বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ৭ জনের নামে চাঁদপুর আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। চলতি বছরের ২ এপ্রিল চাঁদপুর সদর উপজেলার নানুপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জেলা বিএনপির সম্মেলনের ফলাফল বাতিল ও পুনঃনির্বাচন ঘোষণার আদেশ চেয়ে এই মামলা দায়ের করা হয়।
মঙ্গলবার (২৩ আগষ্ট) বিকেলে চাঁদপুর সদর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. রাফিউস সাহাদাত ওয়াসীম পাটওয়ারী।
মামলায় আসামীরা হলেন- বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. সলিমুল্লাহ সেলিম, সম্মেলনের নির্বাচন কমিশনার অ্যাডভোকেট মোঃ শামছুল ইসলাম মন্টু, বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ মোস্তাক মিয়া ও বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সাইদুল হক সাইদ।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, মামলার বাদী ৩নং বিবাদী সম্মেলনের নির্বাচন কমিশনার অ্যাড. মোঃ শামছুল ইসলাম মন্টু কর্তৃক প্রচারিত ফলাফল এবং কথিত বিজয়ী ১ ও ২নং বিবাদী সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক রুপে গৃহীত সকল কার্যক্রমের উপর স্থগিতাদেশ চান।
বাদী মামলার বিবরণে উল্লেখ করেন, ৪নং বিবাদী চাঁদপুর জেলা বিএনপির ১৫১ সদস্য বিশিষ্ট নির্বাচিত কমিটি ভেঙে ৩ মাসের মধ্যে কাউন্সিলরের মাধ্যমে কমিটি গঠনের শর্তে ২০১৪ সালের ১২ ডিসেম্বর পদলোভী, কতৃত্ববাদী, বিএনপির গঠনতন্ত্রের নিয়ম কানুনের প্রতি অশ্রদ্ধাশীল, ক্ষমতালিপ্সু ১নং বিবাদী শেখ ফরিদ আহমেদ মানিককে আহবায়ক এবং ২নং বিবাদী অ্যাড. মো. সলিমুল্লাহ সেলিমকে ১নং যুগ্ম আহবায়ক করে ৩১জনের নাম উল্লেখ পূর্বক ৭১ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি অনুমোদন দেন। বিএনপির দলীয় গঠনতন্ত্র মোতাবেক উক্ত আহবায়ক কমিটির মেয়াদ ২০১৫ সালের ১২ মার্চ উত্তীর্ণ হয়। বর্ণিত সকল বিবাদীগণ দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে বিএনপির গঠনতন্ত্রের ধারা-৬ (উপধারা-খ-৭) মতে চাঁদপুর জেলা বিএনপির মেয়াদ উত্তীর্ণ আহবায়ক কমিটি ভেঙে নতুন কমিটি করার কথা থাকা সত্ত্বেও ৪-৭নং বিবাদীগণের যোগসাজসে ১নং বিবাদীকে অবৈধ সুবিধা দেওয়ার উদ্দেশ্যে চাঁদপুর জেলা বিএনপির উক্ত আহবায়ক কমিটি কর্তৃক বিগত ৮ বছর যাবত অবৈধভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। সে মতে ১-২নং বিবাদীর নেতৃত্বে চাঁদপুর জেলা বিএনপির মেয়াদ উত্তীর্ণ আহবায়ক কমিটির কথিত সকল কার্যক্রম বিএনপির গঠনতন্ত্রের ধারা-৬, উপধারা (খ-৭) (পাতা-২৪, ২৭, ২৮) মতে অবৈধ এবং সে মতে উক্ত কমিটির প্রণীত সকল সিদ্ধান্ত ও কার্যক্রম আইনত বাতিলযোগ্য।
এছাড়াও মামলার বাদী, উল্লেখিত বিবাদীদের গঠনতন্ত্র বিরোধী সকল কার্যক্রম বিস্তারিত মামলার বিবরণ উল্লেখ করেন।
বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সেলিম মিয়া জানান, বাদীর মৌখিক বক্তব্যের আলোকে অভিযোগগুলো লিপিবদ্ধ হয়। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে চলতি বছরের ২ এপ্রিল জেলা বিএনপির সম্মলনে ১,৫১৫ জন কাউন্সিলর ছিলেন। এর মধ্যে ৯৮২ জন ভোট প্রয়োগ করলেও ৮০৪জন ভোট দেওয়ার সুযোগ পাননি। যে কারণে বাদী পুরো সম্মেলন বাতিল চান। মামলাটি আদেশের জন্য আগামী ২১ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত।