চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কনটেইনার ডিপোতে আগুন ও বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এছাড়া আহত হয়েছেন চার শতাধিক। চমেক হাসপাতালের সহকারী পরিচালক রাজীব পালিত ডেইলি বাংলাদেশকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, দগ্ধদের চমেকের বিভিন্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। অতিরিক্ত রোগীর চাপে অনেককে ওয়ার্ড ছাড়াও হাসপাতালের মেঝেতে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া অনেক রক্তদাতা প্রয়োজন হচ্ছে। যারা রক্ত দিতে ইচ্ছুক, তাদের হাসপাতালের নিচতলায় যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, শনিবার রাত ৯টার দিকে উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের বিএম কনটেইনার ডিপোর লোডিং পয়েন্টের ভেতর আগুন লাগে। খবর পেয়ে কুমিরা ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পরে রাত পৌনে ১১টার দিকে এক কনটেইনার থেকে অন্য কনটেইনারে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে একটি কনটেইনারে থাকা রাসায়নিক থেকে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে।
বিস্ফোরণের সময় ঘটনাস্থল থেকে অন্তত পাঁচ কিলোমিটার এলাকা কেঁপে ওঠে। বিস্ফোরণের প্রচণ্ড শব্দে আশপাশের অনেক বাড়ির জানালার কাঁচ ভেঙে পড়ার খবরও পাওয়া যায়।
সর্বশেষ রাত সাড়ে ৩টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছিল ফায়ার সার্ভিসের ২৪টি ইউনিট।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক ফারুক হোসেন সিকদার বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে আমরা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। রাসায়নিক দ্রব্য থাকায় বারবার কনটেইনার বিস্ফোরিত হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, প্রায় চার ঘণ্টার বেশি সময় ধরে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের বেগ পেতে হচ্ছে। কারণ একের পর এক বোমার মতো কনটেইনার বিস্ফোরিত হচ্ছে। শুরুতে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা কনটেইনারের কাছাকাছি গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে প্রায় দশজনের বেশি আহত হন। তাদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। আগুন নেভাতে পানির স্বল্পতাও রয়েছে আমাদের।
কম্বোডিয়া থেকে আসা হাইড্রোজেন পার অক্সাইডের একটি চালান ডিপোটিতে ছিল। সেখান থেকেই আগুন লেগে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে বলে জানান ডিপো মালিকদের সংগঠন বিকডার প্রেসিডেন্ট নুরুল কাইয়ুম খান।
অন্যদিকে, মুমূর্ষু রোগীদের হাসপাতালে নিতে ঘটনাস্থলে অ্যাম্বুলেন্স পাঠাতে অনুরোধ জানায় ফায়ার সার্ভিস। একই সঙ্গে রক্তদাতাদেরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়।
ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি রক্তাদাতাদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানায় চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও রেড ক্রিসেন্ট। এরপরই চট্টগ্রামের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রক্তাদাতারা হাসপাতালে ছুটে যান। সর্বশেষ রাত সাড়ে ৩টায় হাসপাতালের নিচতলায় রক্তদাতাদের ভিড় দেখা যায়।