ক্রীড়া প্রতিবেদক,সিটিজেন নিউজ: নানা ঘটনার কারণে আলোচিত চট্টগ্রামের সেই সুইমিংপুল অবশেষে উদ্বোধন হচ্ছে। যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল আজ মঙ্গলবার এটির উদ্বোধন করবেন।
চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার তত্ত্বাবধানে নগরীর আউটার স্টেডিয়ামে নির্মিত হয়েছে আন্তর্জাতিকমানের এই সুইমিংপুলটি। আজ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি থাকবেন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন ও যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন। সভাপতিত্ব করবেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন।
২০১৭ সালে চট্টগ্রামের আউটার স্টেডিয়ামের একপাশ দখল করে সুইমিংপুলটি নির্মাণ শুরু হলে প্রকাশ্য বিরোধিতায় নামেন সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী। এই বিরোধিতার পেছনে তার যুক্তি ছিল, সুইমিংপুলটি নির্মাণের কারণে নগরের অন্যতম এ খেলার মাঠটির পরিধি কমবে।
প্রয়াত এই নেতার অনুসারী হিসেবে ইমরান ও নুরুল আজিমের নেতৃত্বাধীন তৎকালীন নগর ছাত্রলীগ সুইমিংপুল নির্মাণের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করে। ২০১৭ সালের ১০ এপ্রিল লালদীঘি মাঠে এক সমাবেশ থেকে সুইমিংপুল করার উদ্যোগ বন্ধ করতে ১৫ দিন সময় বেঁধে দেন মহিউদ্দিন চৌধুরী। এরপর ১৭ এপ্রিল বিকেলে প্রকল্প এলাকায় মহিউদ্দিনের অনুসারী মহানগর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিক্ষোভ সমাবেশের সময় ভাংচুর এবং পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। পক্ষে-বিপক্ষে নানা কর্মসূচির পর একপর্যায়ে পিছু হটেন সুইমিংপুল নির্মাণে বিরোধিতাকারীরা।
২০১৭ সালের মার্চে ১১ কোটি ৬১ লাখ টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রামের প্রথম আন্তর্জাতিকমানের সুইমিং কমপ্লেক্সটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এক একর জায়গাজুড়ে নির্মিত সুইমিং কমপ্লেক্সে রয়েছে ৫০ মিটার দৈর্ঘ্য, ২২ মিটার প্রস্থ এবং ১ দশমিক ৮ মিটার গভীর ৮ লাইনের একটি সুপেয় পানির সুইমিংপুল। রয়েছে খোলোয়াড়দের জন্য অত্যাধুনিক ড্রেসিং রুম, প্লেয়ার্স লাউঞ্জ, দেড় হাজার দর্শকের ধারণক্ষমতাসম্পন্ন গ্যালারি, বিশুদ্ধ পানির পিউরিফিকেশন প্ল্যান্ট, ডিপ টিউবওয়েল, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য ২৫০ কেভির বিদ্যুৎ সাবস্টেশন এবং নিজস্ব পার্কিংয়ের ব্যবস্থা।
চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার (সিজেকেএস) সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন জানান, সুইমিং কমপ্লেক্সটির জন্য ১৯ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ২ জন নারী ও ২ জন পুরুষ প্রশিক্ষক। যারা সাঁতার জানে না তাদের জন্য বিভিন্ন কোর্স ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। নারী ও পুরুষদের সাঁতার শেখার জন্য আলাদা সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।
সিজেকেএস সূত্র জানায়, শিক্ষানবিশ (সাঁতার না জানা) ক্যাটাগরিতে ছেলে-মেয়েদের এক মাসের কোর্সে ভর্তি ফি ৩ হাজার টাকা। এক ঘণ্টার ক্লাস হবে সপ্তাহে চারদিন। মাসের যেকোনো দিন ভর্তি হওয়া যাবে। প্রতি ব্যাচে সর্বোচ্চ ৩০ জন সাঁতারু অংশ নিতে পারবেন।
বিভিন্ন ইভেন্টের জাতীয় দল ও চট্টগ্রাম জেলা দলের সাঁতারুরা সপ্তাহে ৪ দিন দৈনিক ১ ঘণ্টা সাঁতার কাটতে পারবেন। জনপ্রতি প্রতিঘণ্টা ২০০ টাকা। সাঁতার জানা শৌখিন সাঁতারুদের প্রতি ঘণ্টা ৪০০ টাকা, এককালীন মাসিক মেম্বারশিপ ৮ হাজার টাকা, ছয় মাসের মেম্বারশিপ ২০ হাজার টাকা। সপ্তাহে ৪ দিন সাঁতার কাটতে পারবেন তারা। এ ছাড়া নাটক, সিনেমা, শর্টফিল্মের শুটিংয়ের জন্য প্রতিঘণ্টায় দিতে হবে ১০ হাজার টাকা।
সকাল ৭টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত পুরুষরা, বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত নারীরা, এরপর এক ঘণ্টা করে পুরুষ, ছেলে ও মেয়ে এবং রাত ৮টা থেকে ৯টা পর্যন্ত শুধু পুরুষরা (যারা সাঁতার জানে) সুইমিং পুলটি ব্যবহার করতে পারবেন।