সিলেটে উজানের ঢল ও কয়েকদিনের টানা বর্ষণে এক মাসের ব্যবধানে ফের বন্যা দেখা দিয়েছে। কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, জকিগঞ্জ ও সদর উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে বিপুল সংখ্যক মানুষ। বন্যা কবলিতদের জন্য খোলা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র।
গত মাসে ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে বন্যা কবলিত হয়ে জেলার কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি ছিল। সেই দুর্ভোগের রেশ না কাটতেই নতুন করে বন্যার কবলে পড়েছে সিলেটবাসী।
এদিকে, সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি দুটি পয়েন্টে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুরমা নদীর তীরবর্তী নগরীর পাইকারি বাজার হিসেবে পরিচিত কালিঘাট ও মহাপট্টিসহ বিভিন্ন এলাকার বাড়ি ও দোকানে এরই মধ্যে পানি প্রবেশ করেছে। এক মাস আগের বন্যার ক্ষয়ক্ষতিই সামাল দিতে পারেননি। এর মধ্যে আরেক দফা বন্যায় হতাশা প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ী ও নগরবাসী।
সিলেটে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, বুধবার সকাল ৯টায় সুরমা নদী কানাইঘাট পয়েন্টে দশমিক ৫৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। একই সময়ে কুশিয়ারা নদী ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে দশমিক ১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া সারিঘাটে সারি নদী বিপদসীমার দশমিক ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
গোয়াইনঘাট উপজেলা সদরের সঙ্গে সবকটি ইউনিয়নের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পূর্ব ও পশ্চিম জাফলং, মধ্য জাফলং, পূর্ব ও পশ্চিম আলীর গাঁও, রুস্তমপুর, তোয়াকুল, লেংগুড়াসহ নিম্নাঞ্চলের ৯০ শতাংশ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। গোয়াইনঘাটের ইউএনও তাহমিলুর রহমান জানান, এক মাসের মধ্যে দ্বিতীয় দফা বন্যায় বিপুল সংখ্যক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্যা কবলিত এলাকায় ৪২টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে পানিবন্দি মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনার কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
এদিকে কানাইঘাট উপজেলার লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ও পশ্চিম, চতুল, সদর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। মঙ্গলবার রাত থেকে কানাইঘাট পৌর শহরের পূর্ব বাজারে পানি প্রবেশ করায় অনেক দোকানপাট তলিয়ে গেছে। জকিগঞ্জের নিম্নাঞ্চলের গ্রামগুলোতে শত শত মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। সীমান্তবর্তী কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হওয়ার পাশাপাশি রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে।