অনলাইন ডেস্ক,সিটিজেন নিউজ: ৃ১৫ ও ২১ আগস্টের নির্মম হত্যাকাণ্ডকে ‘দুর্ঘটনা’ বলার অভিযোগে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেনকে ওএসডিসহ স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ বৃহস্পতিবার এ আদেশ জারি করে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন সিনিয়র সচিব মো. সোহরাব হোসাইন।
বুধবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এক গোলটেবিল বৈঠকে বিশেষ অতিথি ছিলেন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন। ওই অনুষ্ঠানে তিনি ১৫ আগস্ট ও ২১ আগস্টের হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
পরিচালকের ওই বক্তব্য বৃহস্পতিবার শিক্ষা বিভাগে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি করে। ইউনাইটেড ফর বডি রাইটস বাংলাদেশে অ্যালায়েন্স (ইউবিআর) ‘শিক্ষক প্রশিক্ষণ কারিকুলামে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য এবং অধিকার’ শিরোনামে ওই বৈঠকের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠান চলাকালে গোলটেবিলের সঞ্চালক ও বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের প্রতিষ্ঠাতা রোকেয়া কবীর ড. জাহাঙ্গীরের মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করেন। গোলটেবিল ছেড়ে চলে যেতে চাইলে রোকেয়া কবির জাহাঙ্গীরকে দাঁড় করিয়ে রেখে ‘তীব্র প্রতিবাদ করেন’ এবং বক্তৃতা প্রত্যাহারের জন্য চাপ দেন।
গোলটেবিল বৈঠকে মাদরাসা টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. মো. গোলাম আজম আযাদ ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মাহমুদুল হকও উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়াও শিক্ষা অধিদফতর ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের কয়েকজন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ড. জাহাঙ্গীর বৃহস্পতিবার রাতে বলেন, ওএসডির কোনো আদেশ আমি পাইনি। কী কারণে ওএসডি করা হয়েছে তা জানি না। বক্তৃতা-সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যেভাবে আমার বক্তৃতা আজকে গণমাধ্যমে এসেছে সেভাবে আমি দিইনি। তবে উল্লিখিত বক্তৃতা দেয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকারও করেননি।
উল্লেখ্য, এর আগে তিনি একই অধিদফতরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপ-পরিচালক ছিলেন। নানা অভিযোগে তাকে ইডেন কলেজে বদলি করা হয়েছিল। পরে নানাভাবে ‘ম্যানেজ’ করে তিনি পরিচালক হয়ে ফিরে আসেন। ওই দফতরে যোগদানের পর তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকল্পের কেনাকাটা ও বিল-ভাউচার দুর্নীতির অভিযোগ উঠতে থাকে। ওইসব দেখাভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন তিনি।
বর্তমানে শিক্ষাখাত নিয়ন্ত্রণকারী গ্রুপ বাড়ৈ সিন্ডিকেটের শীর্ষ ব্যক্তিদের একজন হলেন ড. জাহাঙ্গীর হোসেন। তার মতো ওই সিন্ডিকেটের বাকি সদস্যদের বিরুদ্ধেও ভিন্নমতাবলম্বন এবং ছাত্রজীবনে শিবির সম্পৃক্ততা ও বিশেষ সুবিধা নিয়ে অধ্যাপক হওয়ার অভিযোগ আছে।