হাফসা : বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের উপর প্রকাশ্যে হামলা চালানো যুবলীগ নেতা শারফুল ইসলাম প্রভাব শালীদের ম্যানেজ করে প্রকাশ্য ঘুরে বেড়ানোর অভিযোগ উঠেছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, তিনি খুনি হাসিনার আমলে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে অবৈধ সম্পদের মালিক বনে গেছেন। গ্রেফতার এড়াতে টাকার বিনিময়ে সব কিছু ম্যানেজ করে চলছেন তিনি।
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা যুবলীগ নেতা মোঃ সারফুল ইসলাম-এর বিরুদ্ধে অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠেছে। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তিনি একাধিক বাড়ি, গাড়ি এবং ফ্ল্যাটের মালিক হয়েছেন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। যদিও তার নামে কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান নেই, তবু তিনি নিজেকে শিল্পপতি হিসেবে দাবি করে থাকেন এবং নির্বিঘ্নে দেশ-বিদেশে যাতায়াত করছেন।
সারফুল ইসলাম বর্তমানে
শ্রীপুর উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার নেতৃত্ব ও অর্থায়নে ঢাকার বিভিন্ন এলকায় আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
তিনি কাওরাইদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হিসেবেও প্রচার চালাচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে যে, তিনি ক্ষমতার পালাবদলের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতার ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন এবং তাদের প্রভাব খাটিয়ে এলাকায় চলছেন। জানা যায়, তিনি প্রথমে গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন সবুজ-এর ‘হাতিয়ার’ হিসেবে কাজ করেছেন, এরপর সাবেক সংসদ সদস্য রুমানা আলী টুসি এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল বিএ-এর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। সর্বশেষ তিনি আলহাজ্ব জামিল হাসান দুর্জয়-এর হয়ে মাঠে কাজ করেন।
শারফুল এলাকায় ‘পল্টিবাজ নেতা’ হিসেবে পরিচিত। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির সিন্ডিকেট পরিচালনা, সরকারি খাস জমি দখল এবং ভূমিদস্যুতার অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যেও অনেকেই তার এই ‘পল্টিবাজ’ আচরণের জন্য তাকে পছন্দ করতেন না।
সারফুল ইসলামের নামে কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান না থাকলেও, তার বিপুল পরিমাণ সম্পদের উৎস নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তিনি ঢাকার উত্তরায় একাধিক ফ্ল্যাট এবং ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে জয়নাবাজার মাষ্টারবাড়ী এলাকায় কয়েক কোটি টাকা মূল্যের একাধিক বাড়ির মালিক। এছাড়াও, তার নামে- বেনামে বিভিন্ন স্থানে কোটি কোটি টাকার জমি রয়েছে। নিজ গ্রামের মানুষকে জিম্মি করে জমি দখল এবং মারামারির অভিযোগও তার বিরুদ্ধে আছে।
তার বিরুদ্ধে এত অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও কোনো থানায় মামলা নেই। স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরাও বিস্মিত হয়েছেন যে, এত টাকা ও প্রভাবের কারণে তার বিরুদ্ধে পুলিশ বা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। অভিযোগ উঠেছে যে, তার কোটি কোটি টাকার সম্পদ রক্ষা করতে তিনি সবকিছু ‘ম্যানেজ’ করে চলেছেন।
এলাকাবাসী সারফুল ইসলামের বিপুল অবৈধ সম্পদ থাকায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)-এর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে না পারায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন। তারা প্রশ্ন তুলেছেন যে, দলীয় প্রভাব খাটিয়ে এত কিছু করার পরও তার বিরুদ্ধে কেন থানায় কোনো মামলা হয়নি। তারা দ্রুত তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং তাকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অবৈধ সম্পদের পাহাড়, ফ্ল্যাট, বাড়ী গাড়ী এ সব বিষয়ে শারফুল ইসলামের মুঠো ফোনে জানতে চাইলে তিনি জানান,উত্তরাতে তার ফ্ল্যাট রয়েছে। জৈনা বাজার মাষ্টারবাড়ীতে ও একাধিক বাড়ী রয়েছে। তার কোন শিল্প প্রতিষ্ঠান আছে কিনা এবং আয়ের উৎস জানতে চাইলে তিনি সদুত্তর দিতে পারেন নি। শারফুলের বিরুদ্ধে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র হত্যা মামলা ও গ্রেফতার না হওয়ার কারণ জানতে শ্রূপুর থানার অফিসার ইনচার্জকে মুঠো ফোনে কয়েকবার ফোন দিয়ে ও পাওয়া যায় নি।