মোঃ মজিবর রহমান শেখ
ঠাকুরগাঁও :ঠাকুরগাঁওয়ে অনলাইনে প্রেমের ফাঁদে ফেলে মিলন হোসেন নামের এক কলেজছাত্রকে অপহরণ করে ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। তবে টাকা পরিশোধ করেও মিলনকে জীবিত ফেরত পেল না মা-বাবা । প্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশ জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী মিলনের মরদেহ একটি পরিত্যক্ত টয়লেট থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) রাত ৩টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঠাকুরগাঁওয়ের পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম। গ্রেপ্তাররা হলেন- ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার শিবগঞ্জ মহেশপুর বিট বাজার এলাকার মো. মতিয়র রহমানের ছেলে মো. সেজান আলী। সে এলাকার কথিত সাংবাদিক হিসেবে পরিচিত। তবে তাৎক্ষণিকভাবে আরেকজনের নাম পরিচয় দেওয়া সম্ভব হয়নি পুলিশের পক্ষে। ঠাকুরগাঁও জেলা পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘অনেক দিন ধরে এই বিষয়ে কাজ করছিলাম আমরা। কোনো ক্লু পাচ্ছিলাম না। প্রযুক্তির সহযোগিতায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা স্বীকার করে মিলনকে খুন করেছে ও তাদের দেখানো মতে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গ্রেপ্তার সেজান আলীর বাড়ির পাশেই একটি পরিত্যক্ত টয়লেটের নিচ থেকে মিলনের গলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি মামুনুর রশিদ বলেন, ‘বুধবার রাতে মিলনকে অপহরণের ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করি। এ বিষয়ে পরবর্তীতে বিস্তারিত জানানো হবে।’জানা যায়, অনলাইনে প্রেমের ফাঁদে ফেলে কলেজছাত্র মিলনকে অপহরণ করে একটি চক্র। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৮টায় ঠাকুরগাঁও পলিটেকনিকের পেছনে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েই নিখোঁজ হয় মিলন। ঘটনার দিন রাত ১টার দিকে ভুক্তভোগী পরিবারকে ফোনে অপহরণের বিষয়টি জানান, অপহরণকারীরা। প্রথমে ১২ ঘণ্টার মধ্যেই মুক্তিপণের ৩ লাখ টাকা দাবি করেন তারা। পরদিন দুপুরে ৩ লাখ টাকা দিতে রাজি হলে চক্রটি ৫ লাখ টাকা দাবি করে। পরদিন দাবির পরিমাণ বেড়ে ১০ লাখ টাকা হয়। তিন দিন পরে ১৫ লাখ টাকা চায় চক্রটি। সবশেষে ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারী চক্র। ৯ মার্চ রাতে মুক্তিপণের ২৫ লাখ টাকা অপহরণকারী চক্রের কাছে বুঝিয়ে দেন অপহৃত মিলনের বাবা পানজাব আলী।
২৩ বছর বয়সী শিক্ষার্থী মিলন হোসেন দিনাজপুর পলিটেকনিক কলেজের ছাত্র ও ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার খনগাও এর চাপাপাড়া এলাকার পানজাব আলীর ছেলে। এদিকে মিলনের পরিবার জমি জায়গা বিক্রি করে ও ধার দেনা করে ২৫ লাখ টাকা দিয়েও ছেলেকে জীবিত না পেয়ে শোকের কাতর হয়ে পড়েছে।