জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক: ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ‘তথ্য আপা’র মাধ্যমে গ্রামীণ নারীদের দৈনন্দিন সমাধান এবং উঠোন বৈঠক করে সচেতন করার উদ্যোগ আরও জোরদার করা হচ্ছে। এ প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ে এক কোটি গ্রামীণ নারীকে সেবা দেয়ার লক্ষ্য স্থির করেছে সরকার। এছাড়া তথ্যপ্রযুক্তিতে নারীদের ক্ষমতায়ন প্রকল্পের মাধ্যমে আত্মনির্ভরশীল করার নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
রোববার (২৭ অক্টোবর) সংসদ ভবনে মহিলা ও শিশু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির অষ্টম বৈঠকে এ তথ্য জানানো হয়। মহিলা ও শিশু মন্ত্রণালয় এ তথ্য তুলে ধরে। প্রকল্পের মাধ্যমে নারীদের ফ্যাশন ডিজাইন, বিউটিফিকেশন, ক্যাটারিং, ইন্টেরিয়র ডিজাইন অ্যান্ড ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।
বৈঠকের কার্যপত্র থেকে জানা যায়, তথ্যপ্রযুক্তিতে নারীদের ক্ষমতায়ন প্রকল্পের (২য় পর্যায়) আওতায় ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৪৯০ উপজেলার তথ্যকেন্দ্রের মাধ্যমে ডোর টু ডোর সেবা প্রদান ও উঠোন বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে এ পর্যন্ত প্রায় পাঁচ লাখ ৭৪ হাজার ২৬৫ গ্রামীণ অনগ্রসর নারীকে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে দৈনন্দিন সমস্যা সমাধান এবং তথ্যসেবা দেয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে এক কোটি গ্রামীণ নারীকে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে সেবা দেয়ার কাজ চলমান।
এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানানো হয়, গ্রামীণ সুবিধাবঞ্চিত নারীদের তথ্যপ্রযুক্তিতে প্রবেশাধিকার এবং তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক সেবা প্রদানের মাধ্যমে নারীদের ক্ষমতায়ন। এর মাধ্যমে দেশের সব উপজেলায় তথ্যকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা। ওয়েব পোর্টাল, তথ্য ভাণ্ডার, আইপি টিভির উন্নয়নসহ এ প্রকল্পের সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য সংসদীয় কমিটিতে তুলে ধরা হয়।
কার্যপত্রে আরও উল্লেখ করা হয়, নগরভিত্তিক প্রান্তিক মহিলা উন্নয়ন প্রকল্পের (২য় পর্যায়) মাধ্যমে শহরভিত্তিক গরিব, দুস্থ ও বিত্তহীন নারীদের যথোপযুক্ত দক্ষতা উন্নয়নমূলক প্রশিক্ষণ দিয়ে উৎপাদনমুখী, কর্মক্ষম ও আত্মনির্ভরশীল হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে নারী উদ্যোক্তাদের বিকাশ সাধন প্রকল্পের (৩য় পর্যায়) আওতায় ফ্যাশন ডিজাইন, বিউটিফিকেশন, ক্যাটারিং, ইন্টেরিয়র ডিজাইন অ্যান্ড ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট, মৌমাছি ও মাশরুম ও বিজনেস ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। এসবের মাধ্যমে তারা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বা কেউ ঘরে বসে আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন।
এছাড়া, ‘জেলাভিত্তিক মহিলা কম্পিউটার প্রশিক্ষণ প্রকল্প’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় নারীদের কম্পিউটার অফিস অ্যাপ্লিকেশন এবং গ্রাফিক্স ডিজাইন ও মাল্টিমিডিয়া প্রোগ্রামিং বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।
জানা যায়, নির্মাণকৃত ও নির্মিতব্য সব কর্মজীবী নারী হোস্টেলের সঙ্গে ডে-কেয়ার সেন্টার যুক্তকরণ এবং গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলায় কর্মজীবী নারী হোস্টেল নির্মাণ ও শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পের অগ্রগতি বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়। যে সব প্রকল্পের কাজ ইতোমধ্যে চূড়ান্তভাবে শেষ হয়েছে সেগুলোর কার্যক্রম চালুর সুপারিশ করে সংসদীয় কমিটি।
মেহের আফরোজের সভাপতিত্বে কমিটির সদস্য এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেছা, মো. আব্দুল আজিজ, শবনম জাহান, লুৎফুন নেসা খান ও সৈয়দা রাশিদা বেগম বৈঠকে অংশ নেন।