মো:মাসুদ পারভেজ : ট্রেনের ছাদে ভ্রমণ করা প্রায় নিয়মিত হয়ে গেছে আমাদের দেশে। এ অভ্যাস মারাত্মক হয়ে দেখা দেয় ঈদের আগে। দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ি ট্রেনের ছাদে চড়া আইন অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ হলেও এই দৃশ্য একেবারেই স্বাভাবিক। বিশেষত ঈদের আগে-পরে কিছু রুটে ট্রেনের ভেতরে যত তার চেয়ে ছাদে যাত্রীর সংখ্যা বেশি ছাড়া কম থাকে না।
শুধু যে টিকেট না পেয়ে ছাদে ওঠেন অনেক যাত্রী তা নয়, বিনা পয়সায় যাতায়াতের উদ্দেশ্যেও অনেকে জীবনের ঝুঁকি নেন। এ নিয়ে মাঝে মধ্যে দুর্ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন মহল থেকে উদ্বেগ প্রকাশ হয়েছে। তারপরও কখনই এই ছাদে চড়ে ভ্রমণ থামেনি।
কিন্তু রেল কর্তৃপক্ষ এখন বলছেন, তার আর ছাড় দেবেন না। ছাদে উঠলে কঠোরভাবে আইন প্রয়োগ করা হবে বলে রেল বিভাগের পক্ষ থেকে এক গণ-বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। আর এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে কিছু পদক্ষেপও নিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। যেমন, বড় স্টেশনগুলোতে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর (আরএনবি) উপস্থিতি বাড়ানো হচ্ছে।
রেল পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, ছাদে ওঠা সংক্রান্ত বিদ্যমান আইনটির সংশোধন করাও জরুরি কারণ এতে শাস্তির ব্যবস্থা নগণ্য।।বর্তমান আইন অনুযায়ী ট্রেনের ছাদে ওঠার শাস্তি ৫০ টাকা জরিমানা, যেটি ১৮৯০ সালের রেলওয়ে আইনে রয়েছে।
রেলওয়ে পুলিশের অনেক সদস্যই মনে করেন যে মাত্র ৫০ টাকা জরিমানার বিধান থাকলে ট্রেনের ছাদে ভ্রমণ করা থেকে মানুষকে নিরুৎসাহিত করা সম্ভব হবে না। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বিদ্যমান আইন সংশোধন করে সময়োপযোগী করার কাজ করছেন। কনসাল্টেন্ট এবং আইনজ্ঞ নিয়োগ দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। তা হলেই আইন সংশোধনের কাজ শুরু করা হবে।তবে আমরা এখন থেকেই চেষ্টা করবো যেন মানুষের অভ্যাস পরিবর্তন হয়, তারা যেন টিকিট ছাড়া স্টেশনে না ঢোকে এবং ছাদে না ওঠে।
নানাধরনের প্রস্তুতি থাকলেও রেলওয়ে পুলিশের কয়েকজন সদস্যের সাথে কথা বলে জানা যায় ছাদে ওঠা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে প্রধান প্রতিবন্ধকতা হতে পারে লোকবলের সঙ্কট। সেই সাথে লঘুদণ্ডের কথাও বলেছেনে রেল পুলিশের বেশ ক’জন। তাঁরা বলছেন, এই আইন বাস্তবায়ন সম্ভব, তবে প্রক্রিয়াটি সময়সাপেক্ষ হতে পারে। অনেক সময়ই দেখা যায় ট্রেনের ভেতরে জায়গা থাকলেও মানুষ ছাদে উঠে বসে আছে। মানুষের অভ্যাসের পরিবর্তনের চেষ্টা করাটাই মূল চ্যালেঞ্জ।