ভারতের আসামে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। সোমবার (২০ জুন) একদিনে রাজ্যটিতে মারা গেছে আরও অন্তত ১১ জন। এ নিয়ে আসামের চলমান বন্যা ও ভূমিধসে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮২। বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছেন রাজ্যের ৩২ জেলার প্রায় ৪৭ লাখ বাসিন্দা। প্লাবিত হয়েছে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার গ্রাম। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়ার।
যতই সময় গড়াচ্ছে, ততই যেন ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে আসামের বন্যা পরিস্থিতি। সোমবারও (২০ জুন) রাজ্যটিতে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাতের খবর পাওয়া গেছে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন স্থানে ঘটেছে ভূমিধস। এতে একদিনেই বেশ কয়েকজনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে।
চলমান এ বন্যায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন রাজ্যের ৩৫টির মধ্যে ৩২টি জেলার ৪৭ লাখ বাসিন্দা। প্লাবিত হয়েছে ৫ হাজার ৪০০টিরও বেশি গ্রাম। পানিতে তলিয়ে গেছে অসংখ্য ঘরবাড়ি, ভেসে গেছে গবাদিপশু, নষ্ট হয়েছে হেক্টরের পর হেক্টর ফসলি জমি। জীবন বাঁচাতে এরই মধ্যে ৬১৫টি আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছেন প্রায় আড়াই লাখ মানুষ।
বন্যাকবলিতদের উদ্ধারে একযোগে মাঠে নেমেছে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন উদ্ধারকারী সংস্থার সদস্যরা। এদিন বন্যার পানিতে ভেসে গিয়ে নিখোঁজ দুই পুলিশ সদস্যের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। স্থানীয় সময় রোববার রাতে নিখোঁজ হন তারা।
বন্যাদুর্গতদের সব ধরনের সহায়তার ঘোষণা দিয়েছেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে যাতে পর্যাপ্ত খাবার ও জরুরি ত্রাণসামগ্রী দ্রুত পৌঁছায় সে লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও দেন তিনি।
এদিকে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি এখনো বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় এবং ভারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় সহসাই বন্যা পরিস্থিতির তেমন কোনো উন্নতির লক্ষণ দেখছেন না আবহাওয়াবিদরা। বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে পার্শ্ববর্তী রাজ্য মেঘালয়তেও। চেরাপুঞ্জিতে প্রবল বর্ষণ অব্যাহত থাকায় নতুন করে প্লাবিত হয়েছে আরও বহু অঞ্চল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে ৩০০ কোটি টাকার অর্থসহায়তা চেয়েছে রাজ্য সরকার। এছাড়া বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় আরেক রাজ্য ত্রিপুরাতেও।