জুলাই মাদরাসা রেজিস্ট্যান্স দিবস উপলক্ষে উত্তরায় বিক্ষোভ
হাফসা : ‘জুলাই মাদরাসা রেজিস্ট্যান্স দিবস’ উপলক্ষে রাজধানীর উত্তরা এলাকায় ব্যাপক বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে “জুলাই মাদরাসা ছাত্র পরিষদ”।
আজ ২১শে জুলাই সকাল ১১টা থেকে উত্তরা বিএনএস সেন্টার প্রাঙ্গণে জড়ো হতে থাকে শত শত মাদরাসা শিক্ষার্থী। পরবর্তীতে তারা একটি শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উত্তরার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
গত বছর এই দিনে ২০২৪ সালে ঘটে যাওয়া ঐতিহাসিক ছাত্র আন্দোলনে মাদরাসা শিক্ষার্থীদের সাহসিক অংশগ্রহণ ও বলিষ্ঠ ভূমিকার স্মরণে প্রতিবছর এই দিবসটি পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারও এই অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২১ জুলাইকে ‘মাদরাসা রেজিস্ট্যান্স দিবস’ হিসেবে পালন করছে।
জুলাই মাদরাসা ছাত্র পরিষদ-এর মুখপাত্র আব্দুল্লাহ ইকবালের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির আহবায়ক আরাফাত নুর।
এসময় বক্তব্য রাখেন, জুলাই মাদরাসা ছাত্র পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান কাউসার, সদস্য সচিব আব্দুল আহাদ, প্রধান সমন্বয়ক রিজওয়ান নাবিল, কেন্দ্রীয় সংগঠক শেখ মাহবুব, তোফাজ্জল হোসেন, আনোয়ার মাহমুদ ও জামিয়া মাহমুদিয়া প্রতিনিধি মুশাহিদুল ইসলাম।
এসময় বক্তারা বলেন, “আমরা গর্বিত, কারণ যেদিন চারপাশ থমকে গিয়েছিলো, সেদিন আমরা কথা বলেছিলাম। শুধু জামা আর টুপি নয়—আমাদের বুকের ভেতরে ছিল আগুন। সেই আগুনই ছিল চব্বিশের আন্দোলনের জ্বালানি।”
তারা আরও বলেন, “এটা কেবল একটি দিবস নয়, এটা আমাদের আত্মত্যাগ, মানবিকতা আর সাহসিকতার প্রতীক। আমরা কোনো রাজনৈতিক স্বার্থে মাঠে নামিনি, আমরা নেমেছিলাম ইনসাফ ও মুক্তির পক্ষে।”
এ সময় সরকারের কড়া সমালোচনা করে চারটি দাবিও পেশ করা হয়-
১/ জুলাই গণহত্যার বিচার
২/ জুলাই ঘোষণাপত্রে মাদরাসা শিক্ষার্থীদের অবদানের স্পষ্ট স্বীকৃতি।
৩/ কওমি সনদের কার্যকরীতা ও বাস্তবায়ন
৪/ ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় স্থাপনের অনুমতি বাতিল করতে হবে
এই কর্মসূচিতে অংশ নেন উত্তরার বিভিন্ন কওমি মাদরাসার শিক্ষার্থীবৃন্দ। পরে তারা শহীদদের স্মরণে বিশেষ দোয়া পরিচালনা করেন।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে উদ্ভূত এক গণঅভ্যুত্থানে মাদরাসা ছাত্ররা নির্ভীকভাবে অংশ নেন। ঢাকার উত্তরাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বুলেটের সামনে দাঁড়িয়ে তারা প্রমাণ করে, মাদরাসার ছাত্র মানেই নিঃসঙ্গ নয়—বরং গণমানুষের স্বার্থে দাঁড়াতে সক্ষম এক সাহসী শক্তি।
আজকের এই কর্মসূচি একটি বার্তাই পৌঁছে দিয়েছে—মানবিকতা, ইনসাফ ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় মাদরাসা ছাত্ররা কখনো পেছনে থাকে না।