নারায়ণগঞ্জে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে লকডাউন বাস্তবায়নের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি দুস্থ মানুষকে খাদ্য সহায়তা দেয়া শুরু করেছে সেনাবাহিনী।
রোববার সদর উপজেলার ফতুল্লা থানার কুতুবপুর ইউনিয়নের লামাপাড়া এলাকা থেকে এ সেবা কার্যক্রম শুরু করেন তারা।
এতে করে সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জনের পাশাপাশি তাদের সঙ্গে সৃষ্টি হচ্ছে আন্তরিকতা ও হৃদ্যতার সম্পর্ক। সেনা কর্মকর্তারা বলছেন, মানুষকে ঘরে রাখার ব্যাপারে সচেতন করার পাশাপাশি তাদের খাদ্য সংকট দূর করতেই সেনাবাহিনীর এ প্রচেষ্টা।
সেনা কর্মকর্তারা জানান, আইইডিসিআর নারায়ণগঞ্জকে রেডজোন হিসেবে চিহ্নিত করলে গত ২৪ মার্চ থেকেই জেলায় মাঠে নামে সেনাবাহিনী।
পরে ৭ এপ্রিল রাতে সরকার পুরো জেলাকে লকডাউন ঘোষণা করলে সেনা কার্যক্রম আরও জোরদার করা হয়। টহল কার্যক্রমসহ করোনার ভয়াবহতার ব্যাপারে বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও মাস্ক বিতরণও করেন তারা।
তবে লকডাউন পরিস্থিতিতে ঘরবন্দি মানুষের খাদ্য সংকটের বিষয়টি উপলব্ধি করে হতদরিদ্র মানুষকে খাদ্য সহায়তা প্রদানের উদ্যোগ নেন।
এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে ফতুল্লার লামাপাড়া এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে ১০ কেজি চাল, ৫ কেজি ডাল, সমপরিমাণ তেল, আলু, পেঁয়াজ ও সাবানসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন সামগ্রীর একটি করে প্যাকেট তুলে দেন কর্মহীন অসহায় পরিবারের মানুষের হাতে। পাশাপাশি সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ যার যার ঘরে থাকতে অনুরোধও করেন সেনা কর্মকর্তারা।
সেনাবাহিনীর এই কাজে সহযোগিতা করেন কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মনিরুল আলম সেন্টুসহ এলাকার কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবক।
এ পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি কোনো ধরনের সহযোগিতা না পেয়ে অনাহারে এবং হতাশায় জীবনযাপন করছিলেন কুতুবপুর এলাকার নিম্নআয়ের পরিবারগুলো।
সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে প্রথমবারের মতো তারা সহায়তা পেলেন। এই খাদ্য সহায়তা পেয়ে অনেকটা স্বস্তি পেয়ে দুশ্চিন্তামুক্ত হওয়ার কথা জানান অসহায় মানুষগুলো।
সেনাবাহিনীর ৪৫ এমএলআরএসের ভারপ্রাপ্ত উপঅধিনায়ক মেজর আহসানউজ্জামান জানান, নারায়ণগঞ্জে এখন পর্যন্ত কোনো কোনো এলাকায় ত্রাণ বা খাদ্য সহযোগিতা পৌঁছায়নি- সে বিষয়ে তারা খোঁজখবর নিচ্ছেন এবং তথ্য সংগ্রহ করছেন।
সেই আলোকে সোমবার থেকে কুতুবপুর এলাকার একেবারেই নিম্নআয়ের মানুষের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী নিজেরাই পৌঁছে দিয়েছেন। এতে করে একেকটি পরিবারের অন্তত ১৫ থেকে ২০ দিনের খাবারের চাহিদা পূরণ হবে বলে তিনি মনে করেন।
পর্যায়ক্রমে জেলার অন্য এলাকাতেও দুস্থদের মধ্যে এই খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হবে বলেও জানান সেনাবাহিনীর ওই কর্মকর্তা।