নিজস্ব প্রতিবেদক: বৈশ্বিক মহামারি করোনার আকালে রাজধানীর তুরাগের গরীব মানুষের উপর প্রভাব পড়েছে সব চেয়ে বেশি। অনেক বেশি নিম্ন আয়ের মানুষের বসবাসের কারণে এখানের হাহাকারটা অন্য অনেক এলাকা থেকে তুলনামুলকভাবে বেশি। তাই পিতা কাউন্সিলরের পক্ষে সব মানুষের খাদ্যের আনজাম দেওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছিল। সরকারি অনুদানের পাশাপাশি ব্যাক্তি উদ্যোগে কাউন্সিলরের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী যোগান দেওয়া হলেও অনেক মানুষের ঘর থেকে খাদ্যের জন্য মৃদু কান্না ভেসে আসছিল। ঠিক এই সময়ে নিজেদের সাধ্যের সবটুকু দিয়েই মানুষের পাশে দাঁড়াতে দেখা গেছে, ৫৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দিনের ছেলে সফিকুল ইসলাম স্বপন ও তারই আপন চাচাত ভাই সাদেকুর রহমানকে।
স্বপনের কোনও রাজনৈতিক পরিচয় না থাকলেও ছোট ভাই সাদেক তুরাগ থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি। ব্যক্তিগত তহবিল থেকে এ দুই ভাইয়ের অনুদান এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি। যার বাস্তবতা ইতোমধ্যে সবাই প্রতক্ষ্য করেছে।
করোনা মহামারির শুরু থেকেই সফিকুল ইসলাম স্বপন প্রায় ২ হাজার পরিবারের মাঝে খাদ্যে সামগ্রী নিয়ে এগিয়ে গেছেন। খাদ্যে সহযোগীতার বিষয়ে জানতে চাইলে স্বপন বলেন, আমি প্রচার-প্রচারণার জন্য এগুলো করি না। ছোট বেলা থেকেই গরীব দুঃখীদের পাশে থাকার চেষ্ঠা করি, আর এটা করি আল্লাহর রাজি-খুশির জন্য। এটা করে আমি তৃপ্তি পাই। পর পর দুই বার বাবা নির্বাচন করায় হাতের অবস্থা এমনিতেই ভালো ছিলনা, তারপর হঠাৎ করেই করোনার এ থাবায় জনজীবন একেবারেই অচল। এ অবস্থায় সাধ্যের যতটুকু সম্ভব হয়েছে তার সবটাই করেছি। তাছাড়া প্রতিবছর রমজানের সময় আমি মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করি। আল্লাহর ইচ্ছায় আমি এ কাজ করে যাবো।
অপর ভাই সাদেকুর রহমান তুরাগ থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি, তিনিও বৈশ্বিক এ মাহারিতে পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে গরীব মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তিনি নিজের ব্যক্তিগত উদ্যেগ ও যুব কল্যাণ সোসাইটির সভাপতি হিসেবে অনেকের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী দিয়েছেন। ছির্নমূল এসব মানুষকে সহায়তা দিয়ে সাদেক এরই মাঝে নিজের ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক ইমেজ উজ্জ্বলভাবেই তুলে ধরেছেন। ত্রাণের নামে ফটোবাজির রাজনীতি যেখানে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে, সেই বদনামের বিপরীতে দাঁড়িয়ে তুরাগ থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিটি সদস্য জীবনবাজি রেখে সামাজিক দূরত্ব মানাতে সুশৃংখল ভাবে মাস খানেক থেকে কাজ করে যাচ্ছেন। তুরাগ থানার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের শারীরিক অবস্থার খোঁজ খবর নেওয়াসহ কোয়ারেন্টাইনে থাকার নিয়ম কানুন বুঝিয়েছেন মাঠে থেকে। ইতোমধ্যে তুরাগ থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের পক্ষ থেকে করোনাভাইরাস সর্ম্পকিত নিয়মকানুন সম্বলিত লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে মানুষের মধ্যে ।
এ বিষয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আলহাজ মোঃ সাদেকুর রহমান সাদেক বলেন, আমরা তুরাগ থানা আওয়ামী- স্বেচ্ছাসেবক লীগের সকল নেতা কর্মীরা নিয়োজিত রয়েছি তুরাগবাসীর কল্যাণে। এলাকাবাসীর মধ্যে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও মাস্ক বিতরণ করেছি। নিয়মিত খোঁজ-খবর নেওয়ার কাজ করে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে এলাকার অসহায় দুঃস্থদের মাঝে কয়েক দফায় খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছি। বিতরণকৃত খাদ্য সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে চাল, ডাল, আলু, পেঁয়াজ, লবন, তেল ইত্যাদি ।
রাজনীতির বাইরেও এই দুই ভাই জড়িয়ে আছেন ধর্মীয় অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে। দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ রাজউক কলেজ থেকে পড়াশোনা করা কাউন্সিলর পূত্র স্বপন তুরাগের দারুল উসমানিয়া এতিমখানায় প্রায় শতাধিক এতিমের দেখবালে দায়িত্ব পালন করছেন। অপর দিকে নয়া নগর নেসারিয়া মাদ্রাসার গর্ভনিং বডির সভাপতির দায়িত্ব নিয়েছেন সাদেকুর রহমান। তারা দুইজনেই প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই প্রতিষ্ঠান দুটির সাথে জড়িত থেকে অনেক দান খয়রাতও করে যাচ্ছেন। যা তুরাগের মতো এলাকায় প্রায় বিরল। নিজের পৈত্রিক সম্পতির উপর গড়ে তোলা প্রতিষ্ঠান দুটি এরই মাঝে ব্যাপক সুনামও অর্জন করেছে।