সিটিজেন প্রতিবেদকঃপানি পরিশোধন যন্ত্রের মাধ্যমে বন্যার পানি থেকে প্রতি ঘণ্টায় ৫০০ লিটার সুপেয় পানি বন্যার্তদের মাঝে সরবরাহ করছে দেশের বৃহত্তম উন্নয়ন সহযোগি সংস্থা ফ্রেন্ডশিপ। প্রকৃতিক দুর্যোগে আগের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এবারের আকষ্মিক বন্যা কবলিত এলাকায় ভ্রাম্যমাণ পানি পরিশোধন প্ল্যান্ট চালু করেছে সংস্থাটি। পাশাপাশি পানিবন্দি কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ এবং ফেনীর ছাগলনাইয়ায় স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে যাচ্ছে ফ্রেন্ডশিপ মেডিকেল টিম।গত কয়েকদিন ধরে এমন কার্যক্রম পরিচালনা করছে সংস্থাটি।
বন্যাদুর্গত এলাকায় ত্রাণ ও স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম নিয়ে ফ্রেন্ডশিপের প্রতিষ্ঠাতা রুনা খান বলেন, বৃহত্তর কুমিলা ও নোয়াখালী অঞ্চলে আকস্মিক বন্যা বাংলাদেশের দুর্যোগে ভিন্ন পরিস্থিতি যোগ করেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা এ ধরনের দুর্যোগের সঙ্গে মোটেও পরিচিত নন। তাই বন্যায় হঠাৎ করে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছে সিলেট, কুমিল্লা ও নোয়াখালীর ৯ জেলার বাসিন্দা। এসব জেলায় জনবসতি এবং জনসংখ্যার হার বেশি। ফলে দুর্যোগকবলিত মানুষের সংখ্যাও বেশি। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে জরুরি ভিত্তিতে স্বাস্থ্যসেবা ও ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করে ফ্রেন্ডশিপ।
বন্যাদুর্গত প্রান্তিক এলাকায় ফ্রেন্ডশিপের স্বাস্থ্যসেবা ও ত্রাণ কার্যক্রমে মাঠ পর্যায়ে নেতৃত্ব দেন সংস্থার জেষ্ঠ্য পরিচালক এবং জলবায়ু কার্যক্রম বিভাগের প্রধান কাজী এমদাদুল হক। আর স্বাস্থ্যসেবার সমন্বয় করেন স্বাস্থ্য বিভাগের উপ-পরিচালক ডা. রাফি আবুল হাসনাত সিদ্দিক।
তারা জানান, জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর), জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ) এবং এরিকস-এর সহযোগিতায় বন্যাকবলিত এলাকায় জরুরি স্বাস্থ্যসেবা ও ত্রাণ নিশ্চিতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে ফ্রেন্ডশিপ। স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে দুর্গত মানুষের কষ্ট লাঘবে নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে সংস্থাটি।
ফ্রেন্ডশিপ কর্মকর্তারা জানান, বন্যাপরবর্তী ত্রাণ ও পুনর্বাসনে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে প্রান্তিক এলাকাকে। কারণ এসব এলাকায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় স্বাভাবিক ত্রাণ কার্যক্রম খুবই সীমিত।
এসব এলাকায় এক হাজারেরও বেশি পরিবারকে ১০ দিনের খাবার ও হাইজিন কিট বিতরণ করেছে সংস্থাটি। বন্যাকবলিত এলাকায় জরুরি বিদ্যুৎ সরবরাহে বসানো হয়েছে চারটি সৌরবিদ্যুৎ স্টেশন। প্রতিদিন দুটি স্থানে আটদিন ধরে মোট ১৬টি স্থানে স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে ফ্রেন্ডশিপ। বন্যাকবলিত কুমিল্লা ও ফেনীর দুটি উপজেলায় প্রায় ৪০ হাজারের বেশি স্থানীয় বাসিন্দাকে স্বাস্থ্যসেবার আওতায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা নিয়েছে সংস্থাটি।