আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ জার্মান সরকার দেশটিতে অভিবাসন সীমিত করার পরিকল্পনা করেছে। দেশটিতে এ পরিকল্পনার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছেন হাজার হাজার মানুষ। রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) পার্লামেন্ট ভবন বুন্ডেস্ট্যাগের পাশে বার্লিনের ব্র্যান্ডেনবার্গ গেটের সামনে জড়ো হয়েছিলেন অন্তত এক লাখ ৬০ হাজার বিক্ষোভকারী। বার্লিন পুলিশ জানিয়েছে, তাদের হাতে ছিল বিভিন্ন পোস্টার। এ সময় তারা অভিবাসন নিয়ে নানা স্লোগান দিচ্ছিলেন।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
জার্মান পুলিশের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে রয়টার্স জানিয়েছে, বার্লিনসহ জার্মানির প্রধান তিন শহর হামবুর্গ, স্টুটগার্ট এবং লিপজিগে হয়েছে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদী সমাবেশ। তবে বার্লিনের বিক্ষোভ সবচেয়ে বড় ছিল। প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার মানুষ বার্লিনের বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
জার্মানির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ বুন্ডেসটাগে গত শুক্রবার বিলটি উত্থাপন করেন দেশটির রক্ষণশীল নেতা ও জনপ্রতিনিধি ফ্রেডরিক মের্জ। বিলের মূল বিষয়বস্তু হলো, স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য প্রতি বছর যতসংখ্যক অভিবাসী অনুমতি দেয় জার্মানির সরকার— সেই সংখ্যা হ্রাস করতে হবে এবং বর্তমানে যেসব অভিবাসী জার্মানিতে বসবাস করছেন, তারা যেন তাদের আত্মীয় ও পরিবার পরিজনদের সে দেশে সহজে না নিতে পারেন— সেজন্য নতুন আইন প্রণয়ন করতে হবে।
মের্জ এই বিলটি উত্থাপন করার পর জার্মানির কট্টর ডানপন্থি রাজনৈতিক দল এএফডি তাতে সমর্থন দেয়। প্রসঙ্গত, জার্মানির পার্লামেন্টে এএফডির জনপ্রতিনিধিরা থাকলেও দেশটির মূলধারার রাজনীতিতে এএফডি সবসময়েই ব্রাত্য। জার্মানির মধ্যম ও উদারপন্থি জনগণের কাছে দলটির তেমন গ্রহণযোগ্যতা নেই।
উপরন্তু এএফডির বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় জাতিগত দাঙ্গা উসকে দেওয়া এবং তাতে সহিংসতা ছড়ানোর অভিযোগে জার্মানির নিরাপত্তা বাহিনীর নজরদারিতেও রয়েছে এফডিএ। এ কারণে দেশটির মধ্য ও ডানপন্থি দলগুলোর নিজেদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিভেদ থাকলেও এফডিএ ইস্যুতে তারা সবাই ঐক্যবদ্ধ।
এদিকে একাধিক জোটসঙ্গী সরে যাওয়ায় জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শুলজের নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন ঘটেছে। আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি দেশটিতে নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনে চ্যান্সেলর পদের একজন প্রার্থী ফ্রেডরিক মের্জ।
ব্র্যান্ডবুর্গ গেইট এলাকাটি বুন্ডেসটাগের কাছেই অবস্থিত। বার্লিন পুলিশ জানিয়েছে, রোববারের বিক্ষোভে যারা অংশ তাদের সবার হাতেই মের্জ এবং এএফডির বিরুদ্ধে বক্তব্য সম্বলিত ব্যানার, পতাকা ও প্ল্যাকার্ড ছিল।
রোববারের বিক্ষোভের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে একটি বার্তা পোস্ট করেছেন ফ্রেডরিক মের্জ। সেখানে তিনি জানিয়েছেন, জার্মানির বিভিন্ন শহরে সহিংসতা সংক্রান্ত অপরাধের মাত্রা সম্প্রতি বৃদ্ধি পেয়েছে এবং প্রায় সময়েই দেখা যাচ্ছে, মূল অপরাধীরা অভিবাসী হিসেবে জার্মানিতে এসে পরে নাগরিকত্ব বা স্থায়ী বসবাসের অনুমোদন পেয়েছেন। দেশে অপরাধের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আনতেই এ বিল তিনি উত্থাপন করেছেন বলে সাফাই দিয়েছেন মের্জ।
সূত্র : রয়টার্স