সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৩৩ অপরাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান

আন্দোলনকারী ২৫ প্রাথমিক শিক্ষককে শোকজ

  • আপডেট টাইম : বুধবার, ২৩ অক্টোবর, ২০১৯
  • ২২৪ বার পঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক:গ্রেড পরিবর্তন ও বেতন বৃদ্ধির দাবিতে আজ বুধবার রাজধানীতে মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছেন সারা দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। এ মহাসমাবেশকে ঘিরে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অন্তত ২৫ শিক্ষক ও শিক্ষক নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই)। এতে শিক্ষকদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

জানা গেছে, আন্দোলনের প্রধান মুখপাত্র ও রাজধানীর দক্ষিণখান থানা এলাকার ফায়দাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. বদরুল আলমকে শোকজ করা হয়েছে। তিনি বাংলাদেশ প্রধান শিক্ষক সমিতির সভাপতি। গেন্ডারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষককেও একই কারণে শোকজ করা হয়েছে। পুরানা ঢাকার সুরিটোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৫ জন শিক্ষককে গ্রেড পরিবর্তনের আন্দোলনে অংশ নেয়ার দায়ে শোকজ করা হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বদরুল আলম সিটিজেন নিউজকে বলেন, গত ১৭ অক্টোবর তারিখ উল্লেখ করে আমাকে শোকজ করা হয়েছে। এতে পরবর্তী তিনদিনের মধ্যে শোকজের উত্তর দিতে বলা হলেও, তা আজ মঙ্গলবার একজন সহকারী শিক্ষকের মাধ্যমে পৌঁছানো হয়েছে। উদ্দেশ্য, আমি যাতে জবাব দিতে না পারি। তবে আমি আজকে জবাব দিয়েছি।

এর আগে প্রধান শিক্ষকদের জাতীয় বেতন স্কেলের দশম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডে বেতন দেয়ার দাবিতে গত ১৪ই অক্টোবর সারা দেশের ৬৫ হাজারের বেশি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করা হয়। পরদিন ১৫ অক্টোবর পালন করা হয় তিন ঘণ্টার কর্মবিরতি। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বাদ রাখেন শিক্ষকরা। ১৬ অক্টোবর এসব বিদ্যালয়ে অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করেন তারা। এরই অংশ হিসেবে গত ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত অর্ধদিবস কর্মবিরতিতে যান শিক্ষকরা।

আন্দোলনকারী শিক্ষকরা জানান, দাবি আদায় না হলে ২৩ অক্টোবর রাজধানীতে মহাসমাবেশ করে সেখান থেকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত লাগাতার কর্মসূচি পালন শুরু করবেন তারা। প্রয়োজনে সমাপনী পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণাও দেয়া হতে পারে।

এদিকে মঙ্গলবার রাতে প্রাথমিক শিক্ষকদের একাধিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেনের বাসভবনে গিয়ে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় তাদেরকে আন্দোলন প্রত্যাহার করার আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী।

জাকির হোসেন বলেন, প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের গ্রেড পরিবর্তন বিষয়ে কাজ করছে মন্ত্রণালয়। প্রধান শিক্ষকদের ১১তম, সহকারী প্রধান শিক্ষক ১২ ও সহকারী শিক্ষকদের ১৩তম গ্রেড দেয়ার বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে দ্রুত প্রস্তাবনা পাঠানো হবে। এ বিষয়ে অনেক অগ্রগতি হয়েছে। তাই আন্দোলন না করে শিক্ষকদের ক্লাসে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

প্রতিমন্ত্রীর আশ্বাসে সন্তুষ্ট হয়ে উপস্থিত শিক্ষকরা আগামীকাল বুধবার মহাসমাবেশে যোগ দেবেন না বলে প্রতিমন্ত্রীকে প্রতিশ্রুতি দেন। বুধবার সকালে রমনা পার্ক বা অন্য কোনো স্থানে জড়ো হলে আন্দোলন স্থগিত করে শিক্ষকদের নিয়ে ক্লাসে ফিরে যাওয়ার ঘোষণা দেয়া হবে বলেও প্রতিমন্ত্রীর কাছে অঙ্গীকার করেন উপস্থিত একাধিক শিক্ষক। তবে প্রাথমিক শিক্ষকদের আরেকটি অংশ মহাসমাবেশে যোগ দেবেন বলে জানিয়েছেন।

মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে প্রাথমিক শিক্ষকদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। কর্তৃপক্ষের নির্দেশনার পরও লাখো শিক্ষক মহাসমাবেশে জড়ো হচ্ছেন।

প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ ছামছুদ্দীন মাসুদ মঙ্গলবার জাগো নিউজকে বলেন, শিক্ষকরা তাদের অধিকার আদায়ে ছুটির দিনে আন্দোলন করতে পারবেন না, তা হতে পারে না। যত বাধাই থাকুক আমাদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি যথাসময়ে পালন করা হবে।

তিনি বলেন, নিজেদের দাবি আদায়ে শিক্ষকরা কোনো হুমকি ভয় পায় না, এ আন্দোলনে প্রায় পৌনে তিন লাখ শিক্ষক অংশগ্রহণ করছেন। মন্ত্রণালয় বিদ্যালয় ত্যাগের নির্দেশনা দিলেও কাল সরকারি ছুটি, এদিন সব বিদ্যালয় বন্ধ থাকবে বলে জানান তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

আজ থেকে স্কুলে ভর্তি আবেদন শুরু, নেই মুক্তিযোদ্ধার নাতি কোটা সিটিজেন প্রতিবেদকঃ সরকারি-বেসরকারি স্কুলে প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত ভর্তির আবেদন শুরু হচ্ছে আজ মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) থেকে বেলা ১১টা থেকে অনলাইনে আবেদন করতে পারবে শিক্ষার্থীরা। এই প্রক্রিয়া চলবে ৩০ নভেম্বর বিকেল ৫টা পর্যন্ত। আবেদন শেষে ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী বাছাই ও ভর্তি করানো হবে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী—এবার ভর্তির আবেদন ফি ১১০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় মোবাইল সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান টেলিটকের মাধ্যমে এ ফি পরিশোধ করতে হবে। ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর বয়স জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ অনুযায়ী ৬ বছরের বেশি বয়সী শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিশ্চিত করতে হবে। কাঙ্ক্ষিত শিক্ষাবর্ষের ১ জানুয়ারি তারিখে শিক্ষার্থীর সর্বনিম্ন বয়স ৫ বছর এবং ৩১ ডিসেম্বর তারিখে সর্বোচ্চ ৭ বছর পর্যন্ত হবে। যেমন—২০২৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তিকালে কোনো শিক্ষার্থীর বয়সসীমা সর্বনিম্ন ৫ বছর হবে। অর্থাৎ সর্বনিম্ন জন্মতারিখ হবে ১ জানুয়ারি ২০২০ পর্যন্ত এবং সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৭ বছর পর্যন্ত অর্থাৎ, জন্মতারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭ পর্যন্ত। পরবর্তী শ্রেণিগুলোতে বয়স নির্ধারণের বিষয়টি প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে ধারবাহিকভাবে প্রযোজ্য হবে। শিক্ষার্থীর বয়স নির্ধারণের জন্য ভর্তির আবেদন ফরমের সঙ্গে অনলাইন জন্ম-নিবন্ধন সনদের সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের বয়স নির্ধারণে সর্বোচ্চ ৫ বছরের অতিরিক্ত সুবিধা দেওয়া যাবে। সর্বোচ্চ পাঁচটি স্কুল পছন্দক্রম দেওয়া যাবে অনলাইন আবেদনের ক্ষেত্রে একজন শিক্ষার্থী পছন্দের ক্রমানুসারে সর্বোচ্চ পাঁচটি বিদ্যালয়ের নাম দিতে পারবে। তবে ডাবল শিফট স্কুলে উভয় শিফট পছন্দ করলে দুটি পছন্দক্রম (দুটি বিদ্যালয় পছন্দক্রম) সম্পাদন হয়েছে বলে বিবেচিত হবে। অন্যদিকে সরকারি-বেসরকারি কোনো স্কুলেই একটি শ্রেণির কোনো শাখাতে ৫৫ জনের বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করা যাবে না। বিদ্যমান অনলাইন ভর্তি আবেদন প্রক্রিয়ায় আরও স্বচ্ছতা আনার লক্ষ্যে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীর পছন্দের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো থেকে যেকোনো একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চূড়ান্ত করে নিশ্চিত করতে হবে। বিষয়টি সফটওয়ারে অন্তর্ভুক্ত থাকবে। ক্যাচমেন্ট এরিয়া ঢাকা মহানগরীর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানরা প্রতিষ্ঠানসংলগ্ন সর্বোচ্চ তিনটি থানাকে ‘ক্যাচমেন্ট এরিয়া’ হিসেবে নির্ধারণ করতে পারবেন। ক্যাচমেন্ট এরিয়া থেকে শূন্য আসনের ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থী নেওয়া হবে। ক্যাচমেন্ট এরিয়ার এ কোটা সুবিধা পেতে অনলাইনে আবেদনের সময় শিক্ষার্থীদের অবশ্যই ক্যাচমেন্ট এরিয়া নির্বাচন করতে হবে। ডিজিটাল লটারি ও ফল প্রকাশ আবেদন প্রক্রিয়া শেষে ডিজিটাল লটারি অনুষ্ঠিত হবে। এরপর লটারির ফল প্রকাশ করা হবে। মাউশির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী—আনুষ্ঠানিকভাবে লটারির সম্ভাব্য দিন ঠিক করা হয়েছে ১০ ডিসেম্বর। এরপর ১২ ডিসেম্বর লটারির কার্যক্রম শেষে ফল প্রকাশ করা হতে পারে। তবে বিশেষ কারণে এ তারিখে পরিবর্তন আসতে পারে। মেধা-অপেক্ষমাণ তালিকা প্রকাশ ও চূড়ান্ত ভর্তি ডিজিটাল লটারির ফল প্রকাশের পর ১৭ ডিসেম্বর শুরু হবে চূড়ান্ত ভর্তি কার্যক্রম, যা চলবে ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। আর প্রথম অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে ভর্তি শুরু হবে ২২ ডিসেম্বর থেকে ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত। দ্বিতীয় অপেক্ষমাণ তালিকার ভর্তি চলবে ২৬ ডিসেম্বর থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। চূড়ান্ত ভর্তির ফি ও অন্যান্য খরচ দেশের মফস্বল এলাকার স্কুলে সেশন চার্জসহ ভর্তি ফি সর্বসাকুল্যে ৫০০ টাকার বেশি হবে না। উপজেলা ও পৌর এলাকায় ১ হাজার টাকা, মহানগর এলাকায় (ঢাকা বাদে) সর্বোচ্চ ৩ হাজার টাকা। অন্যদিকে রাজধানীর এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো সর্বোচ্চ ভর্তি ফি নিতে পারবে ৫ হাজার টাকা। আংশিক এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভর্তি ফি নিতে পারবে ৮ হাজার টাকা। তবে ইংরেজি ভার্সনে ভর্তি ফি ১০ হাজার টাকা। তাছাড়া রাজধানীর প্রতিষ্ঠানগুলো উন্নয়ন ফি ৩ হাজার টাকার বেশি আদায় করতে পারবে না। একই প্রতিষ্ঠানে বার্ষিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর প্রতি বছর সেশন চার্জ নেওয়া যাবে। তবে পুনর্ভর্তি ফি নেওয়া যাবে না। সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তির ক্ষেত্রে ৬৮ শতাংশই কোটা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৪০ শতাংশই ক্যাচমেন্ট এরিয়া কোটা। তাছাড়া বীর ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও অধীনস্ত দপ্তর-সংস্থাগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য ১ শতাংশ, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা ১০ শতাংশ, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীরা ২ শতাংশ, অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর যমজ ও সহোদর ভাই-বোনরা ৫ শতাংশ কোটায় সংরক্ষিত আসনে ভর্তির সুযোগ পাবেন। তবে এবার কোটা পদ্ধতিতে কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে। এতদিন মুক্তিযোদ্ধা বা শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পুত্র-কন্যা এবং পুত্র-কন্যা পাওয়া না গেলে নাতি-নাতনিদের ভর্তির জন্য ৫ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত রাখার নিয়ম ছিল। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী—বীর মুক্তিযোদ্ধা বা শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পুত্র-কন্যার জন্যই কেবল ৫ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত থাকবে। এ কোটায় শিক্ষার্থী না পাওয়া গেলে মেধাতালিকা থেকে এ আসনে ভর্তি করতে হবে। জানা যায়, প্রতি বছর কয়েক লাখ শিক্ষার্থী লটারিতে অংশ নিয়ে স্কুলে ভর্তি হয়ে থাকে। সন্তানকে ভালো স্কুলে ভর্তির জন্য চেষ্টা করেন সব অভিভাবক। এ নিয়ে রীতিমতো উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন তারা। এবার তারা লটারি পদ্ধতি বাদ দিয়ে পরীক্ষা নেওয়ার দাবি তুলেছিলেন। সময় স্বল্পতার কারণে অভিভাবকদের দাবি এবার বিবেচনায় নেওয়া সম্ভব না হলেও আগামীতে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com