মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার গঙ্গাধর পট্টি এলাকা থেকে চাঞ্চল্যকর হিরু হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি আবদুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমবার বিকেলে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে র্যাব-৪।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-৪ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাজেদুর রহমান। গ্রেফতার আবদুর রহমান পেশায় একজন পিকআপচালক। হত্যার শিকার একই গ্রামের হিরু বিভিন্ন পেশায় কাজ করতেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাজেদুর রহমান জানান, হিরু আসামি আবদুর রহমানের বাবার কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে পিকআপ ভাড়া নিতো। কিন্তু গ্রেফতার রহমান তার বাবাকে হিরুর কাছে পিকআপ ভাড়া দিতে নিষেধ করেন। পরে একদিন হিরু রহমানের বাবা কাছ থেকে পিকআপ ভাড়া আনতে গেলে তিনি পিকআপ ভাড়া দিবে না বলে জানায়। হিরু জানতে পারে যে রহমান হিরুর কাছে পিকআপ ভাড়া নিতে নিষেধ করছে। এই বিষয় নিয়ে হিরু রহমানকে রাস্তায় পেয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও মারামারি হয়।
এই ঘটনার পর থেকে আবদুর রহমান হিরুর ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে যায়। গোপনে হিরুকে হত্যার পরিকল্পনা করে। ২০১০ সালের ২২ সেপ্টেম্বর রহমান পিকআপ চালিয়ে মিতরা বাসস্ট্যান্ড হতে ভাঙ্গালা বাজারে যাওয়ার পথে সিংগাইরের আমতলী নামক বাসস্ট্যান্ডের কাছাকাছি পৌঁছালে রহমান দূর থেকে হিরুকে পাকা রাস্তার ওপর দেখতে পান। এ সময় হিরুকে হত্যার উদ্দেশ্যে পিকআপটি সজোরে শরীরে উঠিয়ে দিলে হিরু রাস্তার ওপর পড়ে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়। স্থানীয় লোকজন হিরুকে উদ্ধার করে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে।
তিনি আরো জানান, এই ঘটনায় পরে হিরুর স্ত্রী বাদী হয়ে সিংগাইর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার পর পুলিশ তাকে গ্রেফতার করলেও চার মাস পর জামিনে বেরিয়ে আসে আব্দুর রহমান। গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর আদালত মামলায় আব্দুর রহমানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। ঘোষণার পর আগে থেকে ১১ বছর পলাতক ছিল আব্দুর রহমান।
গত ১১ বছর ধরে আবদুর রহমান ঢাকার বিভিন্ন এলাকাসহ প্রবাসে আত্মগোপনে ছিলো। আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় তিনি নিজের পরিচয় গোপন করার জন্য ক্রমাগতভাবে তিনি পেশা পরিবর্তন করে আসছিল। প্রথমদিকে তিনি ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় সিএনজি, বাস ও ট্রাক চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন।