নিজস্ব প্রতিবেদক,সিটিজেন নিউজ: টেকসই এবং গ্রিন ব্যাংকিং কার্যক্রম ত্বরান্বিত করতে সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। এ জন্য অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং পরিবেশ– এ তিন ক্ষেত্রেই যথাযথ অগ্রগতি সাধন করতে হবে। তা সম্ভব হবে ব্যাংক খাতে সুশাসন, নেতৃত্ব এবং সামাজিক দায়বদ্ধতা নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) অডিটোরিয়ামে ‘সাসটেইনেবল ব্যাংকিং অ্যাক্টিভিটিস অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক বার্ষিক পর্যালোচনা কর্মশালায় উত্থাপিত গবেষণা প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আগামী দিনে টেকসই ব্যাংকিংয়ের আওতায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, জীববৈচিত্র্য, শস্যগুদাম ঋণ এবং গ্রিন ট্রান্সপোর্টেশন খাতে অর্থায়ন গুরুত্ব পাবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এবং বিআইবিএম নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান এস এম মনিরুজ্জামান। উপস্থিত ছিলেন পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমদ চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক এবং বিআইবিএমের সাবেক সুপারনিউমারারি অধ্যাপক ইয়াছিন আলি, প্রাইম ব্যাংক লিমিটেডের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. তৌহিদুল আলম খান, ব্যাংক এশিয়া লিমিটেডের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোহাম্মদ জিয়াউল হাসান মোল্লা, বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক খোন্দকার মোর্শেদ মিল্লাত এবং বিআইবিএমের অধ্যাপক মো. নেহাল আহমেদ।
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএমের ড. মোজাফফর আহমদ চেয়ার প্রফেসর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. বরকত-এ-খোদা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক এবং বিআইবিএমের মহাপরিচালক মহা. নাজিমুদ্দিন।
কর্মশালায় গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের অধ্যাপক এবং পরিচালক (প্রশিক্ষণ) ড. শাহ মো. আহসান হাবীব। ছয় সদস্যের গবেষণা দলে অন্যান্যের মধ্যে রয়েছেন- বিআইবিএমের অধ্যাপক মো. নেহাল আহমেদ, সহকারী অধ্যাপক রেক্সোনা ইয়াসমিন, বাংলাদেশ ব্যাংকের জেনারেল ম্যানেজার মো. আনোয়ারুল ইসলাম, খোন্দকার মোর্শেদ মিল্লাত এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্ম পরিচালক মোহামম্মদ আব্দুল্লাহ আল-মাসুম।
ডেপুটি গভর্নর মনিরুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক গত কয়েক বছর ধরে সাসটেইনেবল ব্যাংকিংয়ের জন্য কাজ করছে। মূলত গ্রিন ব্যাংকিং, কর্পোরেট সোস্যাল রেসপনসিবিলিটি (সিএসআর) এবং ইনক্লুসিভ ফ্যাইন্যান্সে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গ্রিন ব্যাংকিংয়ের উদ্যোগ ব্যাংকার এবং গ্রাহকদের মধ্যে পরিবেশের ঝুঁকি বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করেছে। গ্রিন ব্যাংকিংয়ে এখনও এগিয়ে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক। এসব ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সিএসআরের মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণ এবং দুর্যোগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেছে।
তিনি বলেন, বিআইবিএমের গবেষণায় টেকসই ব্যাংকিংয়ের বিষয়ে অনেক কিছু সুস্পষ্ট করেছে। একই সঙ্গে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু চিহ্নিত করেছে যা কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং ব্যাংকিং খাত সংশ্লিষ্টদের বিবেচনায় রাখতে হবে।
অধ্যাপক ড. বরকত-এ-খোদা বলেন, ব্যাংকিং খাতে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ আসছে। এ জন্য দক্ষ কর্মী গড়ে তোলা প্রয়োজন। ব্যাংক কর্মীদের প্রশিক্ষণের ওপর সর্বোচ্চ জোরারোপ করতে হবে। একই সঙ্গে টেকসই ব্যাংকিং কার্যক্রম জোরদার করতে হবে যাতে এসডিজি লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক হয়।
অধ্যাপক হেলাল আহমদ চৌধুরী বলেন, টেকসই ব্যাংকিং কার্যক্রমে সুশাসন নিশ্চিত জরুরি। পাশাপাশি এটি লাভজনক হয় সে বিষয়টি বিবেচনায় রাখতে হবে। এজন্য পণ্যে বৈচিত্রতা থাকতে হবে।
অধ্যাপক ইয়াছিন আলী বলেন, টেকসই ব্যাংকিংয়ের নামে কোনো অপচয় করা যাবে না। ব্যাংকিং টিকে থাকতে হলে অযাচিত পরিচালন ব্যয় কমাতে হবে। তিনি বলেন, এজেন্ট ব্যাংকিং এখন ব্যাংকিং খাতে টেকসই রূপ নিয়েছে।
ব্যাংক এশিয়ার ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোহাম্মদ জিয়াউল হাসান মোল্লা বলেন, অর্থনীতিতে টেকসই ব্যাংকিং খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বাংলাদেশের সব ধরনের বাণিজ্যিক ব্যাংককে বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে যাতে বিশ্বের কাছে একটি মডেল হয়ে থাকে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক খোন্দকার মোর্শেদ মিল্লাত বলেন, টেকসই ব্যাংকিং করার জন্য প্রথমে মানসিকতা তৈরি জরুরি।