হাফসা উত্তরা :
রাজধানীর দক্ষিণখানে চোরাই ও মাদকচক্রের গোপন কর্মকাণ্ড অনুসন্ধানে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন চ্যানেল এস-এর অনুসন্ধানী প্রতিবেদকরা। এতে গুরুতর আহত হয়েছেন অন্তত তিনজন সাংবাদিক। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটে বুধবার (৯ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে দক্ষিণখান থানার কোটবাড়ী এলাকায় সিয়াম স্টোর সংলগ্ন পাকা রাস্তায়।
চ্যানেল এস-এর অনুসন্ধানী রিপোর্টার তরিকুল ইসলাম দক্ষিণখান থানায় দায়েরকৃত মামলায় উল্লেখ করেন, তাদের টিম জানতে পারেন—কোটবাড়ী এলাকার এক বাড়িতে মেট্রোরেলের চোরাই মালামাল কেনাবেচা হচ্ছে। দুপুর একটার দিকে টিম সদস্যরা তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহে পালনের বাড়ির দিকে গেলে হঠাৎ ক্যামেরায় ধরা পড়ে ঐ চক্রের মাদক বিক্রির কিছু দৃশ্য।
ঘটনার বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশকে জানালে, পুলিশ পৌঁছানোর আগেই চক্রটির সদস্যরা হামলা চালায়। মনির শিকদার (৩৬), জয়নব বেগম (৩৮), ফয়সাল (২৫) ও আরও ১৫-২০ জন সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সাংবাদিকদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।
হামলায় রিপোর্টার মিজানুর রহমান (৩০) গুরুতর আহত হন। তার মাথায় এলোপাথাড়ি আঘাত করে রক্তাক্ত করা হয় এবং তার কাছ থেকে একটি ভিভো এক্স৮০ (মূল্য প্রায় ৮০ হাজার টাকা) ও একটি গোপন ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়া হয়। ক্যামেরাপারসন শাকিল আল ফারুকী (২৯) গুরুতর আহত হন, এবং রিপোর্টার শান্ত ইসলাম (২৫)-এর কাছ থেকে ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা।
চক্রটি ঘটনাস্থলে চ্যানেল এস-এর ক্যামেরা ও অন্যান্য সরঞ্জাম ভাঙচুর করে এবং ক্যামেরার মেমোরি কার্ড নিয়ে যায়, যেখানে চোরাই মালামাল ও মাদকের ভিডিও ফুটেজ সংরক্ষিত ছিল। সবমিলিয়ে প্রায় দুই লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে অভিযোগ।
এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বৃদ্ধা জানান, এই চক্রটি দীর্ঘদিন ধরেই চোরাই মালামাল কেনাবেচা, মাদক ব্যবসা ও ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত। তিনি জানান, ফয়সাল নামের একজন কিশোর গ্যাং লিডার যেকোনো প্রতিবাদেই দলবল নিয়ে হামলা চালায়।
দক্ষিণখান থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ তাইফুর রহমান মির্জা,জানান, সাংবাদিকদের ওপর হামলা কোনভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। এ ঘটনায় একটি নারী সদস্যকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং বাকি আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
আহত সাংবাদিক মিজানুর রহমান ও শাকিল আল ফারুকী বর্তমানে বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।