রেয়ার রাজমাল সিগিওয়াল এমন আউট হয়েছেন।