নিজস্ব প্রতিবেদক,সিটিজেন নিউজ: অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় সাময়িক বরখাস্তকৃত পুলিশের বিতর্কিত উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমান ও তার ভাগনে কোতোয়ালি থানার এসআই মো. মাহমুদুল হাসানের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালতে তাদের আইনজীবী জামিনের আবেদন করেন। অন্যদিকে দুদকের আইনজীবী জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।
এর আগে ১ জুলাই হাইকোর্টে আগাম জামিনের জন্য গেলে ডিআইজি মিজানকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন হাইকোর্টের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ। এ সময় মিজানকে তাৎক্ষণিক হাইকোর্ট পুলিশের হাতে তুলে দেন আদালত। গ্রেফতারের পর তাকে শাহবাগ থানায় নেয়া হয়। পরদিন ডিআইজি মিজানের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত।
মিজানুর রহমান ঢাকা মহানগর পুলিশে (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বিয়ে গোপন করতে নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করে স্ত্রীকে গ্রেফতার করানোর অভিযোগ উঠেছিল তার বিরুদ্ধে। এ ছাড়া এক সংবাদ পাঠিকাকে প্রাণনাশের হুমকি ও উত্ত্যক্ত করার অভিযোগে মিজানুরের বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) হয়। নারী নির্যাতনের অভিযোগে গত বছরের জানুয়ারির শুরুর দিকে তাকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দফতরে সংযুক্ত করা হয়।
এরপর দুদক কর্মকর্তার সঙ্গে ঘুষ লেনদেনের বিষয়টি সামনে আসার পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মিজানকে সাময়িক বরখাস্তের একটি প্রস্তাব রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের জন্য পাঠায়। পরে ২৫ জুন মিজানুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করার প্রস্তাবে অনুমোদন দেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।
অন্যদিকে মিজানের ঘুষ লেনদেনের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে পুলিশ প্রশাসন। কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন। যদিও নারী নির্যাতন, ঘুষ প্রদান, অবৈধ সম্পদ অর্জনসহ নানা অপকর্মের অভিযোগে দুই বছর ধরে মিজানুরের নাম আলোচনায় এলেও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
২৪ জুন ৩ কোটি ৭ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন ও ৩ কোটি ২৮ লাখ টাকা অবৈধভাবে অর্জনের অভিযোগে মিজানুরের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। মামলায় মিজানুর রহমান, তার স্ত্রী সোহেলিয়া আনার রত্না, ছোট ভাই মাহবুবুর রহমান ও ভাগনে পুলিশের কোতোয়ালি থানার এসআই মো. মাহমুদুল হাসানকে আসামি করা হয়।