ভারতীয় নৌবাহিনী হেলিকপ্টার, জরুরি সেবাপ্রদানকারী নৌকা এবং ডবুরি দল ইত্যাদির মাধ্যমে মুম্বাইয়ে বন্যায় আটকে পড়া একটি ট্রেন থেকে অন্তত ১০৫০ জন যাত্রীকে উদ্বার করেছে। গত কয়েকদিন ধরে টানা বর্ষণের ফলে ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে শহরটি।
গত শুক্রবার শেষ রাতে মুম্বাই থেকে কোলহপুরের উদ্দেশে মহালক্ষ্মী নামের ওই ট্রেনটি ছেড়ে যায়। কিন্তু বন্যার কারণে গতকাল সেটি মাত্র ৬০ কিলোমিটার যেতে পারে। কিন্তু প্রবল বর্ষণের ফলে সৃষ্ট বন্যা ছাড়াও রেল লাইন পাঁচ থেকে সাঁত ফুট পানির নিচে তলিয়ে যায়।
মুম্বইয়ের অদূরে ছোট শহর ওয়াঙ্গানির কাছাকাছি গেলে উপায় না পেয়ে ট্রেন বন্ধ রাখা হয়। ট্রেনে থাকা কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যাত্রীদের উদ্দেশে জানান, তারা যেন কেউিই ট্রেন থেকে না নামে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়।
এরপর আটকা পড়া ট্রেনের যাত্রীদের উদ্ধারে সামরিক হেলিকপ্টার, দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনীর (এনডিআরএফ) রবারের ডিঙ্গি ও উদ্ধারকারী দল পাঠিয়ে শনিবার বিকালের মধ্যে সব যাত্রীকে উদ্ধার করা হয়। যাত্রীরা জানিয়েছেন, ট্রেন বন্ধ হওয়ার পর ১৫ ঘণ্টা যাবৎ পানি ও খাবার ছাড়া ছিলেন তারা।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ট্রেনটি একই যায়গায় আনুমানিক ১২ ঘণ্টার মতো আটকে ছিল। ভারতীয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে, উদ্ধার অভিযান শুরু করার পাঁচ ঘণ্টা পর ট্রেনের ভেতরে থাকা মানুষজনকে নিরাপদে উদ্ধার করা সম্ভব হয়। ট্রেনে নয়জন অন্তঃসত্ত্বা নারীও ছিলেন।
উপর থেকে তোলা ছবিতে দেখা যাচ্ছে, মানুষজন লাইফ জ্যাকেট পড়ে মানুষজনকে ছোট্ট নৌকায় করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। নিকটবর্তী স্থানে একটি অস্থায়ী শিবির স্থাপন করে বন্যার্তদের জন্য খাবার ও অষুধের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
উদ্ধারকৃত যাত্রীদের চিকিৎসা সেবা প্রদানে অস্থায়ী শিবিরে কমপক্ষে ৩৭ জন ডাক্তার এবং অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় মুম্বাইয়ের বিভিন্ন অংশে অন্তত ২০ সেন্টিমিটার (৮ ইঞ্চি) বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ফলে শহরটির ধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থায় ঘটেছে বিপর্যয়।
বৃষ্টি ও বন্যার কারণে যেসব যাত্রীরা বিপাকে পড়ছেন তাদের ভ্রমণের বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে ট্রেন পরিচালনাকারী কোম্পানির এক মুখপাত্র জানিয়েছেন। বন্যার কবলে পড়ে মুম্বাইয়ের ১১টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে এবং মুম্বাই বিমানবন্দরগামী কয়েকটি ফ্লাইটের পথ অন্যান্য বিমানবন্দরের দিকে ঘুরিয়ে দেয়া হয়েছে।