নিজস্ব প্রতিবেদক, সিটিজেন নিউজ: সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদ মৃত কি না সে বিষয়ে জানাতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শরীফ এ এম রেজা জাকের রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট ও বনানী থানাকে এই প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন।
অন্যদিকে এই হত্যা মামলার অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদন সোমবারও দাখিল করা হয়নি। সিআইডি পুলিশ অধিকতর তদন্ত করছে। আদালত অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদন ও এরশাদের মৃত্যুসংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২ অক্টোবর দিন ধার্য করেন।
সোমবার মামলার শুনানি চলাকালে আইনজীবীরা জানান, এই মামলার আসামি সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদ গত ১৪ জুলাই তিনি সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ইন্তেকাল করেছেন। তাঁকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হোক। আদালত বিধি অনুযায়ী ক্যান্টনমেন্ট ও বনানী থানাকে প্রতিবেদন দিতে বলেন।
পুরান ঢাকার সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে স্থাপিত বিশেষ এজলাসে এই মামলার শুনানি চলছে। মামলার বিচারের শেষ পর্যায়ে ২০১৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপক্ষের তৎকালীন আইনজীবী আসাদুজ্জামান খান রচি মামলাটি অধিকতর তদন্তের আবেদন করেন। এই ঘটনার সঠিক তদন্ত হয়নি উল্লেখ করে অধিকতর তদন্ত চাওয়া হয়। আদালত সিআইডিকে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন। গত পাঁচ বছর ধরে অধিকতর তদন্ত চললেও ওই তদন্ত শেষ করতে পারেনি তদন্ত সংস্থা।
১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামে এক সেনা অভ্যুত্থানে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হন। তখন চট্টগ্রামে অবস্থিত সেনাবাহিনীর ২৪তম পদাতিক ডিভিশনের জেনারেল অফিসার স্টাফ (জিওসি) ছিলেন মেজর জেনারেল আবুল মঞ্জুর। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর আত্মগোপনে যাওয়ার পথে মঞ্জুরকে আটক করে পুলিশ। এরপর ওই বছরের ২ জুন তাকে পুলিশ হেফাজত থেকে চট্টগ্রাম সেনানিবাসে নিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ও মৃত্যুর সনদপত্র পেতে দেরি হওয়ায় ঘটনার ১৪ বছর পর ১৯৯৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি মঞ্জুরের ভাই ব্যারিস্টার আবুল মনসুর আহমেদ চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায় একটি মামলা করেন। ১৯৯৫ সালের ২৭ জুন এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির তৎকালীন সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল কাহার আকন্দ সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদসহ পাঁচজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন।
অন্য আসামিরা হলেন, মেজর (অব.) কাজী এমদাদুল হক ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মোস্তফা কামাল উদ্দিন ভূইঞা, মেজর জেনারেল (অব.) আবদুল লতিফ ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) শামসুর রহমান শমসের।
২০১৪ সালের ২২ জানুয়ারি মামলার প্রসিকিউশন সমাপ্ত ঘোষণা করে ওই বছর ১০ ফেব্রুয়ারি আলোচিত মামলাটির রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন। মামলায় মোট ৪৯ সাক্ষীর মধ্যে ২৮ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। এরপর মামলায় অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়।