শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ১১:২৯ অপরাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান
সংবাদ শিরোনাম ::
“আইপি টিভি মুভি বাংলার সিভিল টিমের নামে দেশজুড়ে চাঁদাবাজি ও প্রায় ডজন খানেক মামলার আসামী কৌশিক গংদের গ্রেফতারের দাবীতে” সংবাদ সম্মেলন কেন্দ্রীয় বাফা বুলবুল একাডেমী নববর্ষ উদযাপন বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে কুমিল্লা পেশাজীবি সাংবাদিক ইউনিয়নের উদ্যোগে আলোচনা সভা কুমিল্লায় ৯ বছরের শিশু ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার জড়িত ঘাতক গ্রেপ্তার আসছে ‘বাহুবলি: ক্রাউন অব ব্লাড’ বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে সিরিজে ম্যাচ অফিসিয়াল যারা চট্টগ্রামে ‘স্বস্তির’ এক পশলা বৃষ্টি অটোরিকশা চার্জে দিতেই প্রাণ গেল যুবকের আজ ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস, নদীবন্দরে সতর্ক সংকেত দেশের গণমাধ্যমে ৩ গুণ বেড়েছে ভুয়া খবর

ফরীদি ভাই এখন সাদা-কালো: ফারুক আহমেদ

  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ২৯ মে, ২০২০
  • ১৮৫ বার পঠিত

বিনোদন প্রতিবেদক : হুমায়ুন ফরীদি নান্দনিক অভিনয় নৈপুণ্যে হয়ে উঠেছিলেন ভার্সেটাইল অভিনয়শিল্পী। মঞ্চ থেকে টিভি। টিভি থেকে বড় পর্দা। কোথায় তার স্পর্শ নেই। যেখানেই পা রেখেছেন সেখানেই তিনি মুঠো মুঠো মুক্তা ছড়িয়েছেন। যার কারণে আজও তিনি ঔজ্জ্বল। ২০১২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি না ফেরার দেশে চলে যান হুমায়ুন ফরীদি। ১৯৫২ সালের ২৯ মে ঢাকার নারিন্দায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। আজ এ অভিনেতার ৬৮তম জন্মবার্ষিকী। বিশেষ এই দিনে তাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেছেন জনপ্রিয় অভিনেতা ফারুক আহমেদ।

ফারুক আহমেদ স্মতিচারণ করে তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দীর্ঘ একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের স্মৃতি স্মরণ করে তিনি লিখেন—আশির দশকের কথা। সদ্য জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছি। সকালে ক্লাস। বন্ধুদের নিয়ে ক্যান্টিনে নাস্তা করছি। নাস্তা শেষে ক্লাসে ঢুকবো। এমন সময় দেখি হুমায়ুন ফরীদি। দলবল নিয়ে ক্যান্টিনে ঢুকলেন। আমাদের একটু দূরে বড় একটা টেবিল পাতা। তার চারপাশে ১০/১২টা খালি চেয়ার। সবাই টেবিল ঘিরে বসে পড়লেন। একজন ক্যান্টিন বয়কে ডেকে নাস্তা দিতে বললেন। তারপর শুরু হলো আড্ডা। ফরীদি ভাই তখনো টেলিভিশনের নাটক তেমনভাবে শুরু করেন নাই। কিন্ত তখন তিনি মঞ্চ নাটকের সুপারস্টার। এর কয়েকদিন আগে আমি মহিলা সমিতি মঞ্চে ফরীদি ভাইয়ের অভিনয় দেখেছি নাট্যাচার্য সেলিম আল দীনের লেখা এবং নাসির উদ্দীন ইউসুফের নির্দেশিত ‘শকুন্তলা’ নাটকে। তক্ষকের চরিত্রে কী তার অসাধারণ অভিনয়। তক্ষকের সেই বিকট হাসিতে মনে হচ্ছিল মহিলা সমিতির পলেস্তারা খসে পড়বে। আমি সেদিন অবাক বিস্ময়ে তার অভিনয় দেখে ভাবছিলাম, এত ভালো অভিনয় করা একজন মানুষের পক্ষে কীভাবে সম্ভব!

বিশ্ববিদ্যালয়ের আড্ডার স্মৃতি নিয়ে বলতে শুরু করেছিলেন ফারুক আহমেদ। কিন্তু হুমায়ুন ফরীদির অভিনয়ের মুগ্ধতা তাকে নিয়ে যায় অন্য স্মৃতিতে। তাই আবারো বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মৃতি নিয়ে ফারুক লিখেন—আগের প্রসঙ্গে আসি। ফরীদি ভাইদের আড্ডা তখন তুঙ্গে। সবাই কথা বলছেন, নাস্তা খাচ্ছেন। মাঝে মাঝে শোনা যাচ্ছে, ফরীদি ভাইয়ের অট্টহাসি। আমি নাস্তা খাওয়ার ফাঁকে ফাঁকে ফরীদি ভাইকে দেখছি। হঠাৎ দেখি দূর থেকে তিনিও আমাকে দেখছেন। কি যেন ভাবছেন। তারপর আমাকে হাত ঈশারায় ডাকলেন। আমি হতভম্ব হয়ে তার দিকে তাকিয়ে রইলাম। তিনি আবার আমাকে ডাকলেন। আমি চেয়ার থেকে উঠে তার পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম। আমার মাথায় তখন লম্বা ঝাঁকড়া চুল। আমার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে তিনি বললেন, এত বড় চুল রেখেছো কেন? আমি কি উত্তর দিব বুঝতে পারছিলাম না। হঠাৎ মুখ থেকে বের হয়ে গেল, ভালো লাগে তাই। আপনার মাথায়ও তো লম্বা চুল। তিনি মাথায় হাত দিয়ে বললেন, ও তাইতো! আমিতো ভুলেই গিয়েছিলাম। তারপর তার অট্টহাসি। আমি চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলাম। হাসি থামিয়ে তিনি বললেন, তোমার সাথে মজা করলাম। তুমি কোন ডিপার্টমেন্টে ভর্তি হয়েছো? আমি বললাম, জিওগ্রাফি ডিপার্টমেন্টে। তিনি বললেন, শোন জিওগ্রাফি পড়ার দরকার নাই। তুমি আমার ইকোনোমিক্স ডিপার্টমেন্টে চলে আসো। আমি বললাম, এখনতো ডিপার্টমেন্ট চেঞ্জ করার সুযোগ নাই। তিনি বললেন, ও তাই নাকি? আমি বললাম, জ্বি। তিনি কৃএিম আফসোসের সুরে বললেন, ওহহো! তাইলেতো মুসিবত। তারপর একটু চিন্তা করে বললেন, তুমি অভিনয় করবা? আমি আকাশ থেকে পড়লাম। কি উত্তর দিবো বুঝতে পারছি না। হঠাৎ মুখ থেকে বেরিয়ে গেল, সুযোগ পেলে করব। তিনি আমাকে বললেন, ঠিক আছে। তুমি আমার সাথে যোগাযোগ করো। ‘জ্বি’ বলে আমি আমার চেয়ারে গিয়ে বসলাম। এটা ছিলো ফরীদি ভাইয়ের সাথে আমার প্রথম পরিচয়ের দিন।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন জাকসুর নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন হুমায়ুন ফরীদি। তা জানিয়ে এ অভিনেতা লিখেন—পরের বছর জাকসুর ইলেকশন। ফরীদি ভাই নাট্য সম্পাদক পদে দাঁড়ালেন এবং বিপুল ভোটে পাশ করে হলেন কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের নির্বাচিত নাট্য সম্পাদক। তিনি জাকসু থেকে নাটকের উপর একটা ওয়ার্কশপের আয়োজন করলেন। সেই ওয়ার্কশপে আমার কাজ করার সুযোগ হলো। আর তখন থেকেই আমার অভিনয় জীবনের যাত্রা শুরু। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফরীদি ভাই পাশ করে চলে গেলেন। আমিও বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়লাম ফরীদি ভাই যাওয়ার ৩ বছর পর। আবার ঢাকা থিয়েটারে একসঙ্গে এক যুগেরও বেশি। কত কথা, কত স্মৃতি তার সঙ্গে। সেসব স্মৃতিকথা অন্য এক সময় বলা যাবে। আজ ফরীদি ভাইয়ের জন্মদিবস। জন্মদিবসে এই মহান শিল্পীকে শ্রদ্ধা। ফরীদি ভাই এখন সাদা কালো। আমরা সবাই একদিন সাদা কালো হয়ে যাব নিশ্চিত।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com