দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন আজ মঙ্গলবার শুরু হচ্ছে। নতুন সংসদে বিগত সংসদের অমীমাংসিত ইস্যুগুলো প্রাধান্য দেওয়া হবে বলে জানা গেছে। বিশেষ করে একাদশ সংসদে তামাদি হয়ে যাওয়া বিলগুলোকে এবারের সংসদে আবারো পাসের জন্য তোলা হবে।
তবে তার আগে মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন ও অনুমোদন হতে হবে এসব বিল। এরপর সংসদে পেশ এবং স্থায়ী কমিটির সুপারিশসহ বিলগুলো পাসের জন্য তোলা হবে।
আজ বিকেল ৩টায় রাষ্ট্রপতির ভাষণের মধ্য দিয়ে সংসদের এ অধিবেশন শুরু হবে। নিয়ম অনুয়ায়ী, অধিবেশন শুরুর পর স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার শপথ নেবেন। এরইমধ্যে ভোটে নিরঙ্কুশ জয় পেয়ে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করে এবারো স্পিকার হিসেবে ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও ডেপুটি স্পিকার পদে শামসুল হক টুকুকে মনোনীত করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
সংসদ সচিবালয় জানায়, স্পিকার-ডেপুটি স্পিকার নির্বাচনের পর অধিবেশন কিছু সময় মুলতবি রাখা হবে। ঐ সময় রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন নতুন স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারকে শপথবাক্য পাঠ করাবেন। এর পরই রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবে আলোচনা শুরু হবে।
তামাদি বিল উত্থাপনের বিষয়ে জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নুর-ই-আলম চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, সব সংসদেই কিছু না কিছু বিল তামাদি হয়। এটা স্বাভাবিক ঘটনা। তবে বিলগুলো তামাদি হলেও পরবর্তী সময়ে এগুলো আবারো সংসদে উত্থাপন করা হবে।
সংসদ সচিবালয়ের তথ্য অনুযায়ী, একাদশ সংসদে সর্বোচ্চ ২৫টি অধিবেশন বসে। ঐ সংসদে মোট ১৬৫টি বিল পাস হয়। এর মধ্যে ২৫তম ও শেষ অধিবেশনে রেকর্ড ২৫টি বিল পাস হয়। তবে মন্ত্রিসভায় চূড়ান্ত অনুমোদনের পর জাতীয় সংসদে উত্থাপিত হলেও পাস না হওয়ায় একাদশ সংসদের পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ বিল তামাদি হয়ে যায়।
বিলগুলো হচ্ছে—বহুল আলোচিত ‘গণমাধ্যমকর্মী (চাকরির শর্তাবলি) বিল-২০২২, অত্যাবশ্যক পরিষেবার ক্ষেত্রে (সেবা খাতে) ধর্মঘট নিষিদ্ধ করার বিধান সংবলিত ‘অত্যাবশ্যক পরিষেবা বিল-২০২৩’, ‘বৈষম্যবিরোধী বিল-২০২২’, পেমেন্ট অ্যান্ড সেটেলমেন্ট সিস্টেমস বিল-২০২২’ এবং ব্যাংক আমানত বীমা (সংশোধন) বিল-২০২৩। এ ছাড়া জাতীয় সংসদে পাস হওয়া ‘বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) বিল-২০২৩’ নতুন সংসদে উপস্থাপন এবং তা সংশোধন করা হবে। বিলে ত্রুটি থাকায় রাষ্ট্রপতি সই না করে ওই বিলটি ফেরত পাঠিয়েছিলেন।
জাতীয় সংসদের কার্যপ্রণালি বিধির ৩১৮ ধারায় বলা হয়েছে, ‘সংসদ ভাঙিয়া গেলে সমস্ত অনিষ্পন্ন কার্য বাতিল হইয়া যাইবে।’ সে হিসেবে একাদশ সংসদে পাস না হওয়া বিলগুলো এরই মধ্যে তামাদি হয়ে গেছে।
সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, সাধারণত সরকার পরিবর্তন হয়ে অন্য কোনো দল ক্ষমতায় এলে তামাদি হওয়া বিল ফের উত্থাপিত হয় না। কিন্তু একই দল আবারো ক্ষমতায় এলে তামাদি হওয়া বিলগুলো নতুন করে উত্থাপিত হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়। তখন সরকার চাইলে মন্ত্রিসভায় আবারো অনুমোদন করাতে পারে। এ ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয় থেকে বিলটি নতুন করে সংসদ সচিবালয়ে জমা দিতে হবে।