আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে বড় ধরনের আক্রমণ শুরু করেছে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো। প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বাহিনীর কাছ থেকে বেশ কয়েকটি অঞ্চল দখল করেছে তারা। উভয় পক্ষের লড়াইয়ে প্রায় ২০০ জন প্রাণ হারিয়েছেন।এ ছাড়া সরকারি বাহিনী ও রাশিয়ার বিমান হামলায় ১৯ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন।
ইসলামী জঙ্গিগোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) ও এর মিত্র গোষ্ঠীগুলো বলেছে, গত বুধবার থেকে লড়াই শুরু হওয়ার পর তারা আলেপ্পো ও ইদলিব প্রদেশের কয়েকটি ছোট শহর ও গ্রামের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।
সিরিয়ার সামরিক বাহিনী বলেছে, তাদের বাহিনীগুলো ‘বড় ধরনের সন্ত্রাসী’ হামলা মোকাবিলা করছে এবং বিদ্রোহীদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ঘটিয়েছে।
সিরিয়ার যুদ্ধ পর্যবেক্ষণ করে আসা যুক্তরাজ্যভিত্তিক একটি সংস্থা জানিয়েছে, লড়াইয়ে উভয় পক্ষের ১৮০ জনের বেশি যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। সরকারি বাহিনী ও রাশিয়ার বিমান হামলায় বিদ্রোহী–অধ্যুষিত এলাকায় কমপক্ষে ১৯ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানায়, দুই দিনের লড়াইয়ে ১২১ জন বিদ্রোহী নিহত হয়েছেন, যাদের বেশির ভাগই এইচটিএসের সদস্য। এ ছাড়া ৪০ জন সরকারি সেনা ও ২১ জন মিলিশিয়া সদস্য নিহত হয়েছেন।
সংস্থাটি আরও জানায়, বিদ্রোহীরা সরকারি বাহিনীর ৪৬তম রেজিমেন্টের ঘাঁটি এবং আটটি গ্রাম দখল করেছেন। তারা আলেপ্পো ও রাজধানী দামেস্কে যুক্তকারী মহাসড়কের একটি এলাকা ও একটি মোড় দখলে নিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালে গণতন্ত্রের দাবিতে শুরু হওয়া শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে সরকার দমন–পীড়ন চালালে তা গৃহযুদ্ধে রূপ নেয়। এর পর থেকে এ লড়াইয়ে পাঁচ লাখের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। শুধু ইদলিবই এখন বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এখানে ৪০ লাখের বেশি মানুষের বসবাস। তাদের বেশির ভাগই চলমান সংঘাতে বাস্তুচ্যুত হয়ে এখানে আশ্রয় নিয়েছে। এসব মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছে।
প্রদেশটি কার্যত এইচটিএস নিয়ন্ত্রিত। তবে সিরিয়ান ন্যাশনাল আর্মি (এসএনএ) নামে এখানে তুরস্ক-সমর্থিত বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোও সক্রিয় রয়েছে। এই এলাকায় তুরস্কের সামরিক বাহিনীর উপস্থিতিও রয়েছে।
২০২০ সালে সরকার আবার ইদলিবের নিয়ন্ত্রণ নিতে চাইলে তুরস্ক এবং আসাদের ঘনিষ্ঠ মিত্র রাশিয়ার মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি সমঝোতা হয়। এরপর বড় পরিসরে সহিংসতা কমে এলেও মাঝেমধ্যে সংঘর্ষ, বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণ অব্যাহত থাকে।
গত বুধবার এইচটিএস ও এর মিত্ররা জানায়, আগ্রাসন প্রতিহত ও শত্রুর পরিকল্পনা ভেস্তে দিতে তারা হামলা শুরু করে। তাদের অভিযোগ, সরকার ও তাদের মিত্র ইরান-সমর্থিত মিলিশিয়ারা উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে উত্তেজনা সৃষ্টি এবং আগ্রাসন শুরু করে।
সূত্র: বিবিসি