অনলাইন ডেস্ক, সিটিজেন নিউজ: নানা অভিযোগের পর এবার পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী ও ইবতেদায়ি পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন পদ্ধতি পরিবর্তন করা হয়েছে। এ বছর থেকে এক উপজেলার খাতা অন্য উপজেলায় মূল্যায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
সম্প্রতি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে এক সভায় এ বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়েছে।
আগামী ১৭ নভেম্বর পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী ও ইবতেদায়ি পরীক্ষা শুরু হতে যাচ্ছে। প্রথমে ইংরেজি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে গত ২৪ আগস্ট প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সভা করা হয়। সেখানে পরীক্ষার সময়সূচি তৈরি, প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও বিতরণ, নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষা, উত্তরপত্র মূল্যায়ন, পরীক্ষার ফি নির্ধারণসহ বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সভা সূত্রে জানা গেছে, নিজ উপজেলায় সমাপনী ও ইবতেদায়ি পরীক্ষার মূল্যায়ন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এতে উত্তরপত্র মূল্যায়নে কিছু অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে বলে সভায় উপস্থিত কর্মকর্তারা অভিযোগ তোলেন। তাই ২০১৭ সালের নিয়মে এক উপজেলার খাতা অন্য উপজেলায় মূল্যায়নের প্রস্তাব দেন তারা।
সভায় উপস্থিত কর্মকর্তারা বলেন, যে উপজেলায় পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন করা হবে সে উপজেলায় নম্বরপত্র টেবুলেশন করে সীল স্বাক্ষরসহ সংশ্লিষ্ট উপজেলায় প্রেরণ করা জরুরি। এতে কোনো অনিয়ম বা উত্তরপত্র মূল্যায়নে বিলম্ব হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হবে। যেসব বিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে সেসব বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কেন্দ্র সচিব হিসেবে দায়িত্বে থাকবেন। উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় বা অন্য কাউকে কেন্দ্র সচিব হিসেবে নিয়োগ প্রদান না করার জন্য প্রস্তাব করেন তারা।
তাদের এ প্রস্তাবের ভিত্তিতে এক উপজেলা বা থানার উত্তরপত্র পার্শ্ববর্তী উপজেলা বা থানার পরীক্ষক দ্বারা মূল্যায়ন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। মূল্যায়িত উত্তরপত্রের নম্বর মুদ্রণ করে টেবুলেশন শিট প্রস্তুত করে সীল স্বাক্ষরসহ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জেলায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
পাশাপাশি উত্তরপত্র মূল্যায়নের ক্ষেত্রে মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করতে বলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী জাকির হোসেন। এ বিষয়ে কোনো অবহেলা, বিলম্ব বা অনিয়ম পরিলক্ষিত হলে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। অভিযুক্তদের নাম প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের (ডিপিই) ওয়েবসাইটে প্রকাশের নির্দেশও দেয়া হয়। এটি বাস্তবায়নে ডিপিই ও মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডকে দায়িত্ব দেয়া হয়।
সভায় উপস্থিত প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বদরুল হাসান চৌধুরী বৃহস্পতিবার জাগো নিউজকে বলেন, নিজ উপজেলায় পঞ্চম শ্রেণির খাতা মূল্যায়ণের বিষয়ে নানা অভিযোগ থাকায় এ পদ্ধতি পরিবর্তন করা হয়েছে। তাই এবার এক উপজেলার খাতা অন্য উপজেলায় মূল্যায়ন করা হবে।
তিনি বলেন, মন্ত্রণালয়ে পরীক্ষার প্রস্তুতি সংক্রান্ত এক সভায় খাতা মূল্যায়নের বিষয়ে গত বছরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন মাঠ পর্যায়ে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা। সেসব অভিযোগের ভিত্তিতে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।