আন্তর্জাতিক ডেস্ক: তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তে তার নির্ধারিত লাতিন আমেরিকা সফর হঠাৎ স্থগিত করেছেন। যদিও সরকারি ভাষ্যে বলা হয়েছে এটি দেশের অভ্যন্তরীণ সংকটের কারণে, তবে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম এবং সূত্র জানাচ্ছে, সফরটি মূলত যুক্তরাষ্ট্রের আপত্তির কারণে বিলম্বিত হয়েছে। বিশেষত নিউ ইয়র্কে ট্রানজিট স্টপওভার বা যাত্রাবিরতি নিয়ে ওয়াশিংটনের অনিচ্ছার কারণে এটা হয়েছে।
সূত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসন প্রেসিডেন্ট লাইয়ের নিউইয়র্কে ট্রানজিট স্টপের বিরোধিতা করেছে। যদিও মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিকভাবে বলেছে, কোনও ভ্রমণ পরিকল্পনা ঘোষিত হয়নি বলে এটি ‘কাল্পনিক’ প্রশ্ন।
তবে ফিন্যান্সিয়াল টাইমস এবং এপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের আপত্তির প্রেক্ষিতে ওয়াশিংটন এই স্টপওভার অনুমোদন করেনি।
তাইওয়ানের সরকার অবশ্য বলছে, লাই চিং-তের কোনও আন্তর্জাতিক ভ্রমণের পরিকল্পনা নেই এবং সফর স্থগিত করার পেছনে রয়েছে অভ্যন্তরীণ জরুরি পরিস্থিতি। দেশটি সম্প্রতি টাইফুন ‘দানাস’-এর ভয়াবহ আঘাত থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে পশ্চিম উপকূলীয় এলাকায়। এতে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা ও বসতবাড়িতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। সেইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান শুল্ক আলোচনা নিয়েও প্রেসিডেন্ট লাইয়ের ব্যস্ততা রয়েছে। তাইওয়ানের গুয়াতেমালা দূতাবাস সফর স্থগিতের কারণ হিসেবে টাইফুনজনিত দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তাকে সামনে এনেছে। এই সফর বাতিলের ঘটনায় আন্তর্জাতিক কূটনীতিক ও বিশ্লেষকদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
হাডসন ইনস্টিটিউটের সিনিয়র ফেলো ও তাইওয়ানের সাবেক সংসদ সদস্য জেসন হু বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সাধারণত ট্রানজিটের বিষয়টি তাইপের সঙ্গে আলোচনা করে এবং অনুমতি দেয়। এবার যদি ওয়াশিংটন ট্রানজিট না দিয়ে থাকে, তাহলে তা চীনের চাপের কাছে নতি স্বীকার বলেই বিবেচিত হবে।
যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের হাউস ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির ডেমোক্রেট সদস্য রাজা কৃষ্ণমূর্তি এই ঘটনায় ট্রাম্প প্রশাসনের সমালোচনা করে বলেন, এটি চীনের সামনে ট্রাম্পের আরও একবার মাথানত করার ঘটনা। অতীতে উভয় দলের প্রেসিডেন্টগণ তাইওয়ান কর্মকর্তাদের ট্রানজিটের অনুমতি দিয়েছেন, এখন ব্যতিক্রম হওয়া উচিত নয়। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, রয়টার্স