বিশেষ প্রতিবেদক, সিটিজেন নিউজ: বেসরকারি এয়ারলাইফ ইন্টারন্যাশনাল হজ এজেন্সির (লাইসেন্স নং ৬০৩) জামানত বাজেয়াপ্তসহ লাইসেন্স বাতিল করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। এছাড়া আরও এক এজেন্সিকে জরিমানা করা হয়েছে। ধর্ম মন্ত্রণালয় সচিব আনিছুর রহমান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
২০১৮ সালের হজের সময় হাজিদের দূরের বাড়িতে রাখা, খাবার না দেয়া, হাজিদের সঙ্গে এজেন্সির প্রতিনিধি না থাকা, টাকা নিয়ে হজে না পাঠিয়ে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে জাতীয় হজ ও ওমরাহ্ ও নীতির আলোকে এ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) ধর্ম মন্ত্রণালয় সচিব আনিছুর রহমান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, হাজি শফিকুল ইসলামসহ অন্যান্যরা হজ পালনের বিষয়ে সম্পাদিত অঙ্গীকার ভঙ করায় কাউন্সিলর হজ জেদ্দা সৌদি আরব বরাবরের দূরের বাড়িতে রাখা, খাবার না দেয়া, হাজিদের সঙ্গে এজেন্সি প্রতিনিধি না থাকাসহ টাকা নিয়ে হজে না পাঠানোর অভিযোগ দাখিল করেন।
অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় এবং তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়। পরে তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদনে এয়ার লাইফ ইন্টারন্যাশনালের লাইসেন্স বাতিলসহ জামানত বাজেয়াপ্তের সুপারিশ করে।
তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের পর কেন তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হবে না -এ মর্মে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করা হয়। কারণ দর্শানো নোটিশের জবাব দাখিল করলেও অভিযোগ খণ্ডন করার মতো কোনো যৌক্তিক কারণ ও তথ্য উপস্থাপন করা হয়নি বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।
মুসাফির ট্রাভেলসকে ২ লাখ টাকা জরিমানা
বেসরকারি মেসার্স মুসাফির ট্রাভেলসকে (হজ লাইসেন্স নং ১৪২৪) ২ লাখ টাকা জরিমানা করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। হজ এজেন্সির বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের হজ পালনকারীর গ্রুপ লিডার মো. শফিকুল ইসলাম গংয়ের সংগঠনের সভাপতি সম্পাদক অঙ্গীকার ভঙ করায় কাউন্সিলর জেদ্দা সৌদি আরব বরাবর দাখিল করা অভিযোগে নিম্নমান ও দূরের হোটেলে রাখা, খাবার না দেয়া ও হাজিদের সঙ্গে প্রতিনিধি না থাকার কথা বলা হয়।
অভিযোগ খতিয়ে দেখতে গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশে এজেন্সিকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। পরে বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) এ বিষয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব আনিছর রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপন জারি হয়।
আল গাজী ট্রাভেলসকে সতর্ক
বেসরকারি আল গাজী ট্রাভেলস লিমিটেডকে (হজ লাইসেন্স নং ৩৭) দায়িত্ব পালনে অবহেলা করায় ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
২০১৮ সালে হজ পালনকারী সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট এ ওয়াই মশিউজ্জামান, মোহাম্মদ ইউসুফ শিকদার, কে এম ইয়াকুব আলী ও জহিরুল হক অভিযোগ করেন চুক্তিপত্রের শর্ত অনুযায়ী তাদেরকে পাঁচতারকা হোটেলে রাখা, খাবার ও বিশ্রামের উল্লেখ থাকলেও এজেন্সি লোকজন তাদের তিন তারকা হোটেলে রাখেন। মক্কা থেকে দেশে ফেরা পর্যন্ত কোনো সহযোগিতা না পাওয়ায় তাদেরকে অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয় এবং আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়।
অভিযোগের ভিত্তিতে গঠিত তদন্ত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত ও শাস্তিযোগ্য বলে উল্লেখ করা হয়। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব আনিছুর রহমান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, জাতীয় হজনীতির আলোকে প্রথমবারের মতো অপরাধ বিবেচনা করে ভবিষ্যতের জন্য তাদেরকে সতর্ক করা হয়েছে।